এসএম সুরুজ আলী ॥ বাহুবলের পুটিজুরী শরৎচন্দ্র (এসসি) উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রীকে অপহরণে ব্যবহৃত সিএনজি অটোরিকশা উদ্ধার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বুধবার রাতে বাহুবল উপজেলার কসবা-করিমপুর গ্রামের সিএনজি অটোরিকশা চালক মর্তুজ আলীর বাড়িতে পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পিবিআই’র একটি টিম অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় সিএনজি অটোরিকশা চালক মর্তুজ আলী বাড়িতে না থাকার কারণে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে পারেনি। তার সিএনজি অটো হবিগঞ্জ-চ-১১-১১০২ জব্দ করা হয়। পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম মামলার বরাত দিয়ে জানান, চলিতাতলা গ্রামের বাচ্চু মিয়ার কন্যা তার নানা বাড়ি থেকে পুটিজুরী এসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীতে লেখাপড়া করে আসছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মেয়েটি স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে বখাটে মামুন মিয়াসহ তার সহযোগীরা মেয়েটিকে জোরপূর্বক উদ্ধারকৃত সিএনজি অটোরিকশায় তোলে। এক পর্যায়ে মেয়েটি শোর চিৎকার করলে মামুন তার বন্ধু তোফায়েলসহ অপর দুই বন্ধু মেয়েটির মুখ চেপে ধরে। পরবর্তীতে মেয়েটিকে বৃন্দাবন চা-বাগান এলাকার পাশের নির্জন পাহাড়ি স্থানে নিয়ে মামুনসহ তার বন্ধুরা পালাক্রমে ধর্ষণ করে। তাদের ধর্ষণ শেষ হতে না হতেই ওই স্থানে পাহারাদার আহাদ মিয়া এসে মামুনসহ তার বন্ধুদের কাছে মেয়েটিকে ধর্ষণের সুযোগ চায়। তাকে সুযোগ না দিলে সে তাদের আটক করবে বলে হুমকি দেয়। এ সময় লম্পট মামুনসহ তার সহযোগীরা আহাদকে ধর্ষণের সুযোগ করে দেয়। আহাদের ধর্ষণ শেষ হওয়ার পর ধর্ষকরা মেয়েটিকে অজ্ঞান ও রক্তাক্ত অবস্থায় তার বাড়ির কাছাকাছি পাশের একটি রাস্তায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়।
পিবিআই’র পরিদর্শক ফরিদুল ইসলাম জানান, ৩০ অক্টোবর গ্রেফতারকৃত আহাদের ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নেয়া হয়। তিনি জানান, আহাদ ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে। চরম পেশাদার মানসিকতা সম্পন্ন এ ধর্ষক আত্মগোপনের জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেরিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখে ধুলা দেওয়ার জন্য সে মোবাইল ফোন ব্যবহার করা থেকেও বিরত থাকে। তবুও প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার এবং গুপ্তচর নির্ভর তথ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে আহাদকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানান তিনি। মামলার অন্যান্য আসামিকেও আইনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, এ ঘটনার তিন দিন পর ধর্ষিতা নিজে বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে বাহুবল থানায় মামলা দায়ের করেন। প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় ঘটনাটি ব্যাপকভাবে আলোচিত হবার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আসামিদের ধরতে কোমর বেধে মাঠে নামে। ইতোপূর্বে র্যাব গণধর্ষণ মামলার আসামি তোফায়েলকে গ্রেফতার করে। তোফায়েল মিয়া (২০) বাহুবল উপজেলার বাঘেরখাল গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com