এমএ আহমদ আজাদ, নবীগঞ্জ থেকে ॥ নবীগঞ্জে উপজেলায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কুশিয়ারা ডাইক ভাঙ্গন অংশে মেরামত না করে বিকল্প অংশে বাঁধ দেয়া হয়েছে। কিন্তু ভাঙ্গন দিয়ে এখনো পানি প্রবেশ করছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড মেরামতের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে বিকল্প জায়গায় মেরামত করা করা হয়। আজ কুশিয়ারা ডাইক পরিদর্শনে আসছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. মো. এনামুর রহমান ও সিনিয়র সচিব শাহ কামাল এবং আগামী শনিবার পানিসম্পদ মন্ত্রী জাহিদ ফারুক কুশিয়ারা ডাইকসহ বিবিয়ানা পাওয়ার প্লান্ট পরিদর্শন করবেন।
এলাকাবাসীর মধ্যে আশার সঞ্চার হলেও কুশিয়ারা ডাইকের মেরামতে মাস্টার প্লান গ্রহণের দাবি উঠেছে। প্রতি বছর বর্ষা মওসুমে কেন ডাইকটি ভেঙ্গে যায় তার জন্য নেপথ্যে কারণ খুঁজে বের করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি উঠেছে সচেতন মহলের। বর্তমান সংসদ সদস্য গাজী মোঃ শাহনওয়াজ মিলাদ নবীগঞ্জবাসীকে বন্যার হাত থেকে বাঁচানোর জন্য কুশিয়ারা ডাইক নিয়ে একটি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা ও প্রকল্প গ্রহণের জন্য প্রস্তাব করেছে। এর আগে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এলাকা পরিদর্শন করে কুিশয়ারা নদীর ভাঙ্গনরোধে প্রায় আড়াই কোটি টাকা জরুরী ভিত্তিতে বরাদ্দ প্রদান করেন। দুই মন্ত্রীর সফর নিয়ে সবার মধ্যে আশার আলো সঞ্চার হয়েছে। কুশিয়ারা ভাঙ্গন ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রক্ষায় সরকারের ১০০ কোটির প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখতে পারে। এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ বিন হাসান। তিনি বলেন, দুই মন্ত্রী এক সাথে সফর মানে নবীগঞ্জবাসীর জন্য একটি চমকপ্রদ সুখবর থাকতে পারে।
বাঁধের সামনের বিকল্প জায়গায় বাধ দিয়ে বন্যার পানি আটকানোর চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। মূল ভাঙ্গন দিয়ে পানি প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। গতকাল সোমবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত কুশিয়ারার পানি বৃদ্ধি না পেলেও বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। পেয়েছে। পানি এখনও বিপদসীমার ৫৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ মিলাদ ব্যক্তিগত পক্ষ থেকে কিছু ত্রাণ সামগ্রি বিতরণ করেছেন। আজ পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একে এম এনামুল হক শামীম, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ড. মো. এনামুর রহমান সরকারীভাবে ত্রাণ বিতরণ করবেন। এ ব্যাপারে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
কুশিয়ারা ডাইক ভেঙ্গে নবীগঞ্জ উপজেলার, রাজের বন্ধ, জোয়াল ভাঙ্গা হাওর, বেলি বিল, বড় হাওর, গুঙ্গিয়াজুরি হাওরের প্রায় ১০ হাজার একর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। বন্যার পানিতে ইতোমধ্যে উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের বনগাও, ইসলামপুর, পারকুল, ঢালার পাড়, পাহাড়পুর সহ ১৫টি গ্রাম এবং দীঘলবাক ইউনিয়নের দীঘলবাক, কসবা, কুমারকাঁদা, ফাদুল্লা, রাধাপুর, দুর্গাপুর, জামারগাঁও সহ ২০টি গ্রাম এবং ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের বিবিয়ানা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ২০টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন।
ইনাতগঞ্জ বাজারের পাশর্^বর্তী উমরপুর, ইনাতগঞ্জের বাজারের ছড়া, পূর্ববাজার কলনী, চন্ডিপুর, বটপাড়া, বাউরকাপন, মোকামপারা, রাজনগরসহ আশপাশের শত শত গরীব পরিবারের বাড়ি ঘরে পানি প্রবেশ করেছে। দীঘলবাক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সাইদ এওলা বলেন, কুশিয়ারা নদীর ভাঙ্গন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমার মনে হয় বন্যার পানি কমলে বাঁধ মেরামত করা সম্ভব।
আউশকান্দি ইউপির চেয়ারম্যান মুহিবুর রহমান হারুন, বলেন, কুশিয়ারা ডাইক ভেঙ্গে যাওয়ার ফলে তার ইউনিয়নে প্রায় ২০টি গ্রাম বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। জোয়াল ভাঙ্গা হাওর, বেলী বিলের হাওরে কয়েক হাজার একর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে।
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com