ছহীহ্ মুসলিম শরীফের ৫৫৬নং হাদীস- পবিত্রতা (পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা) ঈমানের অঙ্গ। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে ইসলাম সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে উৎসাহিত করেছে। বিষয়টির ব্যাপকতার জন্য “ত্বাহারাত” শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপক আলোচনার নিমিত্তে বিষয়টিকে কয়েকটি ধাপে আলোচনা করা যেতে পারে। আর তা হলো- আত্মিক পরিচ্ছন্নতা, শারীরিক পরিচ্ছন্নতা ও পরিবেশের পরিচ্ছন্নতা।
মানুষ সামাজিক জীব। সমাজবদ্ধ মানুষকে তার ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক বিভিন্ন প্রয়োজনে ঘরের বাইরে যেতে হয়। যেমন- স্কুল, কলেজ, হাট-বাজার, লঞ্চ বা বাস টার্মিনাল, শপিং মল সহ বিভিন্ন পাবলিক প্লেসে। প্রায় সব জায়গাতেই প্রাকৃতিক প্রয়োজন মিটানোর ব্যবস্থা থাকে, প্রকৃতির সাড়া দিতে কমবেশি সবারই ঐ সকল জায়গার একটা বাস্তব অভিজ্ঞতা আছে। আহ! কি দুর্গন্ধ, কত নোংড়া। এ যেন যন্ত্রণাদায়ক এক মুহূর্ত। অবস্থাটি যতটা না পীড়াদায়ক তার চেয়েও বেশি অস্বাস্থ্যকর। জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত ঐ সকল স্থানের দুর্গন্ধযুক্ত পরিবেশ নিয়ে কৌতুহলের শেষ নেই, কিন্তু নেই কোন প্রতিকার। আমি যে কারণে প্রসঙ্গটা টানলাম তা হলো যে স্থানের পরিবেশটা নষ্ট করছি আমরাই, কৌতুহলটাও আমাদের মাঝেই, তাহলে সমাধানটা করবে কে? সিম্পল জবাব নিজেরা যদি সচেতন হই তবেই সমাধান সম্ভব।
সম্প্রতি এডিস মশার প্রাদুর্ভাব বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশের ১৬ কোটি মানুষের ঘুম হারাম। কিভাবে ডেঙ্গু ঠেকানো যায়, তা নিয়ে সবাই ব্যস্ত। আনুষ্ঠানিক পরিচ্ছন্নতার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সাধুবাদ জানাই সে উদ্যোগকে। তবে পরিচ্ছন্নতার সে উদ্যোগ যেন আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ না থাকে, সেজন্য সচেতন হতে হবে সবাইকে। পরিচ্ছন্নতার কর্মসূচিকে দৈনন্দিন কাজের অভ্যাসে পরিণত করতে হবে।
আজ হয়তো ডেঙ্গুর ভয়ে আমরা পরিচ্ছন্নতায় মনোযোগ দিচ্ছি নিজেকে বাঁচানোর জন্য- অথচ আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর পূর্বেই ইসলাম পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে তাগিদ দিয়েছে। সূরা বাক্বারার ২২২নং আয়াতে আল্লাহ্ বলেন- ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাওবাকারী ও অধিক পবিত্রতা অর্জনকারীকে ভালবাসেন।
রাসুল (সঃ)-এর বিভিন্ন হাদীসেও পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কথা বলা হয়েছে। তাই আসুন আমরা আমাদের পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন করি এবং ইসলামের বিধান পালন করি।