মাদকের ট্রানজিট রোড হিসাবে ব্যবহৃত হয় তেলিয়াপাড়া সড়ক ॥ প্রয়োজনে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে দুর্বৃত্তরা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জের মাধবপুরে পুলিশের চেক পোস্টে হামলা, পুলিশ এসল্ট ও ডাকাতির প্রস্তুতি মামলার এক আসামী আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। শুক্রবার হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিনা হক তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করেন। তেলিয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (এসআই) রকিবুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আদালতে নরসিংদী জেলার ব্রাহ্মণদি গ্রামের শেখ আব্দুল কাদিরের ছেলে আব্দুস সোবহান সুমন স্বীকার করেন তারা মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। দীর্ঘদিন যাবত ঢাকা-সিলেট পুরাতন মহাসড়কের হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার তেলিয়াপাড়া সড়কটি ব্যবহার করছে তারা। তাদের কাজে কেউ বাধা প্রদান করলে তারা আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করেন। তাদের সঙ্গে মাধবপুর উপজেলারও কিছু লোকও জড়িত রয়েছে বলে সোবহান স্বীকার করেছেন।
অপর আসামী নরসিংদী জেলার সৈয়দুরখোলা গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে বায়েজিদ বোস্তামি পুলিশের চেক পোস্টে মোটর সাইকেল নিয়ে হামলা করতে গিয়ে মোটর সাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে ব্যাথা পেয়েছেন। সেজন্য তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুলিশ হেফাজতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। দুর্বৃত্তদের হামলায় আহত এএসআই জিয়াউর রহমান চোখে মারাত্মক আঘাত পেয়েছেন। তাকে ঢাকায় চক্ষু হাসপাতলে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আহত পুলিশ সদস্য রুহুল আমিনকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। তার পায়ে অপারেশন করতে হবে। গত বুধবার রাতে তেলিয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির এসআই রকিবুল হাসানসহ একদল পুলিশ সুরমা চা বাগানে রাত্রীকালীন চেক পোস্ট ডিউটি করার সময় চুনারুঘাট থেকে একটি নাম্বারবিহীন মোটর সাইকেল চেক পোস্ট অতিক্রম করার সময় এএসআই জিয়াউর রহমান সহ পুলিশ সদস্যরা থামানোর জন্য সংকেত দেয়। এ সময় মোটর সাইকেল চালক না থামিয়ে চেক পোস্টের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পুলিশ সদস্যদের উপর দিয়ে দ্রুতগতিতে মোটর সাইকেল চালিয়ে পালাতে থাকে। এতে মোটর সাইকেলের ধাক্কায় এসআই রকিবুল হাসান, এএসআই জিয়াউর রহমান, কনস্টেবল সানোয়ার হোসেন, মোঃ আবুল ফায়েজ, ড্রাইভার মোঃ রুহুল আমিন আহত হন। এ সময় পুলিশ মোটর সাইকেলটি ধাওয়া করে নরসিংদী জেলার ব্রাহ্মণদি গ্রামের শেখ আব্দুল কাদির মিয়ার ছেলে আব্দুস সোবাহান (২৭) ও শিবপুর থানার সৈয়দের খোলা গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে বায়েজিদ বোস্তামীকে (১৯) আটক করে। তাদের তল্লাশী করে একটি ৭.৬২ চায়না পিস্তল, একটি ম্যাগজিন সহ ২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় তেলিয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির এসআই রকিবুল হাসান বাদি হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে নরসিংদী জেলার ব্রাহ্মণদি গ্রামের শেখ আব্দুল কাদির মিয়ার ছেলে আব্দুস সোবাহান (২৭), শিবপুর থানার সৈয়দের খোলা গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে বায়েজিদ বোস্তামী (১৯) সহ অজ্ঞাত ৬/৭ জনকে আসামী করে অস্ত্র আইন, ডাকাতির প্রস্তুতি ও পুলিশ এসল্ট ঘটনায় পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করেন।
মাধবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ভারপ্রাপ্ত) গোলাম দস্তগীর জানান, আসামীদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য বিজ্ঞ আদালতে আবেদন করা হবে।