রায়হান উদ্দিন সুমন, বানিয়াচঙ্গ থেকে ॥ বানিয়াচঙ্গে ৮০ শতাংশ রিকসাই এখন ব্যাটারিচালিত। এ রিকশার পায়ে প্যাডেল মারতে হয় না। চলে মোটরের মাধ্যমে। প্রযুক্তির এ ব্যবহারটি বিজ্ঞানসম্মত নয়। স্থানীয় কারিগররা রিকশার নিচের অংশের কাঠামোর সঙ্গে একটি ব্যাটারি, মোটরসহ কিছু খুচরা যন্ত্রাংশ দিয়ে রিকশাগুলোকে অটোরিক্সা বানিয়ে দিচ্ছেন। রিকশা চালাতে এখন আর বয়স বা চালকের শক্তি-সামর্থের প্রয়োজন হয় না। সুইচ টিপে ধরলেই হাওয়ার বেগে চলতে শুরু করে ব্যাটারিচালিত এ রিকশা। এদিকে এসব ব্যাটারিচালিত রিকশা চার্জ দিতে দিনের পর দিন অবাধে চুরি করা হচ্ছে বিদ্যুত। শহরের রাস্তাঘাট তুলনামূলক ভালো তাই ঝুঁকি কম থাকে। কিন্তু কাঁচা বা খানাখন্দে ভরা রাস্তায় এসব দ্রুত গতির রিকশা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ব্যাটারিচালিত এ রিকশার আকার ও ওজন গতির সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন। এছাড়া চালকরা যান্ত্রিক সুবিধা পেয়ে স্বাভাবিক গতির চেয়ে অতিরিক্ত গতিতে চালান। এতে অতিরিক্ত ঝাঁকুনি অনুভূত হয়। ঝাঁকুনির মাত্রা এত প্রবল হয় যে, সুস্থ মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এছাড়া এ রিকশা মোড় ঘোরানোর সময় প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, বানিয়াচঙ্গের বাজার থেকে অন্য বাজারে যেতে কিশোর বয়সের ছেলেরা রিকশা নিয়ে হর্ন বাজিয়ে দ্রুতগতিতে যাত্রীসহ পথ অতিক্রম করছে। সহজলভ্য ও সাশ্রয়ী হওয়ায় যাত্রীরাও সময়ের কথা বিবেচনা করে এ ধরনের বাহন বেছে নেন।
জানা যায়, একটি সাধারণ রিকশা ব্যাটারিচালিত অটো রিকশায় রূপান্তর করতে ১৫-১৭ হাজার টাকা খরচ হয়। সারারাত চার্জ দিয়ে পুরো দিনই চালানো যায়। প্যাডেল মেরে রিকশা চালিয়ে দিনে ২৫০-৩০০ টাকা রোজগার হয়। এখন কম পরিশ্রমেই দিনে ৪৫০-৫০০ টাকা রোজগার করা যায়। অটোরিকশায় যাতায়াতকারী কয়েকজন যাত্রী অভিযোগ করেন, ভয়ে তারা অটোরিকশায় চলাচল বন্ধ করে দিয়েছেন।
এদিকে এ রিকশার কারণে পল্লী বিদ্যুতের একশ্রেণির লোকজনের পকেট ভারী হচ্ছে এমন অভিযোগ সাধারণ জনগণের। তাদের দাবি পল্লী বিদ্যুতের লোকজনকে ম্যানেজ করে অবাধে বিদ্যুত চুরি করে অটো চালকরা তাদের ব্যাটারি চার্জ করে নিচ্ছে।
পল্লী বিদ্যুত বানিয়াচঙ্গ শাখার ডিজিএম মোঃ ইসমাত কামাল বলেন, চালকরা গভীর রাতে বিদ্যুত চুরি করে রিকশার ব্যাটারিগুলো চার্জ দিয়ে থাকেন। অনেক সময় মেইন লাইন থেকে অবৈধভাবে সংযোগ নিয়ে ব্যাটারি চার্জ করে তারা। আমরা মাঝে মধ্যে অভিযানে নেমে জরিমানাও করি। অবৈধ এ যান চলাচল বন্ধ বা এর উপর প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণ দরকার বলে জানান তিনি।
অবাধে হচ্ছে বিদ্যুত চুরি
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com