বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট বয়স্ক প্রতিবন্ধী ও বিধবারা পাচ্ছেন না কোনো ভাতা

এফ আর হারিছ, বাহুবল থেকে ॥ বাহুবল উপজেলার পুটিজুরী ইউনিয়নের রূপাইছড়া রাবার বাগান সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় সরকারিভাবে গড়ে উঠা পায়রাটিলা আশ্রয়ন প্রকল্পের লোকজনকে মানবেতর জীবন যাপন করতে হচ্ছে। সরজমিনে আশ্রয়ন প্রকল্পে গিয়ে জানা যায়, ২০০৯ সালে সরকারিভাবে তৈরি করে দেয়া পায়রাটিলা আশ্রয়ন প্রকল্পে (ফেইজ-২) বাহুবল ও চুনারুঘাট এলাকার ভূমিহীন ৪০টি পরিবারের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেয়া হয়, কিন্তু সেখানে বসবাসরত ৪০টি পরিবারের উপার্জনের জন্য কোনো কৃষি জমি বা আর কোনো ব্যাবস্থা না থাকায় পাহাড় থেকে জ্বালানী কাঠ সংগ্রহ করে তা বাজারে বিক্রি করে কোনো রকম চলছে তাদের জীবন যাপন। এ আশ্রয়ন প্রকল্পে বসবাসরত প্রবীন মুরুব্বি মোঃ দেলোয়ার হুসেন ও মোঃ রফিক মিয়া জানান, বর্তমানে এখানে রয়েছে ৬৫/৭০ বছর বয়স্ক ৩ জন পুরুষ, ২ জন মহিলা, একজন বিধবা মহিলা ও ৩ জন প্রতিবন্ধি শিশু। কিন্তু আজও তাদের কপালে জুটেনি কোনো বয়স্ক, বিধবা বা প্রতিবন্ধি ভাতা। শুধু প্রতি বছর দুই ঈদে ১০ কেজি করে সরকারি চাল ছাড়া আর কিছুই পায়নি তারা। এছাড়া ৪০টি পরিবারের জন্য ৪টি নলকূপ রয়েছে, এগুলোও আবার টিলা থেকে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে, তার মধ্যে ২টি নলকূপ অকেজো হয়ে যাওয়ায় এ প্রকল্পের লোকদের গোসল ও বিশুদ্ধ খাবার পানি সংগ্রহে কষ্ট করতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। নামাজের জন্য নেই কোনো মসজিদ, বাচ্চাদের কোরআন শিক্ষার জন্য নেই কোনো মক্তব। ৩য় শ্রেণী পর্যন্ত একটি প্রাইমারী স্কুল থাকলেও সেখানে রয়েছেন একজন শিক্ষক ও পুটিজুরী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুদ্দত আলীর দেয়া বেতনে একজন খন্ডকালীন মহিলা শিক্ষক। তাও তিনি নিয়মিত স্কুলে আসেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। ওই প্রকল্পের ১২৬ জন শিশু কিশোর শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিয়মিত পাঠদান অব্যাহত না থাকায় বর্তমানে ৭০/৭৫ জন শিক্ষার্থী স্কুলে যাচ্ছে, বাকিরা ঝড়ে পড়েছে শিক্ষা জীবন থেকে। এছাড়া সরকারিভাবে নির্মিত সেখানের টয়লেটগুলো ভেঙ্গে জরাজীর্ণ ও অস্বাস্থ্যকর হয়ে পড়ায় প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্য সমস্যায় ভূগছেন বাসিন্দারা। চিকিৎসা সেবা পাবার নেই কোনো ব্যবস্থা। কোনো শিশু কিশোর বা বয়স্করা জটিল রোগে আক্রান্ত হলে ৭/৮ কিলোমিটার পাহাড়ি পথ পায়ে হেঁটে নিতে হয় চিকিৎসা সেবা। এছাড়া সেখানের কোনো লোক মারা গেলে তাদের কবর দেয়ার মত কোনো জায়গা না থাকায় পুটিজুরী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মুদ্দত আলীর ব্যক্তি উদ্যোগে ৮ শতক জমি ক্রয় করে তাদের কবরস্থানের ব্যবস্থা করে দেন। এভাবেই চলছে তাদের মানবেতর জীবন যাপন। তাদের এই দুর্ভোগ লাঘবে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন প্রকল্পের বাসিন্দারা।