নিজস্ব প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার খাগাউড়া গ্রামের রাজপাড়া মহল্লার দুই যুবকের মাঝে সমকামি প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠার ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। এলাকায় ওই দুই সমকামিকে নিয়ে নানা আলোচনা চলছে। তবে এক যুবকের পরিবারের দাবি সমকামি প্রেমের সম্পর্ক মেনে না নিয়ে প্রতিপক্ষ ওই যুবককে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন। এতে নিরাপত্তাহীন হয়ে ওই যুবক নিখোঁজ হয়েছেন।
এলাকাবাসী সূত্র জানায়, কৃষক শেখ মোঃ আব্দুল করিমের ছেলে তোফাজ্জল হুসেনের (২২) সাথে পার্শ্ববর্তী বাড়ির লিটন মিয়া নামে এক যুবকের ঘনিষ্ট বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এই বন্ধুত্বের সম্পর্ক থেকে তারা দু’জনের মধ্যে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে দু’জন অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়। বিষয়টি গ্রামের লোকজনের মধ্যে জানাজানি হয়ে যায়। এর মধ্যে তারা দু’জন প্রেমের স্বীকৃতি দিতে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। তোফাজ্জল এ বিষয়টি তার পরিবারকে অবগত করেন। এতে তোফাজ্জলের পরিবার লিটনকে বিয়ে করে আনতে রাজি হয়। কিন্তু লিটনের পরিবার এতে রাজি হয়নি। তারা এ বিষয়টি পুরো গ্রামবাসীকে জানান এবং গ্রামের মাতব্বরদের কাছে এর বিচারের দাবিতে শালিস বিচারের আয়োজন করেন। বুধবার (২০ নভেম্বর) গ্রামের এক মাতব্বরের বাড়িতে শালিসের আয়োজন হয়। শালিস বৈঠকের শুরুতেই অনৈতিক-অবৈধ সম্পর্ক নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে শালিস পন্ড হয়ে যায়। পরদিন সকালে শালিসের মানুষ এবং গ্রামের মোল্লা-মুন্সি তাদের বাড়িতে যায় তোফাজ্জলের খুঁজে। এ সময় তার পরিবার জানান তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে, বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী তাদের বাড়িতে ইট পাটকেল ছুড়তে থাকে ও ঘর ভাঙচুরের চেষ্টা করেন।
এক পর্যায়ে নিক্ষিপ্ত ইট পাটকেল সহ্য করতে না পেরে তোফাজ্জলের বাবা আব্দুল করিম ঘরের ভিতর থেকে বের হন। এ সময় তার উপর গ্রামবাসী অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় কে বা কারা আব্দুল করিমের পেটে ছুরিকাঘাত করলে তিনি গুরুতর আহন হন। আহত অবস্থায় তার স্ত্রী মোছাঃ বেদানা বেগম তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ শহরের মাদার কেয়ার জেনারেল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এনে ভর্তি করেন।
এ ব্যাপারে বেদানা বেগম জানান, লিটনের সাথে সম্পর্ক করায় তার বাবা এবং গ্রামের হুজুররা মিলে ইতিপূর্বে আমার ছেলেকে প্রাণনাশের-হত্যা করার হুমকি দিয়েছিল।
এ বিষয়ে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মাসুক আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি শুনেছি। তবে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com