স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং আজমিরীগঞ্জ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট শরীফ উদ্দিন আহমেদের ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্থানীয় আসকর উল্লাহ জামে মসজিদে বানিয়াচং উপজেলা আওয়ামীলীগের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে কোরআন খতম, বাদ যোহর মিলাদ মাহফিল, তবারক বিতরণ ও মরহুমের কবর জিয়ারত। উক্ত কর্মসূচিতে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে উপস্থিত থাকার জন্য বিনীত অনুরোধ জানিয়েছেন উপজেলা আওয়ামীলীগ।
অন্যদিকে বানিয়াচং শরীফ উদ্দিন এমপি গণগ্রন্থাগারেরআয়োজনে রাজনীতির প্রবাদ পুরুষ, বার বার নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সভাপতি, বীরমুক্তিযোদ্ধা শরীফ উদ্দিন আহমেদের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে স্থানীয় শরীফ উদ্দিন আহমেদ গণগন্থাগারে বাদ জোহর পবিত্র কোরআন খতম, কাঙ্গালিভোজ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
একজন ন¤্র, ভদ্র, আদর্শবাদী শিক্ষক ও মানতবাদী মানুষ ছিলেন শরীফ উদ্দিন আহমেদ। সর্বোপরি তিনি দক্ষ সংগঠক, সংসদ সদস্য, সমাজ সংস্কারক ও পর দু:খে কাতর আত্মমর্যাদাশীল সম্পন্ন একজন মানুষ। তার সম্পর্কে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এলআর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এক ছাত্র বলেন- ‘‘একবার তিনি আমাদের অষ্টম শ্রেণির ক্লাসে গেলেন, তখন তিনি সবেমাত্র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। বললেন, তোমাদের কার কার দুইটি করে ফুলপ্যান্ট আছে দাঁড়াও, তখন মাত্র ১৭/১৮ জন দাঁড়ালো। আবার বললেন, কার কার তিনটি ফুলপ্যান্ট আছে, তখন মাত্র ৬/৭ জন দাঁড়ালো। তখন তিনি বললেন, শোনো তোমাদের বলি, আমি যখন ক্লাস এইট থেকে টেন পর্যন্ত লেখাপড়া করেছি, তখন আমার একটি মাত্র ফুলপ্যান্ট ছিল। ছাত্র জীবনে একটি ফুল প্যান্টের অধিকারী হয়ে আজ আমি এমপি নির্বাচিত হয়েছি। তোমাদের প্রত্যেকেরই একের অধিক ফুলপ্যান্ট আছে। তোমরা আমার চেয়ে প্রত্যেকেই ভালো অবস্থানে যাওয়ার মানসিকতা অর্জন করতে হবে। তিনি আরো শিক্ষামূলক উপদেশ দিয়ে ক্লাস শেষ করলেন। আজ মঙ্গলবার সেই মহান ব্যক্তির ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী।
উল্লেখ্য, শরীফ উদ্দিন আহমেদ ১৯৯৬ সালের ৬ আগস্ট মৃত্যুবরণ করেন। সৎ জীবনযাপন ও আদর্শিক রাজনীতির জন্য আজও তিনি দলমত নির্বিশেষে সবার কাছে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে আছেন। মরহুম শরীফ উদ্দিন আহমেদ বানিয়াচং উপজেলার যাত্রাপাশা গ্রামে ১৯৪২ সালে ৭ই মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম মরহুম দিদার বক্স। শরীফ উদ্দিন আহমেদ গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে প্রাথমিক এবং বানিয়াচং এল.আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্রিক পাশ করেন। ১৯৬৭ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন এ্যান্ড রিসার্স থেকে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন। পরে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৭১ সালে সম্মানের সাথে এলএলবি পাশ করেন। এলএলবি পাশ করার পূর্বে তিনি বানিয়াচংয়ের ঐতিহাসিক এল.আর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে কয়েক বছর সুনামের সাথে শিক্ষকতা করে ছাত্রদের পরম আত্মার আত্মীয় হয়ে উঠেছিলেন। পরে হবিগঞ্জ কোর্টে আইন ব্যবসা করে সাফল্য বয়ে আনেন। আইন পেশার পাশাপাশি রাজনীতি ও মানুষের সেবাকে কর্ম হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। জাতীয় সংসদ চলাকালে ১৯৯৭ সালের ৬ আগস্ট আকস্মিক ইন্তেকাল করেন কালজয়ী এই পুরুষ।