বানিয়াচংয়ে প্রধান শিক্ষকের সংবাদ সম্মেলন

বানিয়াচং প্রতিনিধি ॥ বানিয়াচংয়ে এক প্রধান শিক্ষককে দায়িত্ব পালন করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। বাধার কারণে বেতন-ভাতা না পেয়ে ৩১মাস যাবৎ শিক্ষক পরিবারটি মানবেতর জীবন যাপন করছে। শিক্ষক ও তার পরিবারটিকে এরকম মানবেতর জীবন-যাপনে বাধ্য করছেন গ্রাম্য রাজনীতির কুশীলবগণ ও বানিয়াচং উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা কাওসার শোকরানা।
শনিবার বানিয়াচং উপজেলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত অভিযোগে এসব বিষয় তুলে ধরেন মুরাদপুর এসইএসডিপি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাকির হোসেন মহসিন। উপজেলা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম খোকনের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানা যায়, ২০১৪ সাল থেকে এসইএসডিপি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন জাকির হোসেন মহসিন। ২০১৭ সালে তৎকালীন পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের সাথে আর্থিক বিষয়াদি নিয়ে মনোমালিন্য তৈরি হওয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ তোলা হয়। এরপর থেকে প্রধান শিক্ষককে স্কুলে যেতে বাধা প্রধান করা হচ্ছে। আর্থিক অনিয়মের তদন্তে প্রধান শিক্ষক নির্দোষ প্রমাণ হওয়ার পরও প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বভারও বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি দীর্ঘ ৩১মাস যাবৎ বেতন-ভাতা বন্ধ রাখা হয়েছে।
প্রধান শিক্ষককে দায়িত্বভার বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যে সিলেট শিক্ষাবোর্ড থেকে আদেশ দেওয়া হয়েছে। এমন কি স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সমন্বয়ে বানিয়াচং উপজেলার শিক্ষা কমিটির মিটিংয়ে প্রধান শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেন মহসিনকে দায়িত্বভার বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও চলতি বৎসরে বিদ্যালয়ের নির্বাচিত নতুন পরিচালনা কমিটি রেজুলেশন করে দায়িত্বভার দেওয়ার জন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সেই মোতাবেক প্রধান শিক্ষক দায়িত্বভার নিতে গেলে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সদস্য জাফর আহমদ চৌধুরী, নাজিম উদ্দিন মেম্বার, আবু সালেক চৌধুরী সহ কতিপয় লোক বাধা প্রদান করেন। তাদের বাধা ও হুমকির প্রেক্ষিতে প্রধান শিক্ষক বানিয়াচং থানায় একটি জিডি করেন।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মোঃ জাকির হোসেন মহসিন জানান, আইন মোতাবেক আমি বৈধ প্রধান শিক্ষক। অথচ কতিপয় লোকের অন্যায় আব্দার না মানার কারণে তারা গায়ের জোরে আমাকে দায়িত্ব পালন করতে বাধা প্রদান করছে। শিক্ষাবোর্ডের আদেশ স্বত্বেও স্থানীয় শিক্ষা কর্মকর্তা অন্যায়ভাবে আমার বেতন-ভাতা বন্ধ রেখেছেন। আমি প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, হবিগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, উপজেলা চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে চাকুরী পুনর্বহালের জোর দাবি জানাচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বানিয়াচং উপজেলা প্রেসক্লাবের উপদেষ্টা কাজী মাওঃ আতাউর রহমান, সহ সভাপতি এম এ তাহের, সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান কাজল, কালের কন্ঠের উপজেলা প্রতিনিধি মোশাহেদ মিয়া, আমাদের সময় প্রতিনিধি মোতাব্বির হোসেন, যায় যায় দিন প্রতিনিধি শেখ জোবায়ের জসিম, বানিয়াচং বার্তার সম্পাদক ফরহাদ হোসেন সুমন, বাংলাদেশ কন্ঠ হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ইয়াসিন আরাফাত মিল্টন, একাত্তরের কথা প্রতিনিধি আনোয়ার হোসেন, বাংলা টিভির প্রতিনিধি আল আমিন খান, সাংবাদিক আশিকুল ইসলাম প্রমূখ। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ফখরুদ্দিন আহমদ, কাজী মাওঃ আব্দুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট শোয়াইব আহমদ ও বিদ্যুতমানব আয়নাল হক।