উত্তর সাঙ্গরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দাঙ্গা জঙ্গি ও বাল্যবিবাহ নিয়ন্ত্রণে করণীয় শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ

অল্প বয়সে মেয়েরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। এতে নিজের শিক্ষা জীবনের ক্ষতি করছেন। শিশুরা মোবাইল ফোন চোখের সামনে নিয়ে গেমস্ দেখার কারণে চোখের ক্ষতি করছেন। অল্প বয়সে তাদের চোখে চশমা ব্যবহার করতে হচ্ছে। বাল্যবিবাহ ঠেকাতে প্রশাসনকে জানাতে হবে।

স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা বিপিএম-পিপিএম (সেবা) বলেছেন- শিক্ষার্থীদেরকে সুশিক্ষা গ্রহণ করে দেশের সেবায় এগিয়ে আসতে হবে। আর সুশিক্ষিত হতে হলে মনোযোগ সহকারে লেখাপড়া করতে হবে। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে দেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিদের জীবনী অনুসরণ করতে হবে। তাদের জীবনী অনুসরণ করে নিজেদের সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। শনিবার সকালে বানিয়াচং উপজেলার উত্তর সাঙ্গর শেখ শামছুল হক কলেজ, উত্তর সাঙ্গর গাউছিয়া ক্বাদরিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসায় দাঙ্গা, জঙ্গি ও বাল্যবিবাহ নিয়ন্ত্রণে করণীয় শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, আমাদের দেশে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার করা হয় না। প্রযুক্তির অপব্যবহারের ফলে সামাজিক অবক্ষয় হচ্ছে। যেমন অল্প বয়সে মেয়েরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করার ফলে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। এতে নিজের শিক্ষা জীবনের ক্ষতি সাধন করছেন। আবার বাসা-বাড়িতে শিশুরা মোবাইল ফোন চোখের সামনে নিয়ে গেমস্ দেখার কারণে চোখের ক্ষতি বয়ে আনছেন। এতে অল্প বয়সে তাদের চোখে চশমা ব্যবহার করতে হচ্ছে। তাই মোবাইল ফোনের সঠিক ব্যবহার করতে হবে। ১৮ বছরের আগে কোন ছেলেমেয়ে মোবাইল ব্যবহার করতে পারবে না। এ ব্যাপারে অভিভাবকদের সতর্ক থাকার জন্য তিনি আহ্বান জানান। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, হবিগঞ্জ একটি ঐতিহ্যবাহী জেলা। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় এ জেলার বীর সন্তানরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। বর্তমানে এ জেলায় বিভিন্ন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। তবে এ জেলার একটি দুর্নাম রয়েছে। সেটি হলো দাঙ্গা। দাঙ্গামুক্ত হলে এ জেলা দেশের ৩/৪টি জেলার মধ্যে ১টি জেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। তিনি আরো বলেন, দাঙ্গা কখনও কারো জীবনে শান্তি বয়ে আনবে না। দাঙ্গা অশান্তি বয়ে আনে। তাই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা যদি দাঙ্গায় জড়িত হতে চান, তাহলে তাদের বুঝিয়ে এ পথ থেকে ফিরিয়ে আনতে হবে। কোন শিক্ষার্থীর মা-বাবা তাদের বাল্যবিবাহ দিতে চাইলে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে তাদের বুঝাতে হবে। তারা না বুঝলে বাল্যবিবাহ ঠেকাতে প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করতে হবে।
শেখ শামছুল হক কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ইউপি চেয়ারম্যান শেখ শামছুল হকের সভাপতিত্বে এবং সুজাতপুর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক ধ্রুবেশ চক্রবর্তীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এস এম ফজলুল হক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বানিয়াচং সার্কেল) শেখ মো. সেলিম, বানিয়াচং থানার ওসি রঞ্জন সামন্ত, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মহিবুর রহমান মাহি, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন খান, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ সভাপতি ইদ্রিছ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক এ এইচ এম জাহির, বিশিষ্ট মুরুব্বী এমএ রব, নূরুল হুদা, আব্দুল হেকিম ফুল মিয়া, ফারুক হোসাইন বেলু, আব্দুল আউয়াল মেম্বার, জাহাঙ্গীর আলম আনছারী, আলাউদ্দিন মেম্বার, ছাত্রলীগ নেতা এমজি কাদিরসহ এলাকার মুরুব্বীয়ান। পরে পুলিশ সুপার উত্তর সাঙ্গর গাউছিয়া ক্বাদরিয়া সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসায় দাঙ্গা, জঙ্গি ও বাল্যবিবাহ নিয়ন্ত্রণে করণীয় শীর্ষক রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন। মাদ্রাসার অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আব্দুল হেকিম ফুল মিয়া।