পাঠকের কলাম

অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের
আমরা সমাজবদ্ধ জীব। সমাজে শৃঙ্খলার জন্য আবহমানকাল থেকে সালিশ বিচার চলে আসছে। সমাজের বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং সংসদ সদস্যসহ নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সমাজের মানুষ যে কোন সমস্যায় পতিত হলে সালিশের মাধ্যমে তাদেরকে উদ্ধার করেন। আপোষ মিমাংসার মাধ্যমে দুটি পক্ষের মাঝে বিরোধকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট দূরত্ব হ্রাস পায়। অন্যথায় এই বিরোধ বিরাট আকার ধারণ করে। এমনকি প্রাণহানির মত ঘটনাও ঘটে। এই অবস্থায় সমাজের মুরুব্বিয়ানরা সালিশের মাধ্যমে সমাজে শান্তি আনয়ন করেন। বর্তমান সরকার এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাও সমাজে শৃঙ্খলা আনয়নের জন্য সালিশ বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তিতে বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। যার জন্য হবিগঞ্জ তথা সারা দেশে লিগ্যাল এইড অফিসারের মাধ্যমে অনেক বিরোধ সালিশে নিষ্পত্তি হয়। হবিগঞ্জের পুলিশ প্রশাসনও সালিশের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করে মামলার সংখ্যা কমিয়ে এনেছে। হবিগঞ্জের অনেক প্রবীন মুরুব্বি ও জননেতা সালিশের মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করে দেশের বিভিন্ন স্থানে সুনাম অর্জন করেছিলেন। যার মাঝে উল্লেখযোগ্য মরহুম সামছুল হোসেন উমদা মিয়া।
হবিগঞ্জের একটি ঘটনা আমার নজরে এসেছে। সেটি হল শায়েস্তাগঞ্জে অবস্থিত জিএস ব্রাদার্স সিএনজি ফিলিং স্টেশনের মালিকানা নিয়ে বিরোধ এবং বিরোধ থেকে সালিশ ও পরবর্তী ঘটনা প্রবাহ। এই প্রতিষ্ঠানের অংশীদারদের দেনা পাওনা নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে তারা হবিগঞ্জের জনপ্রিয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহিরের শরণাপন্ন হয়। উভয়পক্ষের মুরুব্বিয়ানরাও তার কাছে যান। তিনি আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বিরোধ নিষ্পত্তি করেন। সংসদ সদস্যের এই উদ্যোগ দেশ বিদেশে প্রশংসিত হয়। কিন্তু এখানে সালিশের সিদ্ধান্ত মেনে চেক দেয়ার পর অংশীদারদের টাকা আত্মসাতের হীন উদ্দেশ্যে গাজীউর রহমান নামে এক ব্যক্তি সংসদ সদস্যসহ তাঁর পরিবারের সদস্যদেরকে জড়িয়ে ঢাকার দেওয়ানী আদালতে মামলা দায়েরের ঘটনা দুঃখজনক। সংসদ সদস্যকে যদি কারও বিরোধ মিমাংসা করতে গিয়ে মামলার শিকার হতে হয় তাহলে যারা সাধারণ জনগণ এবং মুরুব্বিয়ান তাঁরা সালিশে যেতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন। এটি সমাজে একটি খারাপ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এর মাধ্যমে সমাজের শৃঙ্খলা বিনষ্ট হতে পারে। তাই আমি মনে করি যারা এ ধরনের সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চান তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকা এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সকলে মিলে এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে। সমাজের মঙ্গলের স্বার্থেই এটি করা উচিত বলে আমি মনে করি।
অ্যাডভোকেট আবুল খায়ের
সভাপতি বঙ্গবন্ধু পরিষদ

সিনিয়র আইনজীবী