স্টাফ রিপোর্টার ॥ বানিয়াচঙ্গের হিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াহিদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে গত ১৯ জুন বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্য সাবেক ইউপি সদস্য শাহ আলম, আতাউর রহমান চৌধুরী, কালাই মিয়া, মখলিছুর রহমান ও শফিক মিয়া হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, বানিয়াচঙ্গ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দায়ের করেছেন। জেলা প্রশাসক অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য বানিয়াচঙ্গ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে জানা যায়, বানিয়াচঙ্গ উপজেলার মক্রমপুর ইউনিয়নের হিয়ালা গ্রামে ১৯৯৬ সালে হিয়ালা উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এলাকায় সুনামের সাথে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে আসছে। হাঁটি হাঁটি পা পা করে বিদ্যালয়টি এগিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খানের প্রচেষ্টায় বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়েছে। কিন্তু ২০১০ সালে বিদ্যালয়ের বর্তমান প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াহিদ নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে দায়িত্ব নেয়ার পরই বিদ্যালয়ের দুর্নীতি ও অনিয়ম শুরু করেন। তিনি বিভিন্ন কায়দায় বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাত করে বিদ্যালয়ের তহবিল শূন্য করে রাখেন। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষক/কর্মচারীদের ৫/৬ মাসের মাসিক সম্মানীসহ বিভিন্ন খরচের ঘাটতি দেখা দেয়। এ অবস্থায় বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটিকে হিমশিম খেতে হয়। পরিচালনা কমিটি প্রধান শিক্ষককে বার বার হিসেব দেয়ার তাগিদ দিলেও তিনি বিভিন্ন কৌশলে তা এড়িয়ে গিয়ে সময় কর্তন করেন। ৩ মাস পর পর বিদ্যালয়ের অডিট হওয়ার কথা থাকলেও প্রধান শিক্ষক কমিটি ও বিদ্যালয় বিধিকে তোয়াক্কা না করে অডিট ছাড়াই গোজামিল দিয়ে হিসাব দিতে চাইলে এতে প্রমাণিত হয় তিনি ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাস থেকে জুন মাস পর্যন্ত ২ লাখ ৫১ হাজার ২১০ টাকা আত্মসাত করেছেন। পরবর্তীতে কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ বছরের ৩ জানুয়ারি বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুল বাশার চিনু আত্মসাতকৃত টাকা বিদ্যালয়ের তহবিলে ফেরত দেয়ার জন্য প্রধান শিক্ষককে নোটিশ করেন। নোটিশে বলা হয়, বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের সৌজন্যমূলক সিলিং ফ্যান, দানশীল ব্যক্তি জ্যোতিময় দাশের প্রয়াত মায়ের নামে দেয়া ২টি সিলিং ফ্যান, এমপির বরাদ্দের সোলার সৌরবিদ্যুত গোপনে বিক্রি করে অর্থ আত্মসাতসহ ১টি ১২ ভোল্টের ব্যাটারী ও যাবতীয় মালামাল ফেরত দেয়ার কথা। কিন্তু তিনি আত্মসাতকৃত টাকা ফেরত দেননি। প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াহিদ তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক/কর্মচারীদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন। তার এ ধরণের কর্মকান্ডে বিদ্যালয়ের শিক্ষক/কর্মচারীরা অতিষ্ঠ। তিনি বিদ্যালয়ে প্রতিদিন ১১টা বা ১২টায় আসেন। আবার দেড়টা থেকে ২টার মধ্যে চলে যান। এছাড়াও প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াহিদের বিরুদ্ধে আরো একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগ তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
এ ব্যাপারে বানিয়াচঙ্গ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুন খন্দকার জানান, হিলায়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল ওয়াহিদের বিরুদ্ধে আনিত দুর্নীতির অভিযোগটি পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।