স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাহুবল উপজেলার পুটিজুরী ইউনিয়নের কুমেদপুর গ্রামে এক দিনমজুরের পৌনে ৩ বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণের অভিযোগে রাহী আহমেদ নামে ১২ বছরের এক কিশোরকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাহী আহমেদকে আদালতে প্রেরণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। শিশু ধর্ষণের ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী ধর্ষক রাহীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
সূত্র জানায়, গত ১১ জুলাই দিনের বেলায় বৃষ্টির সময় কুমেদপুর গ্রামের দিনমজুর ফুল মিয়া’র স্ত্রী তার রুমে পৌনে ৩ বছরের শিশু কন্যাকে রেখে পাশের ঘরে কাজ করতে যান। এ সময় পাশের ঘরের ফজল মিয়ার ছেলে ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ছাত্র রাহী আহমেদ তার রুমে ঢুকে শিশুটিকে ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে শিশুটি যন্ত্রণায় চিৎকার করলে তার মা এসে দেখেন শিশুর গোপন স্থান দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে। এ সময় রাহীকে তিনি জিজ্ঞেস করেন তার শিশুর কি হয়েছে। সে জানায়, সে নিজে নিজেই আঘাত পেয়েছে। এ অবস্থায় তাৎক্ষণিক শিশুটিকে বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্মরত চিকিৎসক সিলেট এমএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে শিশুটি’র মেডিকেল টেস্ট করার পর ধর্ষণ হয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানান। এরপর বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে লোক মুখে নানা আলোচনা শুরু হয়। ধর্ষক রাহীর মা-বাবা বিষয়টি সামাজিকভাবে নিষ্পত্তি করার জন্য জনপ্রতিনিধিসহ মুরুব্বীয়ানদের কাছে যান। এক পর্যায়ে শালিসের উদ্যোগ নেয়া হয়। বিষয়টি সামাজিকভাবে শেষ করার জন্য বুধবার রাতে স্থানীয় মুরুব্বিয়ান শালিসেও বসেন। কিন্তু শালিসে বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়ায় বুধবার সকালে মেয়েটির মা বাদী হয়ে বাহুবল থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। এ প্রেক্ষিতে বাহুবল থানার এসআই মনিরুজ্জামান রাহীকে স্কুল থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যান। পরে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়। পুলিশের একটি সূত্র জানায়, রাহীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর সে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।
এ ব্যাপারে পুটিজুরি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুদ্দত আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনাটি শালিসের নিষ্পত্তি করার জন্য আমার কাছে ছেলেটির মা-বাবা এসেছিলেন। কিন্তু আমি তাদের বলেছি এটি আইনের বিষয়। আইন দেখবে। সামাজিকভাবে এটি নিষ্পত্তি করা যাবে না। তিনি বলেন, এ ধরণের ঘটনার সাথে যারাই জড়িত তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক। এ ছেলেটির আমি শাস্তি দাবি করছি।
বাহুবল থানার ওসি মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, এ ঘটনার সাথে জড়িত রাহীকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে। যেহেতু সে প্রাপ্ত বয়স্ক নয়, সে হিসেবে পরবর্তীতে আদালতের নির্দেশে তাকে শিশু সংশোধনাগারে প্রেরণ করা হবে।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com