চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ চুনারুঘাট সীমান্তের মাদক ব্যবসায়ী দুলাল আহমেদ দুলনকে (৪২) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে আহাম্মদাবাদ ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রামের মৃত মশ্বব উল্লার পুত্র। এ সময় তার কাছ থেকে একটি চাপাতি ও তিনটি গরু উদ্ধার করা হয়। গত শুক্রবার গভীর রাতে গোপন সাংবাদের ভিত্তিতে চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ নাজমুল হকের নেতৃত্বে এসআই শহিদুল ইসলাম সহ একদল পুলিশ উপজেলার আমুরোড বাজারস্থ তার বাসা থেকে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুলাল আহমেদ দুলনের বিরুদ্ধে একাধিক মাদক মামলা, লুটপাট ও গরু চুরির মামলা রয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে সে তালিকাভুক্ত আসামী। গত বছর দুলন তার ভাই সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিবকে প্রকাশ্যে দা দিয়ে কুপিয়ে জখম করেছিল। একই বছর আমুরোড বাজারে দিনমজুর গনিকে মাদকের ব্যবসায়ী বলায় পিটিয়ে এলাকাছাড়া করে। গনি এখনও তার ভয়ে আত্মগোপনে রয়েছে। আমুরোড বাজারের বাসিন্দা এমরান আহমদের বাসায় হামলা করে এমরানকে কুপিয়ে আহত করে। এ নিয়ে দুলনের বিরুদ্ধে থানা ও কোর্ট সহ ৬টি মামলা রয়েছে। কালামন্ডল গ্রামের দরিদ্র মফিলা নামের এক মহিলাকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে আহত করার কারণে দুলনের বিরুদ্ধে দুইটি মামলা করেছেন বিধবা মহিলা। মামলাগুলো এখন বিচারাধীন। চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল চিমটিবিল খাস গ্রামের ওয়াহিদ মিয়ার বসতঘরে হামলা চালিয়ে বিপুল পরিমাণ মালামাল লুট করে নিয়ে আসে দুলন। মামলাটি হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশ তদন্ত করছে। ২০১৯ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর বাল্লা বিজিবি’র হাতে ২শ’ বস্তা চোরাই চা-পাতা আটক হলে দুলন প্রকাশ্যে হামলা করে ৩০ বস্তা চা পাতা লুট করে নিয়ে যায়। একই বছর সুন্দরপুর গ্রামের আজিজকে মারধর করে টাকা ছিনিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মামলা হয়। ২০১৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর আহম্মদাবাদ ঈমাম সমিতির এক অনুষ্ঠানে চড়াও হয়ে এক সাংবাদিককে চাপাতি দিয়ে হামলা করে সে। সর্বশেষ গত ১৫ অক্টোবর চিমিটিবিল খাস গ্রামের সুলেমান মিয়ার ঘর থেকে ৬টি গরু ছিনতাই করে নিয়ে যায় দুলন। তার বাহিনীর লোকজন এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে বলে জানায় পুলিশ। ২০১৮ সালের ২৭ নভেম্বর দুলনকে ৫০ কেজি গাঁজাসহ আটক করেছিল হবিগঞ্জ ডিবি পুলিশ। দুলনকে গ্রেপ্তারের খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষ উল্লাসে ফেটে পড়েন। কেউ কেউ মিষ্টিও বিতরণ করেছেন।
এ ব্যাপারে চুনারুঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ নাজমুল হক বলেন, মাদক ও চুরি রোধকল্পে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরও বলেন, মাদক ব্যবসায়ী দুলন দীর্ঘদিন ধরে সীমান্ত এলাকায় মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল। মাদক নির্মূলে আমরা সব সময় সজাগ রয়েছি।