নবাগত জেলা প্রশাসকের মতবিনিময় সভায় পুরাতন খোয়াই নদী উদ্ধারের ঘোষনায় একাত্মতা প্রকাশ করে কামড়াপুরে পুনর্বাসিত পরিবারগুলোর প্রতি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি কামনা করলেন দৈনিক হবিগঞ্জের জননী’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এন.এম ফজলে রাব্বী রাসেল। ১৯৮৫ সনে কামড়াপুর গ্রামের উত্তরে প্রবাহিত খোয়াই নদীর শহর প্রতিরক্ষা বাঁধ নির্মান করতে গিয়ে ১৯টি পরিবারকে শহরের অন্যত্র পুনর্বাসিত করা হয়। জেলা প্রশাসনের পক্ষে এ ব্যাপারে বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়। পুনর্বাসিত ১৯টি পরিবারকে পুণরায় উচ্ছেদের বিষয়ে নবাগত জেলা প্রশাসকের সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে এন.এম ফজলে রাব্বী রাসেল ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির বিষয়ে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি রাখার জন্য জেলা প্রশাসনসহ উপস্থিত কর্মকর্তা ও ব্যক্তিবর্গের প্রতি আহবান জানান।
উল্লেখ্য, হবিগঞ্জ শহর রক্ষার স্বার্থে ভিটে বাড়ি দিয়ে নিঃশ^ ১৯ পরিবার উচ্ছেদ আতংকে রয়েছেন। তাদের উচ্ছেদ করা হলে মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকুও থাকবে না তাদের। খোলা আকাশের নিচে থাকতে হবে মহিলা, শিশু, বৃদ্ধসহ প্রায় অর্ধশত লোককে। এমন পরিস্থিতিতে রয়েছেন খোয়াই নদীতে বাপ দাদার ভিটে বিলিয়ে দেয়া এসব পরিবার। ১৯৮৫ সালে হবিগঞ্জ শহরকে জলাবদ্ধতা ও বন্যার কবল থেকে রক্ষার স্বার্থে খোয়াই নদীর গতিপথ পরিবর্তন করা হয়। মাছুলিয়া থেকে কামড়াপুর পর্যন্ত নদী নতুন করে খনন করা হয়। এর কয়েক বছর পর শহর রক্ষার স্বার্থে নদীর তীরে শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণ করা হয়। তখন সরকার ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দের অনুরোধে নিজেদের বাড়িঘর নদীতে বিলিয়ে দেন কামড়াপুর এলাকার বাসিন্দারা। এতে করে শহরে খোয়াই নদীর বাঁধ ভাঙ্গন রক্ষা হয়। বিনিময়ে ক্ষতিগ্রস্থদেরকে পুরাতন খোয়াই নদীর শ্যামলী এলাকায় ৮১৭৯নং দাগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের বন্দোবস্তের মাধ্যমে তাদের পুনর্বাসন করা হয়। পরে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো বাড়িঘর নির্মাণ করে পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন। খোয়াই নদীর বন্যা থেকে হবিগঞ্জ শহরকে বাঁচানোর লক্ষ্যে ১৯৮৫ সালে উদ্যোগ নেন স্থানীয় এমপি, পৌরসভার চেয়ারম্যান, কমিশনারবৃন্দ ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। তখন কামড়াপুর এলাকার বাসিন্দাদের বাড়িঘর নেয়ার প্রয়োজন পড়ে। সে সময় জেলা প্রশাসক ও উল্লেখিত ব্যক্তিবর্গের অনুরোধে ও শহরকে বন্যার হাত থেকে রক্ষার স্বার্থে তারা বাড়িঘর ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে ক্ষতিগ্রস্থ ১৯টি পরিবারকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয় সরকার। তৎকালীন তেঘরিয়া ইউনিয়নে বর্তমানে শ্যামলী সাধুর সমাধি এলাকায় তাদের স্থায়ী ঘর নির্মাণের অনুমতির সুপারিশ করেন ও খোয়াই প্রতিরক্ষা বাঁধ কমিটির সুপারিশে ও বিশেষ বিবেচনায় তখন তাদেরকে হবিগঞ্জের প্রথম জেলা প্রশাসক সিরাজুল ইসলাম এ জমি বন্দোবস্ত দেন। এরপর থেকে তারা নির্ধারিত স্থানে ৩৩ বৎসর যাবত বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করে আসছেন। এ ব্যাপারে স্থায়ী বন্দোবস্ত পাওয়ার জন্য বিদায়ী জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। স্থানীয় এমপি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির, সাবেক চেয়ারম্যান শহীদ উদ্দিন চৌধুরী ও সাবেক চেয়ারম্যান শরীফ উল্লাহসহ শহরের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ বিষয়টি অবগত রয়েছেন। এ ব্যাপারে মানবিক সহযোগিতা কামনা করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত অর্ধশত পরিবারের সদস্য।