ডা. মোহাম্মদ আবদুল ওয়াহাব
মহাবিশ্ব বা মহাকাশকে নিয়ে একটু ভেবে দেখুনতো, কোন কূল কিনারা পাবেন কি? অনেক নক্ষত্র আছে যার আলো সেকেন্ডে এক লক্ষ ছিয়াশি হাজার মাইল বেগে ধাবিত হয়েও পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে অদ্যাবধি পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়নি। সূর্য ও একটি নক্ষত্র যা কতকগুলি গ্রহ উপগ্রহ নিয়ে সৃষ্টি করেছে সৌর মন্ডল। একেকটি নক্ষত্র অপরটি হতে লক্ষ লক্ষ বা কোটি কোটি মাইল দূরে। আবার লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি সৌর মন্ডল নিয়ে গঠিত একেকটি গ্যালাক্সি। অন্যদিকে এক একটি ব্ল্যাক হোলের অধীনে আছে কোটি কোটি গ্যালাক্সি। একটি ইউনিভার্স এর অধীনে অগনিভা ব্ল্যাকহোল। আবার ধারণা করা হচ্ছে কোটি কোটি ইউনিভার্স নিয়ে মাল্টিভার্স গঠিত। অতঃপর আছে অগনিত ব্ল্যাক হোল। অতএব দূরত্বে, আকারে, কল্পনায় বা এ সবের কোন কূল কিনারা খোঁজে পাবেন কি?
সুরা ‘মূলক’ এ এর আভাস কিছুটা দেয়া হয়েছে…..
‘সপ্ত আকাশকে আমি স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছি’
‘তাকিয়ে দেখ কোন খুঁত খোজে পাও কি?
না কোন খুঁত খোঁজে পাবে না। তোমার দৃষ্টি অবনত হয়ে তোমার দিকে ফিরে আসবে।’
সুতরাং ইউনিভার্স বা বিশ্বভ্রহ্মান্ড নিয়ে ঘাটাঘাটি করে অসহায়ত্ব প্রকাশ বা আত্মসমর্পন ছাড়া কোন গত্যন্তর নেই। কথা সেটা নয়, এতো হল সীমা থেকে অসীম বা ইনফিনিটির দিকে ভাবনার ক্ষেত্র। আমি উল্টো দিকের কথা বলছি।
আমার আপনার প্রতিটি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ কোটি কোটি কোষ বা পবষষ নিয়ে গঠিত। এক একটি ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র কোষের অভ্যন্তরীণ জগৎ কিন্তু ইউনিভার্স বা বিশ্ব ভ্রহ্মান্ডের মতই। একটি কোষের ভিতরে রয়েছে অনেক যন্ত্রপাতি। শুধু মাইটোকনড্রিয়ার কথাই বলি না কেন। এটা হল প্রত্যেকটা কোষের শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র বা ঢ়ড়বিৎ যড়ঁংব. এখানেই আপনার আমার খাদ্য থেকে শক্তি বা বহবৎমু প্রস্তুত হয়। যদি প্রতিটি মাইটোকনড্রিয়াকে ফেঞ্চুগঞ্জ বা আশুগঞ্জ সার কারখানার সঙ্গে তুলনা করা হয় ভুল হবে না।
আমাদের অসুখ বিসুখের জন্য যে সকল রোগ জীবাণু (নধপঃবৎরধ) দায়ী এগুলোও অনূবীক্ষণ যন্ত্র দিয়ে হাজার গুণ বড় করে দেখতে হয়। আবার বর্তমানে প্রাণীকূলের রোগের ত্রাস ভাইরাস এতই ছোট যে লক্ষ লক্ষ গুণ বড় করেও কুল কিনারা পাওয়া যাচ্ছে না। ভ্যাকসিন তৈরিতে এর গঠন প্রণালী অবশ্যই জানতে হবে। ভাইরাস কোন কোন সময় ব্যাকটেরিয়াকেও আক্রমণ কর ফেলে, যেমন কলেরার ক্ষেত্রে।
কথা হল ইউনিভার্সেল যেমন অদ্যাবধি কোন কূল কিনারা পাওয়া যায়নি তেমনি ভাইরাস বা যে কোন কোষের অভ্যন্তরীণ জগৎ এখনও পুরোপুরি উন্মোচিত হয়নি। বলা যায় বিপরীতমূখী দুটো ভ্রহ্মান্ড। এক দিকে মহাবিশ্বের শেষ যেমন আমরা পাইনি অন্যদিকে ক্ষুদ্রতারও পাওয়া যায়নি কোন সীমারেখা। সুতরাং আমরা না জানি শুরু না জানি শেষ।
ফারাক যে কত সেতো কেবল জানেন তিনি, যিনি এর মহাগ্রষ্টা।
আসলে সিন্ধু থেকে বিন্দু এ তুলনাটাও বেমানান বৈকি! কারণ এদের ওতো একটা নির্দিষ্ট আয়তন বা সীমাবদ্ধতা আছে।
কিন্তু এ অলৌকিক সৃষ্টির শেষ কোথায়? ॥
আসলে সিন্ধু থেকে বিন্দু এ তুলনাটাও বেমানান বৈকি! কারণ এদেরও একটা নির্দিষ্ট আয়তন বা সীমাবদ্ধতা আছে। কিন্তু এ অলৌকিক সৃষ্টির শেষ কোথায়?
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com