সুমন আহমেদ বিজয়/নিতেশ দেব, লাখাই থেকে ॥ লাখাইয়ে গভীর রাতে এক নারীকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে গণধর্ষণ করার ঘটনায় অবশেষে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনার প্রায় পক্ষকাল পর বুধবার হবিগঞ্জের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ধর্ষিতা নারী। মামলায় মুড়াকরি গ্রামের জালাল মিয়ার ছেলে মাসুম মিয়া (১৯), আব্দুল বাছিরের ছেলে আব্দুল আজিজ (২৫), ইউনুছ আলীর ছেলে জুনাইদ মিয়া (২৩), মৃত নুরধন মিয়ার ছেলে সুর রহমান (৩৮) ও সুর রহমানের স্ত্রী ময়মনাকে আসামী করা হয়েছে।
মামলার বিবরণ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ২১ আগস্ট রাত প্রায় দেড়টার দিকে লাখাই উপজেলার মোড়াকরি ইউনিয়নের মুড়াকরি গ্রামের সাফিজুল ইসলামের স্ত্রী প্রস্রাব করার জন্য ঘর থেকে বের হলে পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা আসামীরা তার মুখে গামছা বেধে পাজাকোলা করে আসামীদের পূর্ব ভিটার বসতঘরের উত্তরের রুমে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে খুনের ভয় দেখিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে আসামী মাসুম, আজিজ, জুনাইদ ও সুর রহমান। পরদিন কতিপয় মুরুব্বী বিষয়টি মিমাংসার নামে আসামীদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে বিষয়টি রফাদফার চেষ্টা করে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক বিচারে সন্তুষ্ট না হলে অবশেষে বুধবার ধর্ষিতা আদালতের আশ্রয় নেয়। বিচারক জিয়া উদ্দিন মাহমুদ অভিযোগ আমলে নিয়ে লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে এফআইআর গণ্যে মামলা রুজু করার আদেশ দেন।
অপরদিকে, একই গ্রামে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ১০ বছরের এক শিশু। এ ঘটনায় মোড়াকরি গ্রামের হেকিন আলীর ছেলে ধর্ষক জাবেদ মিয়াকে (২২) আটক করেছে পুলিশ।
ওই শিশুর বোন পারভিন আক্তার জানায়, তাদের পিতা আসমত আলী মৌলভীবাজারে রিকশা চালায় ও তাদের মা সৌদি আরবে অবস্থান করার কারণে তাদেরকে বাড়িতে একা থাকতে হয়। গত মঙ্গলবার রাতে জাবেদ আলী তাদের ঘরে প্রবেশ করে ওই শিশুকে ধর্ষণ করে চলে যায়। এক পর্যায়ে তার চিৎকারে পাশের রুমে থাকা পারভিন এগিয়ে এসে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখলে তাদের শোর চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসে। পরে স্থানীয় মাতব্বররা বিষয়টি রফাদফার চেষ্টা চালান। গতকাল বুধবার সকালে ওই শিশুর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে লাখাই পুলিশকে অবগত করে দুপুরের দিকে তাকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পুলিশ দুপুরে মোড়াকরির একটি হাওর থেকে জাবেদকে আটক করে। শিশুটি স্থানীয় প্রাইমারী স্কুলের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী।
এ ব্যাপারে লাখাই থানার ওসি এমরান হোসেন জানান, খবর পাবার সাথে সাথে ধর্ষককে আটক করেছি। এখনো কেউ মামলা দিতে আসেনি। তবে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি।
ধর্ষকদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে তাদের রক্ষা করার চেষ্টা ॥ অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে আরেক নারীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা ॥ আরেক লম্পটের ধর্ষণের শিকার চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্রী হবিগঞ্জ হাসপাতালে মুমুর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com