মতিউর রহমান মুন্না, নবীগঞ্জ থেকে ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার চৌশতপুর গ্রামে ভাসমান বেডে সবজি আবাদ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। গতকাল ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা ফসল আবাদের প্রদর্শনীর উপর ওই গ্রামে মাঠ দিবসের আয়োজন করে নবীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস। এ মাঠদিবস অনুষ্ঠানে প্রদর্শন করা হয়- পানিতে কচুরিপানার উপর মাটি ছাড়াই উৎপাদিত লাউ, খিরা, টমেটো, মরিচ, ডাটা, লাইশাক, ঢেড়স, লালশাক, ফুলকপি, বাঙ্গি ইত্যাদি ফসল। এ এলাকার দরিদ্র কৃষক/কৃষাণীদের প্রশিক্ষণ, কারিগরি সহায়তা ও কৃষি উপকরণ সরবরাহ করে নিচু জমিতে অবস্থিত পরিত্যক্ত কচুরিপানা দিয়ে বেড তৈরি করে সবজি ও মসলা ফসল চাষ করা হয়। উক্ত মাঠদিবস অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন হবিগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ মোঃ তমিজ উদ্দিন খান। তিনি বলেন, ভাসমান বেডে সবজি চাষ করলে একদিকে যেমন পুষ্টিকর, সুস্বাদু ও নিরাপদ শাকসবজি পাওয়া যায় অন্যদিকে কচুরিপানা ও এডিস মশার উপদ্রব থেকে রক্ষা পাওয়া যায়।
কচুরিপানা পচিঁয়ে বেড তৈরি করে সবজি আবাদ করলে সবজি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে, খুবই স্বল্প খরচে ফসল আবাদ করলে পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা পূরণ করার পর ফসল বিক্রি করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটে। ২ হাজার টাকা খরচ করে ভাসমান বেডে সবজি আবাদ করলে ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় করা যায়। ফসল শেষ হওয়ার পর সম্পূর্ণ পঁচে যাওয়া বেড থেকে উত্তম জৈবসার পাওয়া যায়। হাওর এলাকার জন্য এ প্রযুক্তিটি খুবই উপযোগী বলে তিনি সকলকে এ প্রযুক্তি গ্রহণের আহবান জানান।
অলক কুমার চন্দের সঞ্চালনায় এ আড়ম্বরপূর্ণ মাঠদিবস অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত উপপরিচালক মোঃ জালাল উদ্দিন, উপজেলা কৃষি অফিসার এ, কে, এম, মাকসুদুল আলম। আরও উপস্থিত ছিলেন- উপসহকারি উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা অর্ধেন্দু দেব, উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব আলমসহ বিভিন্ন ব্লকের কর্মকর্তাবৃন্দ ও শতাধিক কৃষক, কৃষাণী। মাঠদিবসে কৃষাণী মায়ারন বিবি, রুপ তারা বেগম, কৃষক আঃ রউফ ও আবু তালিব ভাসমান বেডে সবজি ও মসলা ফসল আবাদের অভিজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং তাদের এ প্রযুক্তি প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। বছরের প্রথম দিনে আয়োজিত এ মাঠদিবস অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলে এ কাজের প্রশংসা করেন এবং আগামীতে নবীগঞ্জে এ প্রযুক্তি আরও দ্রুতগতিতে সম্প্রসারিত হবে বলে আশাবাদ প্রকাশ করেন।