নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার সুজাপুর বেরী বিল নিয়ে দু’পক্ষ মূখোমুখি অবস্থানে রয়েছে। বড় ধরনের সংঘষের্র আশঙ্কা স্থানীয়দের। গত ২/৩ দিন ধরে টানটান উত্তেজনার মধ্যে আতংকে রয়েছেন গ্রামবাসী। মঙ্গলবার শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে উভয় পক্ষকে আদালতের নির্দেশে নোটিশ জারি করেছেন থানা পুলিশ।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের সুজাপুর বেরী বিল নামক জলমহালটি ১৪২৬-১৪৩১ বাংলা সনের জন্য উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় লীজ প্রাপ্ত হন মায়ের দোয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ। গ্রামবাসীকে পাশ কাটিয়ে ২৯ জন সদস্য নিয়ে উক্ত সমিতি গঠন করেন ওই গ্রামের স্কুল শিক্ষক আব্দুল লতিফ। তবে আব্দুল লতিফ নিজে সমিতির সদস্য ভুক্ত না হলেও ২৯ জনের মধ্যে তার নিজের আত্মীয় স্বজন রাখেন প্রায় ২০ জন। সমিতির সভাপতি আবু মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল জলিল লতিফের নিকটাত্মীয়। এদিকে জলমহালটি যুগ যুগ ধরে বিলের পাড়ে অবস্থিত সুজাপুর গ্রামবাসী সম্মিলিত ভাবে গঠিত সুজাপুর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লীজ এনে ফিশিং করে আসছিল। সম্প্রতি সুজাপুর গ্রামের বাসিন্দা সিলেটের বিশ^নাথ উপজেলায় এমপিও ভুক্ত একটি হাইস্কুলের শিক্ষক আব্দুল লতিফ তার বড় ভাই আব্দুল জলিলকে সাধারণ সম্পাদক এবং নিকট আত্মীয় আবু মিয়াকে সভাপতি করে ২৯ সদস্য বিশিষ্ট মায়ের দোয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি লিঃ নামে সমিতি গঠন করেন। উক্ত সমিতি ১৪২৬-১৪৩১ বাংলা সন পর্যন্ত লীজ প্রাপ্ত হয়ে সমিতির অন্যান্য সদস্যদের না জানিয়ে বার আনা শেয়ার শিক্ষক আব্দুল লতিফের নামে বিক্রি করা হয়। এতে বাধ সাধেন সমিতির অপর ৬ সদস্য। এক পর্যায়ে বঞ্চিত ৬ সদস্য আইন অনুযায়ী তাদের হিস্যা দাবি করলে শিক্ষক আব্দুল লতিফ এবং সমিতির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক দিতে অনীহা প্রকাশ করেন। ফলে বঞ্চিত ৬ সদস্য গ্রামবাসীর কাছে তাদের প্রাপ্ত শেয়ার হস্তান্তর করে বিল ফিসিংয়ে সহায়তা কামনা করেন। মৎস্যজীবী হিসেবে খ্যাত বেরী বিলের অধিকার থেকে বঞ্চিত সুজাপুর গ্রামবাসী এতে সায় দেন। ফলে উভয় পক্ষই বিল ফিশিংয়ের জন্য খলা ঘর তৈরী করে মাছ ধরার জালসহ সরঞ্জামাদি তৈরী করেন। এদিকে সমিতির সুবিধা বঞ্চিত ৬ সদস্যের পক্ষে কনা মিয়া বাদী হয়ে হবিগঞ্জের বিজ্ঞ আদালতে ১৪৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন। আদালত আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নবীগঞ্জ থানার ওসিকে নিদের্শ দেন। মঙ্গলবার পুলিশ উভয় পক্ষকে জলমহাল ফিশিংয়ে বিরত থাকাসহ আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে নোটিশ প্রদান করেন। মায়ের দোয়া সমিতির পক্ষে শিক্ষক আব্দুল লতিফ নোটিশ গ্রহণ করেছেন বলে পুলিশ সুত্রে জানা গেছে।