স্টাফ রিপোর্টার ॥ সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন সাংবাদিক জুয়েল চৌধুরী। এ ঘটনায় জরুরী প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেছে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব। আহত সাংবাদিক জুয়েল চৌধুরীকে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সাংবাদিক জুয়েল চৌধুরী হবিগঞ্জের দৈনিক খোয়াইসহ একটি জাতীয় দৈনিকে কর্মরত রয়েছেন।
হামলার শিকার সাংবাদিক জুয়েল চৌধুরী জানান, গতকাল রবিবার বিকেলে জেলা শহরের বেবীস্ট্যান্ড এলাকায় নারী কেলেঙ্কারীর অভিযোগে অব্যাহতি প্রাপ্ত হবিগঞ্জ জজ কোর্টের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট আবুল কালামের নেতৃত্বে তার উপর এই হামলা চালানো হয়। ওই সময়ে তিনি বেবীস্ট্যান্ড এলাকায় জজ কোর্টের সামনে দিয়ে হেটে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ অ্যাডভোকেট কালামসহ তার সহযোগীরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে তার উপর হামলা চালায়। হামলাকারীদের পিটুনীতে তার হাত, মুখ ও পায়ের বিভিন্ন স্থানে আঘাত প্রাপ্ত হয়। স্থানীয় লোকজন বিষয়টি দেখতে পেয়ে এগিয়ে এসে হামলাকারীদের কবল থেকে তাকে উদ্ধার করে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। খবর পেয়ে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে জুয়েলকে দেখতে যান হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ ইসমাইল হোসেন ও সাবেক সভাপতি শামীম আহছানসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।
সদর হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ দেবাশীষ দাশ জানান, আহত সাংবাদিকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখম রয়েছে। বর্তমানে সার্বিকভাবে তার অবস্থা স্থিতিশীল। এক্স-রে রিপোর্ট হাতে পেলে জানা যাবে কোথাও ভেঙ্গেছে কি না।
হবিগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মাসুক আলী জানান, হামলার বিষয়টি জানতে পরেছি। আহত সাংবাদিককে আমি হাসপাতালে দেখে এসেছি। এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি মোঃ ইসমাইল হোসেন বলেন, সাংবাদিক জুয়েলের উপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে প্রেসক্লাবে আজ সোমবার সকাল ১১টায় জরুরী সভার আহবান করা হয়েছে। পরবর্তীতে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
প্রসঙ্গত, হামলাকারী অ্যাডভোকেট কালাম ১৭ জানুয়ারি দুপুর ১২টায় বন্ধের দিনে আদালতের ভবনে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) হিসেবে পাওয়া তার সরকারি কার্যালয়ে এক নারীকে নিয়ে অবস্থান করেন। তাদের আচরণ সন্দেহ জনক হলে বিষয়টি দেখতে পেয়ে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নূরুল হুদা চৌধুরী তাকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। এ সময় বিচারকের প্রশ্নের সদুত্তর না দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে সটকে পড়েন অ্যাডভোকেট কালাম। বিচারকের নির্দেশে একইদিন রাত ১০টায় হবিগঞ্জ শহরের মোহনপুর এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এবং ওইদিনই তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। পরে সরকারি এপিপি’র পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জের ধরে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এপিপি কালাম। বর্তমানে তিনি জামিনে রয়েছেন।