নবীগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ সিলেটে বিয়ের প্রলোভনে রাতের পর রাত শারীরিক ও পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়েছে নবীগঞ্জের এক কিশোরী। টানা ধর্ষণের ফলে ৩ মাসের অন্তঃস্বত্ত্বা কিশোরী গুরুতর আহত অবস্থায় হবিগঞ্জ আড়াইশ’ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে কিশোরীর পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে।
সূত্র জানায়, নবীগঞ্জ উপজেলার আউশকান্দি ইউনিয়নের মোহাম্মদপুর গ্রামের মৃত উরুস আলীর ছেলে হুমায়ুন মিয়া (২২) সিলেট উপশহর এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করছেন। প্রায় ৮মাস পূর্বে হুমায়ুন মিয়া নিজ গ্রামের পার্শবর্তী মিসকিনপুর এলাকার ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরীকে তার বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজের জন্য উপশহরের বাসায় নিয়ে যায় ।
এক পর্যায়ে মেয়েটির সাথে প্রেমের অভিনয় করে দৈহিক সম্পর্ক গড়ে তুলে হুমায়ুন মিয়া। মাসের পর মাস দৈহিক সম্পর্কের ফলে মেয়েটি অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে মেয়েটি বিয়ের জন্য একাধিকবার হুমায়ুনকে চাপ দেয়। এ পরিস্থিতিতে হুমায়ুন গর্ভ নষ্ট করার পরামর্শ দেয়। কিন্তু মেয়েটি গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে অনিহা প্রকাশ করলে তার উপর শারীরিক নির্যাতন শুরু হয়। গত ১৭ আগস্ট বিকেলে মেয়েটি আবারো বিয়ের জন্য চাপ দিলে গৃহকর্তা হুমায়ুন তার শয়নকক্ষে মেয়েটিকে বেঁধে মারপিট করে। মারপিটের এক পর্যায়ে মেয়েটি অজ্ঞান হয়ে পড়লে ১৮আগস্ট ভোর সকালে মেয়েটিকে নবীগঞ্জ উপজেলার বিবিয়ানা বিদ্যুৎ পাওয়ার প্ল্যান্টের রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায় হুমায়ুন মিয়া।
স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। ১৯ আগস্ট সকালে মেয়েটিকে নবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে রেফার করেন। মেয়েটি বর্তমানে হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মেয়েটির মা ছায়ারুন বেগম বলেন, আমাদের দারিদ্রতার সুযোগে হুমায়ুন বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমার মেয়েকে ধর্ষণ করেছে। এতে মেয়েটি অন্তঃস্বত্ত্বা হয়ে পড়েছে। হুমায়ুন আমার মেয়ের গর্ভ নষ্ট করার জন্য তার উপর অমানবিক নির্যাতন করায় সে গুরুতর আহত অবস্থায় এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমার মেয়েকে যাতে হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে না পারি সেজন্য হুমায়ুনের লোকজন হাসপাতালে তৎপর রয়েছে।
এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইকবাল হোসেন জানান- বিষয়টি শুনেছি, এখনো মামলা দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ পেলে আমরা প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।