এসএম সুরুজ আলী ॥ বাহুবলে স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ধর্ষক আহাদ মিয়া আদালতে স্বীকারোক্তি মুলক জবাবন্দি দিয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান উদ্দিন প্রধান তাঁর খাস কামরায় ১৬৪ ধারায় আহাদ মিয়ার জবানবন্দি গ্রহণ করেন। স্বীকারোক্তিতে সে তার অন্যান্য সহযোগিদের নাম প্রকাশ করেছে। গ্রেফতারকৃত আহাদ মিয়া মির্জাপুর চা বাগানের চৌকিদার (পাহারাদার)। বুধবার ভোররাতে পিবিআই’র পুলিশ পরিদর্শক মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পিবিআই’র একটি বিশেষ টিম গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শ্রীমঙ্গলের মির্জাপুর চা বাগানে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম জানান, জবানবন্দি রেকর্ডের পর তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দিয়েছেন। সে নিজের দোষ স্বীকারের পাশাপাশি সহযোগিদের সম্পর্কেও তথ্য দিয়েছে।
আসামীর দেয়া তথ্যের বরাতে পিবিআই জানায়, ওই উপজেলার চলিতাতলা গ্রামের বাচ্চু মিয়ার মেয়ে পুটিজুরি এসসি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী তার নানা বাড়ি থেকে পড়ালেখা করতো। গত ২১ ফেব্রুয়ারি সে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে বখাটে মামুন মিয়াসহ তার সহযোগিরা তাকে জোরপূর্বক সিএনজি অটোরিকশায় তুলে নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে সে চিৎকার শুরু করলে মামুন তার বন্ধু তোফায়েলসহ অপর দুই বন্ধু তার মুখ চেপে ধরে। পরবর্তীতে তাকে বৃন্দাবন চা বাগান এলাকার পাশের নির্জন পাহাড়ি স্থানে নিয়ে মামুনসহ তার বন্ধুরা পালাক্রমে ধর্ষণ করে। তাদের ধর্ষণ শেষ হতে না হতেই ওই স্থানে এসে গ্রেফতার আহাদ মিয়া ধর্ষকদের কাছে তাকে সুযোগ দেয়ার জন্য বলে। তাকে সুযোগ না দিলে সে তাদের আটক করবে বলে জানায়। এ সময় লম্পট মামুনসহ তার সহযোগি বন্ধুরা আহাদের হাতে তুলে দিয়ে মেয়েটিকে ধর্ষণ করা সুযোগ করে দেয়। আহাদের ধর্ষণ শেষ হওয়ার পরই ধর্ষকেরাই মেয়েটিকে অজ্ঞান ও রক্তাক্ত অবস্থায় তার বাড়ির কাছাকাছি পাশে একটি রাস্তায় ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। ঘটনার ৩ দিন পর ২৪ ফেব্রুয়ারি ধর্ষিতা নিজে বাদি হয়ে ৫ জনকে আসামি করে বাহুবল থানায় মামলা দায়ের করেন। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আসামিদের ধরতে মাঠে নামে। ইতিপূর্বে র‌্যাব গণধর্ষণ মামলার আসামি তোফায়েলকে গ্রেফতার করে। তোফায়েল মিয়া (২০) বাহুবল উপজেলার বাঘেরখাল গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে।