হবিগঞ্জে পুলিশের ৭টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ

মুজিব বর্ষে আমাদের অঙ্গিকার পুলিশ হবে জনতার ॥ ডিআইজি
এসএম সুরুজ আলী ॥ সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি বলেছেন, মোবাইল ফোনের অপব্যহারে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মোবাইল ফোনের সঠিক ব্যবহার করতে হবে। মোবাইলের নেশা এটা একটি মরণ নেশা। যে যেখানেই থাকেন মোবাইল টিপে ব্যস্ত সময় কাটান। মোবাইলের এ নেশা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। তিনি ছাত্রদের উদ্দেশ্যে বলেন, অযথা মোবাইল টিপে সময় নষ্ট করবে না। প্রয়োজনে মোবাইল ব্যবহার করতে হবে। তিনি বলেন বাঙালির আবহমান ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বুকে ধারণ করতে হবে। আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তুলেছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে হবিগঞ্জ জেলা পুলিশের উদ্যোগে জনসচেতনতামূলক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, হবিগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় তুচ্ছ বিষয় নিয়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে থাকে। এতে বহু লোক রক্তাক্ত হন। আবার সংঘর্ষে হত্যাকান্ডের ঘটনাও ঘটে। রক্ত ঝড়লেই কোন কিছু সমাধান হয় না। রক্ত ঝড়লে বিপদ বাড়বে। তিনি বলেন, এক সময় হবিগঞ্জের হাট-বাজারে টেটা ফিকল বিক্রি করা হতো। এখন তা বন্ধ হয়েছে। এর অবদান পুলিশ প্রশাসনের। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উন্নত পুলিশ বাহিনী গড়ে তুলেছেন। পুলিশ এখন সবক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডসহ বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম করে যাচ্ছে পুলিশ।
হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমপি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির, সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান, এমপি গাজী মোহাম্মদ শাহনওয়াজ মিলাদ, কবি নজরুল ইনস্টিটিউট নির্বাহী পরিচালক অতিরিক্ত সচিব মোঃ আব্দুর রাজ্জাক ভূঞা, সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মোঃ কামরুল আহসান, হবিগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোঃ আলমগীর চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মিজানুর রহমান, কবি তাহমিনা বেগম গিনি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ সেলিম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএম রাজু আহমেদ, সহকারি পুলিশ সুপার পারভেজ আলম চৌধুরী, সহকারি পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, সহকারি পুলিশ সুপার মানছুরা আক্তার। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সহকারি পুলিশ সুপার তৃপ্তি মন্ডল।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এমপি অ্যাডভোকেট আবু জাহির বলেন, বর্তমান সরকার দেশের কল্যাণে আন্তরিকভাবে কাজ করছে। হবিগঞ্জ সদর-লাখাইকে শান্তিপূর্ণ রাখার জন্য আমি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আগের চেয়ে এখন শান্তিপূর্ণ এলাকা হিসেবে আমার নির্বাচনী এলাকা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান বলেন, এক সময় বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ দাঙ্গা প্রবণ এলাকা হিসেবে পরিচিত ছিল। এখন বানিয়াচং আজমিরীগঞ্জ দাঙ্গা মুক্ত হয়েছে। ডিআইজি মোঃ কামরুল আহসান বলেন, সামাজিক কর্মকান্ড ও উঠান বৈঠকের মাধ্যমে পুলিশ মানুষের কাছে যাচ্ছে। এতে পুলিশ ও সাধারণ লোকজনদের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপন হচ্ছে। অপরাধ প্রবণতা প্রতিরোধ করা সহজ হচ্ছে। এর মাধ্যমে গ্রাম্য দাঙ্গাও প্রতিরোধ করা সম্ভব হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, সম্প্রসারিত বিট পুলিশিংয়ের উদ্যোগে বিরোধ নিষ্পত্তি করছে। তিনি বলেন, যে কোন অপরাধ দমনে পুলিশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। মুজিব বর্ষে আমাদের অঙ্গিকার পুলিশ হবে জনতার। এ জন্য পুলিশকে সহযোগিতা করতে হবে। সভাপতির বক্তব্যে পুলিশ সুপার বলেন, দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে আনতে আমরা জেলার প্রায় ৩৫টি মাদ্রাসায় রচনা প্রতিযোগিতা দিয়েছি। প্রায় ৫শ স্কুল, কলেজে রচনা প্রতিযোগিতা দিয়েছি। এছাড়াও আমরা সামাজিক বিরোধগুলো নিষ্পত্তি করছি। এসব কর্মকান্ড করায় হবিগঞ্জে গত ১ বছরে সাড়ে ৬শ মামলা কমে গেছে। দাঙ্গাও জেলা থেকে কমে গেছে। সব মিলিয়ে হবিগঞ্জকে শান্তিপূর্ণ জেলা হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছি। পরে প্রতিমন্ত্রী হবিগঞ্জ পুলিশের নির্মিত ৭টি স্বল্পদৈর্ঘ চলচ্চিত্রের উদ্বোধন করেন।