দেশে পর্যটন শিল্পের বিকাশের জন্য ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে কনসালটেন্ট নিয়োগ দেয়া হয়েছে ॥ খুব শিগগির সিলেট থেকে মানচেস্টার সরাসরি বিমান চলাচল করবে

এসএস সুরুজ আলী ॥ বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী এমপি বলেছেন- খুব শিগগিরই সিলেট থেকে ইংল্যান্ডের মানচেস্টারে সরাসরি বিমান চলাচল করবে। বাংলাদেশ থেকে সরাসরি নিউইয়র্ক বিমান চলাচলের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এর ফলে আমাদের লোকজন বিমানের উন্নত সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। প্রতিমন্ত্রী বলেন- দেশের পর্যটন শিল্পের বিকাশে মেগা প্রকল্প নেয়া হচ্ছে। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে পর্যটন মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব পরিবহন থাকবে। যাতে বাইর থেকে মানুষ এসে এখানে সহজে যাতায়াত করতে পারেন। হবিগঞ্জের পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে থাকার জন্য সুব্যবস্থা করা হবে। যাতে পর্যটকরা নিরাপদে থাকতে পারেন। শনিবার দুপুরে বানিয়াচং উপজেলার বিথঙ্গল আখড়া পরিদর্শন শেষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, চিকিৎসা বিজ্ঞান যত উন্নত হোক মানুষকে মৃত্যুর দিকে ধাবিত হতেই হবে। সকল ধর্মের লোকদের মৃত্যুবরণ করতে হবে। এই যে মানুষের পরম বিশ^াস এই বিথঙ্গল আখড়ায় আসলে প্যারালাইসিস রোগী ভাল হয়। সুতরাং এখানে মানুষ আসবে এবং তারা এসে পূণ্যভূমিতে তাদের প্রার্থনা, তাদের মনের আকাক্সক্ষা, তাদের আকুতি জানাবে। বিথঙ্গল আখড়াটিকে যাতে বিশে^র কাছে তুলে ধরতে পারি সেজন্য আমরা কাজ করবো। তিনি বলেন, বিথঙ্গল আখড়াসহ সারা দেশের প্রত্যেকটি পর্যটন স্পটকে উন্নত করা হবে। এ জন্য আমি নিজে প্রতিটি পর্যটন কেন্দ্র পরিদর্শন করে তার উন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করব। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে আমরা কনসালটেন্ট নিয়োগ করেছি। সেখানে দেশী বিদেশী বিশেষজ্ঞরা থাকছেন। তারা সারা বাংলাদেশ ঘুরে দেখবেন। দেখার পর তারা একটি মহাপরিকল্পনা দেবেন। এই পরিকল্পনা অনুযায়ী আমাদের পর্যটন শিল্পের যত উন্নয়ন কর্মকান্ড আমরা শুরু করবো। কিন্তু তার আগে সেটি কিভাবে দ্রুত বাস্তবায়ন করা যায় সেজন্য সিলেটে এসেছি, সেখানে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সকলের পরামর্শ নিচ্ছি। আমরা লন্ডনে দেখি দৃষ্টিনন্দন বাস নিয়ে পর্যটকরা ঘুরাফেরা করেন। ঢাকা থেকে সিলেটে এসে যাতে বিদেশী পর্যটকরা ঘুরাফেরা করতে পারেন সেজন্য ২টি বাস দেয়ার ব্যবস্থা করবো। বিথঙ্গল আখড়ায় কি কি কাজ করা যায় তা দেখতে এসেছি। পরবর্তীতে বিথঙ্গল আখড়ার আধুনিকায়নে সরকারের সহযোগিতা থাকবে। এখানে যাতে বিদেশী পর্যটকরা থাকতে পারে তার জন্য উন্নতমানের আবাসন ও খাবারের ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, বানিয়াচঙ্গের সৌন্দর্য্য আলাদা। বানিয়াচঙ্গের হাওর বাওরের সৌন্দর্য্য দেখার জন্য বিদেশী পর্যটকরা আসবেন। বানিয়াচঙ্গে অনেক কিছু দেখার রয়েছে। তা এক মাস দেখলেও শেষ হবে না।
সুকুমার মোহন্ত এর সভাপতিত্বে ও প্রমথ সরকার ও অ্যাডভোকেট মনমোহন দেবনাথের যৌথ পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন হবিগঞ্জ-২ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট আব্দুল মজিদ খান, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক, পর্যটন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান রামচন্দ্র দাশ, স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক নুরুল ইসলাম, হবিগঞ্জ রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী বেদময়ানন্দ মহারাজ, হবিগঞ্জ শ্রীশ্রী নরসিংহ জিউর আখড়া ইসকন মন্দির পরিচালনা কমিটির অধ্যক্ষ উদয় গৌর ব্রহ্মচারী, আখড়া সংস্কার কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ শংকর পাল, বানিয়াচং উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ আবুল কাশেম চৌধুরী, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদের সভাপতি জগদীশ চন্দ্র মোদক, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট স্বরাজ বিশ^াস, জেলা আওয়ামী লীগ নেতা অনুপ কুমার দেব মনা, বানিয়াচং উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক তজম্মুল হক চৌধুরী, বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রঞ্জন কুমার সামান্ত, ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান, মোহন্ত সাধন প্রমুখ। গীতাপাঠ করেন সুভাষ দাস মোহন্ত গোসাই। পরে তিনি বানিয়াচং উপজেলার ঐতিহ্যবাহী সাগরদীঘিসহ বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্র পরিদর্শন করেন।