মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ সময় ও ¯্রােত কারো জন্য অপেক্ষা করে না। সময়কে কখনো বেঁধে রাখা যায় না। তাই একের পর এক পঞ্জিকার পাতা উল্টে চলে যায় দিন, মাস, বছর, যুগের পর যুগ। কালের পরিক্রমায় এভাবেই দিনপঞ্জির পাতা উল্টাতে উল্টাতে দোরগোড়ায় হাজির হলো নতুন আরো একটি বছর। ২০২০ খ্রিস্টাব্দ। শুভ ইংরেজি নববর্ষ। খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ অব্দ থেকে ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনের সূচনা হয়েছে। আধুনিক গ্রেগরিয়ান ও জুলিয়ান ক্যালেন্ডারে ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হয় নতুন বছর। মেসোপটেমিয় সভ্যতা (বর্তমান ইরাক) থেকে প্রথম নববর্ষ উদযাপনের সূচনা হয়। নিজস্ব গণনা বছরের প্রথম দিনে তারা নববর্ষ উদযাপন করতো। তবে রোমে নতুন বছর পালনের প্রচলন শুরু হয় খ্রিস্টপূর্ব ১৫৩ সালে। পরে খ্রিস্টপূর্ব ৪৬ অব্দে স¤্রাট জুলিয়াস সিজার ‘জুলিয়ান ক্যালেন্ডার’ নামে একটি নতুন বর্ষপঞ্জিকার প্রচলন করেন। আনুষ্ঠানিকভাবে নিউ ইয়ার পালন শুরু হয় ১৯ শতক থেকে। নতুন বছরের আগের দিন অর্থাৎ ৩১ ডিসেম্বর হচ্ছে নিউ ইয়ার ইভ। এদিন নতুন বছরের আগমনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিরাজ করে উৎসবমুখর পরিবেশ।
রীতি অনুযায়ী জানুয়ারির ১ তারিখে বাংলাদেশে নিউ ইয়ার উদযাপন করা হয়। ৩১ ডিসেম্বর দিন পেরিয়ে শূন্য ঘণ্টা থেকে শুরু হয় উৎসব। রাতের এ উৎসবকে বলা হয় ‘থার্টি ফার্স্ট নাইট’। তবে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে এখন পর্যন্ত ইংরেজি নববর্ষ উদযাপনের তেমন প্রচলন নেই। গ্রামাঞ্চলে কোথাও কোথাও এ উৎসব উদযাপন হলেও তা খুবই নগণ্য। কিন্তু বড় শহর ও মফস্বলে এ উৎসবের জনপ্রিয়তা বেশ লক্ষণীয়।
প্রতিবছর বাংলাদেশে নানারকম উৎসবমুখর পরিবেশে দিনটি উদযাপন করা হয়। সাধারণ জনতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দল, গোষ্ঠী, প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাঙ্গন সর্বক্ষেত্রেই নানা রঙয়ে নানা ঢঙয়ে পালিত হয় নিউ ইয়ার। সামাজিক যোগযোগ মাধ্যমে একে অপরের সাথে বিনিময় চলে শুভেচ্ছা বার্তা। বিভিন্ন পণ্য ব্যবসায়ীরা এই দিন উপলক্ষে তাদের পণ্যে নানারকম আকর্ষণীয় ছাড় দিয়ে থাকেন ক্রেতাদের জন্য।
আগেকার দিনে হাতে লেখা কার্ডের খুব কদর ছিল। সোশ্যাল দুনিয়ায় কেমন যেন তা হারিয়ে গিয়েছে। সবাই এখন নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানান ফেসবুক, মেসেঞ্জার, টুইটার কিংবা হোয়্যাটসঅ্যাপে। তার মধ্যে কতটা আন্তরিকতার ছোঁয়া থাকে তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।
বছর আসে বছর যায়, কিন্তু রয়ে যায় অনেক স্মৃতি। শুভ হোক নতুন বছরের নতুন পথচলা। শুভ ২০২০।