গ্রেফতারকৃতরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে জানায় গত ১০ বছরে প্রাইভেটকার মোটরসাইকেল ও সিএনজি অটোরিক্সাসহ ১ হাজারেরও বেশি গাড়ি চুরি করেছে তারা

এসএম সুরুজ আলী ॥ হবিগঞ্জে গাড়ি চোর চক্রের গ্যাং লিডার আবু তালিব ওরফে ল্যাংড়া তালেবকে ৪ সহযোগিসহ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বুধবার রাত আড়াইটার দিকে হবিগঞ্জ-শায়েস্তাগঞ্জ সড়কের পাইকপাড়া এলাকায় চোরাই গাড়ি ছাড়িয়ে নেয়ার ফাঁদ পেতে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে ৫টি চোরাই সিএনজি অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে গ্রেফতারকৃতরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এতে তারা গত ১০ বছরে প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল ও সিএনজি অটোরিকশাসহ ১ হাজারেরও বেশি গাড়ি চুরি করেছে বলে আদালতকে জানায়। তারা আরও জানায়, দেশজুড়ে ৫ শতাধিক সদস্য রয়েছে তাদের। সন্ধ্যায় নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা। গ্রেফতারকৃত অন্যান্যরা হচ্ছে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার আন্দাইরগাঁওয়ের জালাল উদ্দিন, তাহিরপুরের গাগড়ার হেলাল মিয়া, সিলেটের ওসমানী নগরের কাফতিয়রের আলতাফ ও মৌলভীবাজারের কনকপুরের হুমায়ূন আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম ফজলুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রবিউল ইসলাম, ডিআইওয়ান কাজী কামাল উদ্দিন, সদর থানার ওসি মোঃ মাসুক আলী, ডিবির ওসি মানিকুল ইসলাম, কোর্ট ইন্সেপেক্টর আল-আমিন উপস্থিত ছিলেন।
আদালতে গ্রেফতারকৃতদের দেয়া স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বলেন, এ সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, সিলেট, হবিগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় গাড়ি চুরি করে আসছে। তারা আবার মালিককে টাকার বিনিময়ে উক্ত গাড়িটি ফেরতও দেয়। চুনারুঘাট উপজেলার উবাহাটা গ্রামের আবু তালেব ওরফে ল্যাংড়া তালেব দেশব্যাপী তার সিন্ডিকেট গড়ে তুলে। এ সিন্ডিকেটে ৫ শতাধিক সদস্য রয়েছে। তারা ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ১ হাজারেরও বেশি গাড়ি চুরি করেছে। প্রথমদিকে তারা প্রাইভেট কার এবং মোটরসাইকেল চুরি করলেও পরবর্তীতে শুধু সিএনজি অটোরিকশা চুরি করে। এসব গাড়ি তারা আবার টাকার বিনিময়ে মালিকে ফেরত দেয়। অনেকটা মুক্তিপণের মতো। এ অবস্থায় হবিগঞ্জ পুলিশ কৌশলী উদ্যোগ নেয়। তারা ১ লাখ টাকা দেয় একটি গাড়ি ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য। এ ফাঁদে পা দেয় গ্যাং লিডার আবু তালিব। পরে বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ তালেবসহ তার ৪ সহযোগিকে পাইকপাড়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। তাদের নিকট থেকে ৫টি চোরাই সিএনজি অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এসআই জুয়েল সরকার বাদি হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। গ্রেফতারকৃত আবু তালেবের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন থানায় ১৩টি মামলা রয়েছে। বিকেলে গ্রেফতারকৃতরা অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট শাহিনুর আক্তারের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।