স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জ শহরের দক্ষিণ শ্যামলীর এক ব্যাংক কর্মকর্তার বাসার ক্যাসিনো ও মিনি পতিতালয় থেকে জনতার সহযোগিতায় দুই যুবতী ও কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ। এ সময় ওই চক্রের গডফাদার জুয়েল মিয়া ও তার ২য় স্ত্রী সাদিয়া আক্তার পালিয়ে যায়। গতকাল শনিবার দুপুর ২ টায় তাদের আটক করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শহরের উমেদনগর এলাকার জুয়েল মিয়া তার ২য় স্ত্রী সাদিয়া আক্তারকে নিয়ে ওই এলাকার অবঃ ব্যাংক কর্মকর্তা আবুল কালামের বাসা ভাড়া নিয়ে মিনি পতিতালয় ও ক্যাসিনো গড়ে তুলে। আর এই আস্তানায় বিভিন্ন স্থান থেকে বিপদগামী যুবক-যুবতীরা এসে মাদক সেবন জুয়াসহ অসামাজিক কার্যকালাপ চালায়। ইতিপূর্বে সাদিয়া জুয়েলসহ যুবক-যুবতীরা পুলিশের হাতে আটক হয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে সাজাসহ তাদের জেল-জরিমানা হয়। কিন্তু আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে বেরিয়ে এসে বাসা বদল করে পুনরায় এ ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে। অভিযোগ রয়েছে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ব্ল্যাকমেইল করে এ ব্যবসায় নামতে বাধ্য করে জুয়েল ও সাদিয়া। এমনকি কৌশলে প্রেম করে অনেককে তাদের কাছে বিক্রি করেও দেয় প্রেমিকরা। ওই বাসায় ক্রমাগত যুবক-যুবতীরা আসা যাওয়া করলে স্থানীয়দের নজরে আসে। তাদেরকে ধরার জন্য ওৎ পেতে থাকে এলাকাবাসী। গতকাল ওই সময় এক যুবতিকে খদ্দেরের সাথে অনৈতিক কাজে লিপ্ত করে সাদিয়া। এতে সে রাজি না হলে তার উপর চলে নির্যাতন। তার চিৎকারে লোকজন ওই বাড়িটি ঘেরাও করে দরজা ভেঙ্গে স্থানীয় কাউন্সিলর শেখ নুর হোসেনের সহযোগিতায় ৪ জনকে আটক করা হয়। তখন সাদিয়া-জুয়েলসহ ২ খদ্দের পালিয়ে যায়। এসআই আব্দুল হক ঘটনাস্থলে এসে আটককৃতদেরকে থানায় নিয়ে যান। তখন তাদের বাসা তল্লাশী করে যৌন উপকরণ উদ্ধার করা করে পুলিশ।
পুলিশকে শহরের শায়েস্তানগর মোকাম বাড়ি এলাকার এক যুবতী জানায়, রুমান নামে এক যুবকের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। সম্প্রতি তাকে বেড়ানোর কথা বলে রুমান শহরে নিয়ে আসে। ঘুরা-ফেরার এক পর্যায়ে ওই আস্তানার মালিক জুয়েল ও সাদিয়ার কাছে তাকে বিক্রি করে দেয়। সাদিয়া তাকে বিদেশে পাচারের ভয় দেখিয়ে খদ্দেরদের মনোরঞ্জন করতে বাধ্য করে। এমন আরও অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। আটকরা হল উমেদনগরের ধর্মপিতা জুয়েলের কন্যা সোনিয়া আক্তার ওরফে কেয়া (২০), শায়েস্তানগরের সুমা আক্তার (২২), নাদিম (১৮), নাহিদ (১৯)। তাদেরকে অসামাজিক কার্যকালাপের অভিযোগে আটক করে থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এ ব্যাপারে সদর থানার ওসি মোঃ মাসুক আলী জানান, স্থানীয় লোকজন তাদের আটক করে থানায় সোপর্দ করেছে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে, পরে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।