এসএম সুরুজ আলী ॥ আজ শনিবার বানিয়াচং উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিথঙ্গল বড় আখড়া (রামকৃষ্ণ গোঁসাই আখড়া) পরিদর্শন করবেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মোঃ মাহবুব আলী এমপি। পরিদর্শনকালে তিনি সকাল সাড়ে ১১টায় আখড়ার ভক্ত নিবাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন এবং আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন। মন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে থাকবেন হবিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ মহিবুল হক, পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) রামচন্দ্র দাশ। এছাড়াও ভক্ত নিবাসের ভিত্তিপ্রস্তর আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মাহমুদুল কবীর মুরাদ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা (বিপিএম-পিপিএম-সেবা), হবিগঞ্জ রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন এর অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী বেদময়ানন্দ মহারাজ, হবিগঞ্জ শ্রীশ্রী নরসিংহ জিউর আখড়া ইসকন মন্দির পরিচালনা কমিটির অধ্যক্ষ উদয় গৌর ব্রহ্মচারী, বানিয়াচং উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কাশেম চৌধুরী।
প্রতিমন্ত্রীর এ সফরকে কেন্দ্র করে হবিগঞ্জ-বানিয়াচং সড়কের বিভিন্ন স্থানে প্রতিমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। এদিকে গতকাল বিথঙ্গল আখড়া পরিদর্শন করেছেন বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুন খন্দকার, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ফারুক আমিনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ। আখড়া কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিমন্ত্রীর অনুষ্ঠান সফল করার জন্য সব ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। আখড়ার উন্নয়নে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বড় ধরণের প্রকল্প বরাদ্দের ঘোষণা করবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন কর্তৃপক্ষ। এ ব্যাপারে আখড়া পরিচালনা কমিটির সভাপতি সুকুমার দাস মোহন্ত গোঁসাই ও সাধারণ সম্পাদক শংকর পাল জানান, বিথঙ্গল বড় আখড়াটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী একটি আখড়া ও অন্যতম তীর্থস্থান। রামকৃষ্ণ গোস্বামী তৎকালীন এই উপমহাদেশের বিভিন্ন তীর্থস্থান ভ্রমণ করে ষোড়শ শতাব্দীর দিকে আখড়াটি নির্মাণ করেছেন। আখড়াতে ১২০ জন বৈষ্ণব বসবাস করতেন। তাদের ব্যবহারের জন্য মোট ১২০টি কক্ষ রয়েছে। সেগুলো সংস্কারের অভাবে অনেকটা জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছিল। আমরা আখড়া সংস্কার কমিটিতে দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে আগের চেয়ে অনেকটা সৌন্দর্য্য এনেছি। এটি মধ্যযুগীয় স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত পর্যটকদের জন্য একটি অনন্য দর্শনীয় স্থান। প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে দেশ-বিদেশের অনেক পর্যটক আখড়া পরিদর্শনে যান। কিন্তু যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন এলাকা হওয়ার কারণে শুকনো মৌসুমে দর্শনার্থীরা আখড়া পরিদর্শন করেন খুবই কম। যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত ও আখড়ার বাইরে দর্শনার্থীদের থাকার ব্যবস্থা করা হলে আখড়াটি একটি ভ্রমণ গুরুত্বপূর্ণ স্থান হবে। এছাড়াও প্রতিমন্ত্রী ওইদিন বানিয়াচঙ্গের ঐতিহ্যবাহী সাগরদীঘিসহ বিভিন্ন দর্শনীয় স্থান পরিদর্শন করবেন। তিনি রাতে হবিগঞ্জ পুলিশ লাইন্সের কমিউনিটি পুলিশিং কর্তৃক আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে যোগদান করবেন।