অস্ত্র মামলার আসামী ছাত্রলীগ কর্মী তোফাজ্জল হক তালুকদারকে গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বানিয়াচং উপজেলার মন্দরী ইউনিয়নের উত্তর সাঙ্গর গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে দুই পুলিশ কনস্টেবল আহতের ঘটনায় উভয়পক্ষের ২৫ জনের নাম উল্লেখ করে আড়াইশ লোকের বিরুদ্ধে পুলিশ এসল্ট মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল বানিয়াচং থানা পুলিশ মামলাটি দায়ের করে। এদিকে মামলা দায়েরের পর থেকে উত্তর সাঙ্গর গ্রাম অনেকটা পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। মামলায় পুলিশের কাজে বাধা ও হামলার কথা উল্লেখ করা হয়। এ তথ্য নিশ্চিত করে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ রঞ্জন কুমার সামন্ত জানান, আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে। একই সাথে অস্ত্র আইনে দায়েরকৃত মামলার আসামী ছাত্রলীগ নেতা তোফাজ্জল হক তালুকদারকে পুলিশ গ্রেফতারের জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেছে।
উল্লেখ্য, উত্তর সাঙ্গর গ্রামের বাসিন্দা, ইউপি মেম্বার কাজী জানে আলম এবং জেলা ছাত্রলীগের সদস্য তোফাজ্জল হক তালুকদারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ বিরোধের জের ধরে বৃহস্পতিবার সকালে তোফাজ্জল তালুকদারের ছোট ভাইয়ের সাথে ইউপি মেম্বার কাজী জানে আলমের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তোফাজ্জল তালুকদারের ছোট ভাই ইউপি মেম্বার জানে আলমের উপর হামলা চালিয়ে আহত করে। পরবর্তীতে এ খবর জানে আলম মেম্বারের পক্ষের লোকজনদের মধ্যে ছড়িয়ে তারা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে প্রতিপক্ষ তোফাজ্জল তালুকদারের লোকজনদের ডাকাডাকি করেন। এক পর্যায়ে তোফাজ্জল তালুকদারের পক্ষের লোকজনও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জানে আলম পক্ষের লোকজনদের ডাকাডাকি করে। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে স্থানীয় মুরুব্বীয়ান পরিস্থিতি শান্ত করতে উভয়পক্ষের বাড়িতে গিয়ে আলোচনায় বসার চেষ্টা করেন। এর মধ্যে উভয়পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে বানিয়াচং সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মো. সেলিম ও সুজাতপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ ধ্রুবেশ চক্রবর্তীসহ পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ৪ রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি শান্ত করেন। এ সময় সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে কনস্টেবল বাদল ও মঈন আহত হন। আহত অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে চিকিৎসা প্রদান করা হয়েছে। এ ঘটনার পর পরই পুলিশ বিভিন্ন বাড়িতে গিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করে। একই সময়ে পুলিশ ছাত্রলীগ কর্মী তোফাজ্জল হক তালুকদারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার বিছানার নিচ থেকে একটি দেশীয় তৈরি পিস্তল ও ৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করে। পরবর্তীতে সংঘর্ষে জড়িত হতে না পারে সেজন্য বিভিন্ন বাড়িতে অভিযান চালিয়ে শতাধিক টেটা, ফিকলসহ দেশীয় অস্ত্র ও ঢাল উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ছাত্রলীগ নেতা তোফাজ্জল হক তালুকদারের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে তার বিছানার নিচ থেকে একটি পিস্তল ও ৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় রাতেই তোফাজ্জল হক তালুকদারের বিরুদ্ধে বানিয়াচং থানায় অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়।