স্টাফ রিপোর্টার ॥ আজমিরীগঞ্জে বিয়ের ৩ মাসের মাথায়ই যৌতুক দিতে না পরায় স্বামী ও তার পরিবারের লোকজনের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন ফারজানা আক্তার পলি। থানায় মামলা করেও কোনও প্রতিকার পাচ্ছে না মেয়েটি। উপরোন্তু প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে আসামীরা। মেহেদীর দাগ মুছার আগেই দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে মেয়েটির জীবন। পলি উপজেলার নোয়াগর গ্রামের মৃত জাহের আলীর মেয়ে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৮ নভেম্বর বানিয়াচং উপজেলার কুতুবখানী গ্রামের আকবর আলীর ছেলে শাহিনুরের সাথে বিয়ে হয় নোয়াগর গ্রামের পলির। বিয়ের পর সুখেই কাটছিল পলির সংসার। এরপর মেয়েটির উপর দৃষ্টি পড়ে আজমিরীগঞ্জ উপজেলার নগর গ্রামের শওকত আকবরের ছেলে ৩ সন্তানের জনক আমির হোসেনের। এক পর্যায়ে পলিকে উন্নত জীবন যাপনের প্রলোভন দিয়ে পূর্বের স্বামীকে তালাক দিয়ে তাকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেয় আমির হোসেন। প্রতারক আমিরের প্রলোভনে রাজী হয়ে পূর্বের স্বামীকে তালাক দেওয়ার পর গত ২৮ এপ্রিল হবিগঞ্জ নোটারী পাবলিকের কার্যালয়ের এফিডেভিটের মাধ্যমে আমিরকে বিয়ে করেন পলি। এদিকে- বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই স্বামী ও তার আত্মীয়-স্বজন ৫ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন শুরু করে। শুধু মারপিটই নয়, মেয়েটির পরনে থাকা অলংকার ছিনিয়ে নেয় নির্যাতনকারীরা।
এদিকে পরিবারের লোকজনকে না জানিয়ে আমিরকে বিয়ে করে তার সাথে চলে আসার পর পলিকে খুঁজে না পেয়ে আজমিরীগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন তার ভাই লতিবুর রহমান। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৬ জুন পলিকে স্বামীর বাড়ি থেকে উদ্ধার করে নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করে পুলিশ।
পরবর্তীতে গত ৩ জুন পলি বাদী হয়ে আমির হোসেন, শ্বশুর শওকত আকবর, শাশুড়ি সরাজ বিবি, ভাসুর কামাল মিয়া, ননদ শিরিন আক্তার ও আমিরের ভগ্নিপতি ওবায়দুর রহমানকে আসামী করে আজমিরীগঞ্জ থানায় নারী নির্যাতনের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেন।
এদিকে- মামলা দায়েরের প্রায় ১ মাস চলে গেলেও কোনও আসামী গ্রেফতার না হওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে নির্যাতনের শিকার মেয়েটি। পলি ও তার ভাইদের দাবি- আসামীরা রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় থেকে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এ ব্যাপারে তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
এ ব্যাপারে আজমিরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন তরফদার জানান, আসামীদের গ্রেফতারে চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ।