সন্তান হত্যার বিচার দাবি করলেন গর্ভধারিণী মা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বানিয়াচঙ্গ উপজেলার খাগাউড়া ইউনিয়নের করচা গ্রামে মামুন মিয়া হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের পুরুষশূন্য বাড়িতে হামলা ভাংচুর ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। আসামীপক্ষের অভিযোগ, বাদীপক্ষের লোকজন তাদের বাড়িঘর ভাংচুরের পাশাপাশি ধান চাউলসহ অন্যান্য জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে গেছে। শনিবার ভাঙ্গা বাড়ি ঘর পরিদর্শন করেছেন বানিয়াচঙ্গ থানার এসআই লিটন ঘোষ ও ইউপি চেয়ারম্যান শাহ শওকত আরেফিন সেলিম।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, করচা গ্রামের মামুন মিয়া এবং ইকবাল মিয়া গংদের মাঝে সরকারি ভূমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এ বিরোধের জের ধরে গত ২ ফেব্রুয়ারি রাতে উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে মামুন মিয়া ও তার ভাই আব্দুল কাইয়ুম গুরুতর আহত হন। আহত অবস্থায় তাদেরকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্মরত চিকিৎসক মামুন মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার ৩দিন পর নিহত মামুন মিয়ার বড় ভাই নোমান মিয়া ২৩ জনের নাম উল্লেখসহ আরো ৭/৮ জন অজ্ঞাত আসামী করে বানিয়াচঙ্গ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর গ্রেফতার এড়াতে করচা গ্রাম অনেকটা পুরুষশূন্য হয়ে পড়ে। এ দিকে পুরুষশূন্য বাড়িতে ঘটনার পর পর নিহতের স্বজনরা হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ করেন আসামী পক্ষের লোকজন। আসামী পক্ষের দাবি, শনিবার সকালে মামলার আসামী ইকবাল মিয়ার নির্মিত দালাল ঘর বাদী পক্ষের লোকজন ভেঙ্গে ফেলেছে। এছাড়াও তার পক্ষের আরও কয়েকজনের ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে।
গতকাল বিকেলে সরেজমিনে করচা গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, নিহত মামুন মিয়ার বাড়িতে অনেকটা শোকের মাতম চলছে। মামুন মিয়ার মা বোনেরা ঘরের মধ্যে কান্না কাটি করছেন। সাংবাদিক দেখে নিহত মামুনের মা আয়েশা বেগম জানান, তার ৩ ছেলে ছিল। এর মধ্যে বড় ছেলে গত বছর মারা যায়। ২ ফেব্রুয়ারি রাতে তার ছোট ছেলেকেও হত্যা করা হলো। তিনি বলেন, প্রতিপক্ষ ইকবাল গংদের সাথে তাদের একটি সরকারি খাল নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ বিরোধের জের ধরে আমার ছেলে মামুনকে ইকবাল ও তার সহযোগিরা কুপিয়ে হত্যা করে। তিনি মামুন হত্যার বিচার দাবি করেন।
আসামী সাদিক মিয়ার স্ত্রী খায়রুল নেছা জানান, মামুন মিয়ার মারা যাওয়ার পর পরই তার লোকজন আমাদের বাড়ি ঘরে হামলা চালায়। এসময় তারা আমাদের ঘর ভাংচুর করে ঘরে থাকা ধান, চাউলসহ অন্যান্য মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। শুধু তাই নয় তার দেবর, মামলার আসামী ইকবাল মিয়া ও রুহুল আমিনের ঘর ভাংচু করাসহ আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে গেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। তারা লুটপাট বন্ধ ও নিজেদের নিরাপত্তার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা কামনা করছেন।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার ওসি রঞ্জন কুমার সামন্ত জানান, আসামী পক্ষের বাড়িঘর ভাংচুরের বিষয়টি শুনেছি। সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।