এসএম সুরুজ আলী ॥ চুনারুঘাটের আলোচিত ব্যবসায়ী নেতা হাজী আবুল হোসেন আকল মিয়া হত্যাকান্ডের ঘটনায় নিহতের আপন ভাতিজা সাইদুল ইসলাম স্বপনের জামিন নামঞ্জুর করেছে আদালত। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টায় সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সুলতান উদ্দিন প্রধানের আদালতে তার জামিন আবেদন করলে শুনানি শেষে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করেন। এছাড়াও গতকাল নিয়মিত হাজিরা দিয়েছেন মামলার এজাহারভূক্ত আসামী সৈয়দ কুতুব উদ্দিন ইয়ামিন, জসিম উদ্দিন শামীম, ছদর উদ্দিন শিহাব, সুমন মিয়া, চান মিয়া ও সাইফুল ইসলাম রুবেল। মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল হাই জানান, চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলাটি দু’বছর ধরে তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই। এর মধ্যে মামলার এজাহার নামীয় ৪ জন আসামীর মধ্যে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এজাহার বহির্ভূত আরো ৪ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ নিয়ে ৭ আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি মামলাটির দ্রুত বিচার দাবি করেন। মামলার পরবর্তী তারিখ ১৭ ডিসেম্বর ধার্য্য করা হয়েছে।
অপরদিকে মামলার আসামীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান রবিন জানান, চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডে ষড়যন্ত্রমুলকভাবে বাদীপক্ষ বিএনপি নেতা কাউন্সিলর কুতুব আলীসহ কয়েকজনকে আসামী করেছে। তিনি এর সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানান।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের ১ মার্চ ভোরে চুনারুঘাট শহরের বাল্লা রেলগেইট এলাকার বাসা থেকে বের হয়ে মসজিদে ফজরের নামাজ আদায় করতে যান চুনারুঘাট বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির তৎকালীন সভাপতি আবুল হোসেন আকল মিয়া। নামাজ আদায় করে বাসায় ফেরার পথে দুর্বৃত্তদের হামলায় তিনি গুরুতর আহত হন। তার চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করলে রাস্তায় সকাল সাড়ে ৮টায় তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর ঘটনায় স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে চুনারুঘাট সদরে হরতাল পালন করে। ঘটনার পর থেকেই পুলিশ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটন করতে মরিয়া হয়ে উঠে। উক্ত ঘটনায় ৩০ মার্চ জসিম উদ্দিন চৌধুরী শামীমকে ঢাকার তেজকুনিপাড়ার একটি বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। ৩১ মার্চ তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
এ হত্যা মামলার দুই নম্বার আসামী গ্রেফতারকৃত চুনারুঘাট পৌরসভার কাউন্সিলর কুতুব আলী চুনারুঘাট পৌরসভার ধলাইপাড় গ্রামের বাসিন্দা। বর্তমানে তিনি কারাগারে রয়েছেন। এ হত্যাকান্ডের তদন্তে সম্পৃক্ততা পাওয়ায় তার আপন ভাতিজা সাইদুল ইসলাম স্বপনকে ২৮ অক্টোবর চুনারুঘাট উপজেলার চন্দনা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত স্বপন চন্দনা গ্রামের ভিংরাজ মিয়ার ছেলে। ২৯ অক্টোবর তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়। এ হত্যা মামলার প্রধান আসামী রঞ্জন পাল পলাতক রয়েছেন। আবুল হোসেন আকল মিয়া হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত এজাহারভুক্ত তিন আসামীসহ ৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়।