স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ পৌরসভার উপ-নির্বাচনে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী ইসলাম তরফদার তনু সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির প্রথম যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ্ব জি কে গউছের বিরুদ্ধে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাকে মিথ্যাচার ও অসৎ বক্তব্য আখ্যায়িত করে এর তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বুধবার এক বিবৃতিতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বলেন- বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে হবিগঞ্জ পৌরসভার টানা ৩ বারের নির্বাচিত মেযর আলহাজ্ব জি কে গউছ পদত্যাগ করে সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহন করেন। পরবর্তিতে হবিগঞ্জ পৌরসভার শূন্য হওয়া মেয়র পদে নির্বাচন কমিশন তফসীল ঘোষণা করলে জি কে গউছকে নির্বাচন করতে নির্দেশনা দেন বিএনপির হাইকমান্ড। কিন্তু স্থানীয়ভাবে বিএনপির একাধিক প্রার্ধী হওয়ায় এবং দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া কারাগারে থাকায় হবিগঞ্জে দলের ঐক্য বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কায় প্রার্থী হওয়া থেকে বিরত থাকেন জি কে গউছ। ফলে বিএনপি দলীয়ভাবে হবিগঞ্জ পৌরসভার উপ-নির্বাচনে কাউকে প্রার্থী দেয়নি।
এদিকে দলের একটি ক্ষুদ্র অংশের সাথে পরামর্শ করে এই নির্বাচনে প্রার্থীতা ঘোষণা করেন জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি ইসলাম তরফদার তনু। পরে দলের ঐক্যের স্বার্থে আলহাজ্ব জি কে গউছ বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীর সাথে ৩ দফা মতবিনিময় সভা করে সকলকে কাজ করতে আহ্বান জানান। সেই অনুপাতে দলের নেতাকর্মীরা আপ্রাণ চেষ্টা করেও পৌর এলাকার ভোটারদের কাছে অপরিচিত হওযার কারণে কাক্সিক্ষত ভোট অর্জন করতে পারেননি ইসলাম তরফদার তনু।
এছাড়াও দলের আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় অংশ গ্রহন না থাকায় এবং পৌর এলাকায় সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অনুপস্থিতির কারণে ইসলাম তরফদার তনু তার নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যাপকভাবে দলীয় নেতাকর্মী ও ভোটারদের ভোট সেন্টারে নিতে ব্যর্থ হন। ফলে তিনি হবিগঞ্জ পৌরসভার উপ-নির্বাচনে প্রত্যাশা অনুযায়ী ফলাফল করতে পারেননি।
সংবাদ সম্মেলনে ইসলাম তরফদার তনু বলেছেন- জি কে গউছের নিজের ভোট সেন্টার গাউছিয়া সুন্নীয়া একাডেমিতে তার ভোট নেই বললেই চলে। অথচ ইসলাম তরফদার তনুর নিজের ভোট সেন্টার বিকেজিসি স্কুলের পরেই গাউছিয়া সুন্নীয়া একাডেমিতে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন। অন্যান্য সেন্টারে ৪/৫টি করে ভোট পেয়েছেন। তবে দলের যেসব বড় বড় নেতারা তাকে আশ্বাস দিয়ে ভোটে প্রার্থী করেছিলেন তাদের ভোট সেন্টারে চরম ভরাডুবি হয়েছে। দলের প্রার্থী না হওয়া স্বত্ত্বেও ইসলাম তরফদার তনু নিজেকে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা করেছেন, যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। বিএনপি হবিগঞ্জ পৌরসভার উপ-নির্বাচনে কাউকে দলীয়ভাবে সমর্থন দেয়নি। তাই ইসলাম তরফদার তনু’র পরাজয়ের দায়ভার বিএনপি বহন করবে না।
দলের একটি ক্ষুদ্র অংশ ছদ্মবেশে বিএনপিতে অবস্থান করে আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে আসছিলেন। তাদেরই প্ররোচণায় বিএনপির পরীক্ষিত নেতা, বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ১৩৪৭ দিন কারাভোগকারী, টানা ৩ বারের নির্বাচিত পদত্যাগকারী মেয়র আলহাজ্ব জি কে গউছের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে ইসলাম তরফদার তনু চরম মিথ্যাচার করেছেন। বিভ্রান্তিমূলক বক্তব্য দিয়ে নিজের ব্যর্থতা ঢাকার অপচেষ্টা করেছেন। তিনি এসব করে দলের ঐক্য বিনষ্টের অপপ্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা ইসলাম তরফদার তনুর চরম মিথ্যাচার ও বিভ্রান্তিমূলক অসৎ বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই। সেই সাথে ভবিষ্যতে এ ধরনের কার্জকলাপ থেকে বিরত থাকার জন্য আহ্বান জানাই।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ মিজানুর রহমান চৌধুরী, অ্যাডভোকেট হাজী নুরুল ইসলাম ও হাজী এনামুল হক, জেলা বিএনপির সদস্য এম জি মুহিত, নুরুল আনাম খান টিপু, জেলা শ্রমিকদলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এস এম বজলুর রহমান, সদর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আজিজুর রহমার কাজল, যুগ্ম আহ্বায়ক আজম উদ্দিন, হাবিবুর রহমান ও অ্যাডভোকেট আফজল হোসেন, আব্দুল হান্নান ফরিদ, পৌর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম নানু, যুগ্ম আহ্বায়ক নাজমুল হোসেন বাচ্চু, মাহবুবুল হক হেরাল ও মুজিবুর রহমান মুজিব, জেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক তাজুল ইসলাম চৌধুরী ফরিদ, জেলা কৃষকদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মফিজুর রহমান বাচ্চু, জেলা যুবদলের সভাপতি মিয়া মোঃ ইলিয়াছ, সাধারণ সম্পাদক জালাল আহমেদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সফিকুর রহমান সিতু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জহিরুল হক শরীফ, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মুশফিক আহমেদ, জেলা জাসাসের সভাপতি মিজানুর রহমান চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হাফেজ শাহ ফারুক আহমেদ, মহসিন সিকদার, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি এমদাদুল হক ইমরান, সাধারণ সম্পাদক রুবেল আহমেদ চৌধুরী, সিনিয়র সহ সভাপতি জিল্লুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ রাজীব আহমেদ রিংগন, জেলা শ্রমিকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোহেল এ চৌধুরী, জেলা মহিলাদলের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফাতেমা ইয়াসমিন, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দা লাভলী সুলতানা, পৌর মহিলাদলের আহ্বায়ক সুরাইয়া আক্তার রাখি, আইরিন আক্তার, আব্দুল হক, জেলা তারেক পরিষদের সভাপতি সাইদুর রহমান কুটি প্রমুখ।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com