আবুল কালাম আজাদ, চুনারুঘাট থেকে ॥ সাম্প্রতিক সময়ে চা বাগানে চুরি, ডাকাতি, বাগানে বহিরাগতদের উৎপাত এবং বাগানের কর্মকর্তা/কর্মচারীদের নিরাপত্তা নিয়ে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার লস্করপুর ভ্যালীর ১৭ চা বাগান ব্যবস্থাপকদের সাথে মতবিনিময় করেছেন জেলা ও পুলিশ প্রশাসন। সোমবার সকাল ১১টায় ভ্যালীর চন্ডিছড়া ক্লাব প্রাঙ্গণে এ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মঈন উদ্দিন ইকবাল। সভায় চুনারুঘাট ও মাধবপুর উপজেলার সকল চা বাগান ব্যবস্থাপকগণ চা বাগানের নিরাপত্তায় বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন।
এতে বক্তব্য রাখেন আমু চা বাগান সিনিয়র ব্যবস্থাপক হাবিব চৌধুরী, চান্দপুর বাগান সিনিয়র ব্যবস্থাপক শামীমুল হুদা, নালুয়া বাগান সিনিয়র ব্যবস্থাপক জহির আহমেদ, দেউন্দি বাগান সিনিয়র ব্যবস্থাপক রিয়াজ উদ্দিন, চন্ডিছড়া বাগান ব্যবস্থাপক রফিকুল ইসলাম, তেলিয়াপাড়া বাগান ব্যবস্থাপক কাজী এমদাদুল হক, জগদীশপুর বাগান ব্যবস্থাপক বিদ্যুৎ কুমার রায় ও লালচান্দ বাগান ব্যবস্থাপক মোফাজ্জল হোসেন প্রমুখ।
সভায় চা বাগানে সাম্প্রতিক সময়ে দুটি বাংলোয় ডাকাতি, চুরি ছিনতাই, বাগানে বহিরাগতদের উৎপাত বৃদ্ধি, পুরাতন মহাসড়কে চলাচলে নিরাপত্তাহীনতাসহ বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরে বাগান ব্যবস্থাপকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং অপরাধ কর্মকান্ড রোধে ও নিরাপত্তার জন্য বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। অন্যথায় চা শিল্প হুমকির মধ্যে পড়বে বলেও তারা জানান।
জবাবে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বাগান কর্মকর্তা, কর্মচারী ও বাগান শ্রমিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে দ্রুততার সাথে তাদের প্রস্তাবনার আলোকে কার্যক্রম শুরু করবেন এবং নিরাপত্তার জন্য যা যা করা দরকার তাই করা হবে বলে আশ^াস দেন।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বলেন, ডাকাতির ঘটনার বিষয়ে আমরা অত্যন্ত কঠোর। ইতোমধ্যে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে এক ডাকাত নিহত হয়েছে। ডাকাতির সাথে জড়িতদের দ্রুত সনাক্ত এবং তাদের গ্রেফতার করা হবে। ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে বলেও তিনি জানান। এছাড়া অন্যান্য অপরাধ কর্মকান্ড আপনাদের সহযোগিতার মাধ্যমে সমাধান করা হবে।
জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ বলেন, চুনারুঘাট থেকে তেলিয়াপাড়া পর্যন্ত পুরাতন মহাসড়কের সাতছড়ি এন্ট্রি পয়েন্ট আমরা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার পরিকল্পনা নিয়েছি। এছাড়া উক্ত সড়কে পুলিশের টহলও জোরদার করা হবে। পাশাপাশি পানছড়ি আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকায় পুলিশের তদন্ত কেন্দ্র স্থাপনের কাজও দ্রুততার সাথে করা হচ্ছে। একইভাবে চা বাগানের অভ্যন্তরে সাম্প্রতিক সময়ে চুরি এবং বহিরাগতদের আনাগোনা ও অপরাধ বেড়ে যাওয়া রোধ করতে বাগানে গ্রুপ গ্রুপ করে বিভিন্ন লাইনে পাহারা এবং বহিরাগত ঠেকাতে চলমান চেকপোস্টের কার্যক্রম জোরদার ও সন্ধ্যার পর বহিরাগতদের প্রবেশ নিষেধের কথাও বলা হয়।
এ বিষয়ে চন্ডিছড়া চা বাগান ব্যবস্থাপক ও ভ্যালীর সভাপতি রফিকুল ইসলাম জানান, আমরা বাগানের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনা এবং এর থেকে উত্তরণের বিষয়ে আলোচনা করেছি। পুলিশ প্রশাসন আমাদেরকে এসব বিষয়ে নিশ্চয়তা দিয়েছেন এবং অপরাধ কর্মকান্ডগুলো দ্রুত কমিয়ে আনার বিষয়ে তারা কাজ করছেন। তিনি জানান, বিশেষ করে চা বাগানে ডাকাতি এবং পুরাতন মহাসড়কে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের বিষয়ে পুলিশ দ্রুততম সময়ে ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দিয়েছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মঈন উদ্দিন ইকবাল জানান, পুরাতন মহাসড়কের চুনারুঘাট থেকে তেলিয়াপাড়া পর্যন্ত সাতছড়ি এন্ট্রি পয়েন্টের কয়েকটি স্থানে আমরা সিসি ক্যামেরা বসানোর চিন্তা করছি। পাশাপাশি পুলিশের টহলও বাড়ানো হবে।
চুনারুঘাটে চা বাগান ব্যবস্থাপকদের সাথে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের মতবিনিময়
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com