মোঃ মামুন চৌধুরী ॥ প্রাণ-আরএফএল পাবলিক স্কুলে মনোরম পরিবেশ। সামনে বিশাল মাঠ। এরমধ্যে বহুতল ভবন। এ ভবনে চলছে মানসম্মত শিক্ষা কার্যক্রম। সময়মত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আসছেন।
জেলার শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলার অলিপুর এলাকায় ২০১৫ সালে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের প্রতিষ্ঠা করা এ স্কুল থেকে এবারের প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা (পিইসি)তে ৩৩ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে সবাই কৃতকার্য হয়। এর মধ্যে ২৪টি ‘এ প্লাস’ রয়েছে।
আর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি)তে ৪৪ জন অংশ নিয়ে সবাই উত্তীর্ণ হয়। এতে ৬ জন শিক্ষার্থী ‘এ প্লাস’ অর্জন করে। তাতে করে পিইসি ও জেএসসিতে শতভাগসহ মোট ৩০টি ‘এ প্লাস’ আসে।
পিইসিতে ‘এ প্লাস’ প্রাপ্তরা হলেন- মোঃ সজিব মিয়া, মোঃ বদরুল মিয়া, মোঃ জিয়া উদ্দিন জিহাদ, মোঃ মশিউর রহমান রিতুল, মোঃ গাউস উদ্দিন তুষাল, মোঃ রাফিউ হাসান, মোঃ আতাউর রহমান সিয়াম, শাহ ইস্তিয়াক আহমেদ তামিম, মোঃ আজাদ মিয়া, তাসিন চৌধুরী শিফাত, রাজিন আহমেদ, মোঃ রবিউল আলম সিয়াম, মোঃ মুফরাদ করিম জিহাদ, মোঃ ইমন ইসলাম, সিদরাতুল মুনতাহা জান্নাত, আরওয়া ইসলাম (অন্বেষা), মোহনা চৌধুরী, মোছাঃ হুমায়রা আক্তার তুলনা, মোছাঃ রিয়া আক্তার মিতু, সাবরিনা শাহরিন মাইশা, মোছাঃ ফাহমিদা চৌধুরী, ফৌজিয়া আক্তার, মোসাঃ মিনা আক্তার, তানজিয়া মোসতারী।
জেএসসিতে ‘এ প্লাস’ প্রাপ্তরা হলেন ইকরামুল তালুকদার, জিহাদ হোসেন, মোহাম্মদ দিহান, রাজিন আহমেদ সিয়াম, কোহিনুর আক্তার হাসি, বন্যা আক্তার।
বর্তমানে স্কুলের শিক্ষার্থী সংখ্যা প্রায় ৭০০। স্কুলটিতে নার্সারী থেকে ১০ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মাঝে পাঠদান করছেন ২৫ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। এ স্কুলে প্রাণ-আরএফএল কোম্পানীর কর্মকর্তা-কর্মচারীর সন্তান ছাড়াও বিশেষ করে আশপাশের শিক্ষার্থীরা পড়াশুনা করতে পারছে। তারমধ্যে দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের বেলায় স্কুলের পক্ষ থেকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
দূরের শিক্ষার্থীদেরকে স্কুলের নিজস্ব বাসে করে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়ে থাকে। বাৎসরিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ছাড়াও বিভিন্ন দিবস গুরুত্বের সাথে পালন করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে সুষ্ঠু বিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে নিয়মিত।
পরিদর্শনকালে দেখা গেছে স্কুলের চারপাশে প্রাচীর। গেটে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তাকর্মীরা নিয়োজিত। মনোরম পরিবেশে শিক্ষার্থী স্কুলে এসে ক্লাসে ক্লাসে যাচ্ছে। ক্লাস শেষে বাড়ি ফিরছে। এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি জানান, এ স্কুলটি হওয়ায় তৃণমূলের সন্তানরা মানসম্মত শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে। এজন্য তারা স্কুল কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের জেনারেল ম্যানেজার ও স্কুল গভর্ণিং বডি সভাপতি হাসান মোঃ মঞ্জুরুল হক বলেন- শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। সুশিক্ষা গ্রহণ করে এগিয়ে যেতে হবে। এ স্কুলের শুরু থেকে মানসম্মত শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। যার প্রমাণ এ রেজাল্ট। হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের আরএফএল’র জিএম ফজলে রাব্বী বলেন- এ রেজাল্ট শুনে ভাল লাগছে। দিন দিন এ বিদ্যাপীঠটি এগিয়ে যাচ্ছে। শিল্প দেখাশুনার পাশাপাশি স্কুলটিকে এগিয়ে নিতে আমরা কাজ করছি।
হবিগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মোহাম্মদ এহসানুল হাবিব জয় এ অভাবনীয় ফলাফলে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আরো এগিয়ে যেতে হবে। শিক্ষকরা আন্তরিকভাবে পাঠদান করাচ্ছেন। আমরাও স্কুলের দিকে নজর রাখছি। আগামীতে আরো ভাল ফলাফল আশা করছি।
স্কুলের প্রিন্সিপাল স্টিফেন্স লিউক মালাকার বলেন, শিক্ষকরা অতি যতœ সহকারে শিক্ষার্থীদের মাঝে সুশিক্ষার আলো ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছেন। ইতোমধ্যে ব্রিটিশ কাউন্সিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এওয়ার্ড অর্জন করেছে এ স্কুলটি। আমরা অনেক দূর এগিয়ে যেতে চাই। তিনি সবার সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।