হবিগঞ্জে কলেজছাত্রীর অবৈতনিক স্কুল পরিদর্শন করলেন পুলিশ সুপার

এসএম সুরুজ আলী ॥ হবিগঞ্জ শহরের মাহমুদাবাদ এলাকার বাসিন্দা, কলেজছাত্রী শিরিন আক্তার সোনিয়ার প্রতিষ্ঠিত ‘মায়ের মমতা অবৈতনিক বিদ্যালয় ও জহুরা খাতুন পাঠাগার’ পরিদর্শন করেছেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি স্কুলটি পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি স্কুলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ডেঙ্গু, ইভটিজিং, বাল্য বিবাহ, মাদক, জঙ্গিবাদ, গ্রাম্যদাঙ্গা সম্পর্কে গণসচেতনতামূলক বক্তব্য দেন এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ করেন। এ সময় পুলিশ সুপার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নিয়মিত স্কুলে এসে ক্লাস করতে হবে। নিয়মিত ক্লাস করাসহ বাসায় পড়ালেখা করলে মেধাবী ছাত্র হওয়া যায়। শুধু ভাল ছাত্রছাত্রীই হলেই হবে না। মা, বাবার কথামতো চলতে হবে। মাদক থেকে বিরত থাকতে হবে। প্রত্যেককে আদর্শ মানুষ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। এ সময় তিনি সোনিয়ার স্কুলে সহযোগিতারও আশ^াস দেন।
দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ পত্রিকায় এ বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে খবর প্রকাশিত হলে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা স্কুলটি পরিদর্শনে আগ্রহ প্রকাশ করেন। পুলিশ সুপারের পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মাসুক আলী, ট্রাফিক পুলিশের টিআই ফারুক আল-মামুন ভুইয়া, হবিগঞ্জ টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এসএম সুরুজ আলী ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোঃ ছানু মিয়া।
উল্লেখ্য, দৈনিক হবিগঞ্জ মুখ পত্রিকায় ৩০ জুলাই ‘টিউশনি করে নিজের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে দরিদ্র ছেলেমেয়েদের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন বিশ^বিদ্যালয় ছাত্রী সোনিয়া’ শিরোনামে বিশেষ প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পজেটিভভাবে ভাইরাল হয় প্রতিবেদনটি। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাসায় বাসায় গিয়ে টিউশনি করে নিজের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে দরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েদের মধ্যে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছেন হবিগঞ্জ শহরের শিরিন আক্তার সোনিয়া। টিউশনি থেকে উপার্জিত টাকায় শহরের মাহমুদাবাদ এলাকায় সোনিয়া ছোট টিনের ছাপটাঘরে প্রতিষ্ঠিত করেছেন মায়ের মমতা অবৈতনিক বিদ্যালয় ও তার নিজের মা জহুরা খাতুনের নামে পাঠাগার। স্কুলে নিজের অর্থ দিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বসার ব্রেঞ্চ ও পাঠাগারের বই ক্রয় করেছেন সোনিয়া। সোনিয়ার এমন উদ্যোগ অনেকেই মহতি উদ্যোগ বলে স্বীকৃতি দিলেও অর্থাভাবে স্কুলের পরিবেশের সৌন্দর্য্য বৃদ্ধি ও শিক্ষকদের সম্মানী ঠিকমতো দিতে পারছেন না সোনিয়া। এ অবস্থায় তার গড়া স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত করতে সরকার ও সমাজের বিত্তশালীদের সহযোগিতা চেয়েছেন সোনিয়া। এ সংবাদটি প্রকাশ হওয়ার পরপরই হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ সোনিয়ার স্কুল পরিদর্শন করেন। গতকাল পরিদর্শন করলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা।