হাইওয়ে রোডে চলতে থাকা একটা গাড়ি হঠাৎ করে যান্ত্রিক গোলযোগে বন্ধ হয়ে গেলো। গাড়ির মালিক অল্প বয়স্কা এক সুন্দরী মেয়ে। একে তো সন্ধ্যা, তার উপর গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি। একা একটা মেয়েকে গাড়ির পাশে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে এক যুবক এগিয়ে আসলো তার দিকে।
“আমার নাম জিসান। আপনার গাড়িতে কি কোনো প্রবলেম হয়েছে?”
“হ্যাঁ, হঠাৎ করে ইঞ্জিনটা বন্ধ হয়ে গেল। এখন আর স্টার্ট নিচ্ছেনা!”
“আপনি দুশ্চিন্তা করবেন না, গাড়িতে গিয়ে বসুন আমি সাহায্য করছি।”
ছেলেটা গাড়ির বনেট খুলে ভিতরটা দেখলো এবং সমস্যা ধরতে পেরে সেটার সমাধান করে দিলো।
মেয়েটা খুশি হয়ে ছেলেটাকে কিছু টাকা দিতে চাইলো। কিন্তু ছেলেটা টাকা নিতে অস্বীকার করলো।
“এটা আমার প্রফেশন নয়। তাই এই টাকা আমি নিতে পারবো না। কোনো একদিন আমাকেও একজন এভাবে উপকার করেছিলো এবং বলেছিলো সুযোগ আসলে যেন আমিও কারো উপকার করি এবং এই চেইন অফ হ্যাপিনেসটা ধরে রাখি। তেমনি, আপনিও যদি কোনোদিন কারো বিপদ দেখে এমনভাবে সাহায্য করেন এবং চেইন অফ হ্যাপিনেসটা ধরে রাখেন, তাহলেই আমি সব থেকে বেশী খুশী হবো এবং আমার এই উপকারের আসল উদ্দেশ্য সফল হবে।”
মেয়েটা খুশি মনে বিদায় নিলো।
কিছুদিন পরের ঘটনা।
মেয়েটা একটা কফি শপের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলো। হঠাৎ লক্ষ্য করলো, প্রায় সাত মাসের এক অন্ত:স্বত্ত্বা মেয়ে কফি শপে কাজ করছে। মেয়েটা তাকে ডেকে কিছু স্ন্যাক্স অর্ডার করলো। অন্ত:স্বত্ত্বা মেয়েটা এত হাসি-খুশি ভাবে কাজ করছে যে মুখ দেখে বোঝার উপায় নেই সে অন্ত:স্বত্ত্বা! যাই হোক, স্ন্যাক্সগুলো নিয়ে গাড়িতে ওঠার আগে মেয়েটা টেবিলের উপর একটা খাম রেখে গেলো। কফি শপের মেয়েটা ঘুরে এসে বিল নেওয়ার সময় দেখলো বিলের পাশে একটা খাম রাখা আছে। মেয়েটা খামটা খুলল। খামের ভিতরে দশ হাজার টাকা আর একটা ছোট চিরকুট রাখা। মেয়েটা পড়তে শুরু করলো। “তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে তুমি অন্ত:স্বত্ত্বা। এই অবস্থাতেও তুমি কাজ করছো! বুঝতে পারছি যে, এই সময়ে তোমার টাকার খুব প্রয়োজন। আমি কে, সেটা জানার দরকার নেই। যদি পারো, তাহলে অন্য কারো বিপদে তাকে সাহায্য করে এই চেইন অফ হ্যাপিনেসটা ধরে রেখো।”
কাজ শেষে মেয়েটা খামসহ ঘরে ফিরলো। ঘরে ঢুকে দেখলো তার স্বামী চিন্তিত মুখে বসে আছে। মেয়েটা পেছন থেকে স্বামীকে জড়িয়ে ধরে বলল, “তোমাকে আর চিন্তা করতে হবে না। আমার ডেলিভারির টাকা জোগার হয়ে গেছে। আই লাভ ইউ মাই হাসব্যান্ড জিসান!”
সেই যে জিসান! চিনেছেন তো?
যদিও গল্পটা বেশ পুরনো, তবু এই সাধারণ একটা গল্পকে চাইলেই আমরা অসাধারণ করে তুলতে পারি। চেইন অফ হ্যাপিনেস শুরু হোক এখান থেকেই। শেয়ার করুন এবং ডিসিশন নিন কারো উপকার করে তার থেকে কোনোরকম প্রতিদানের আশা না করে বরং তাকে বলুন এই চেইন অফ হ্যাপিনেসটা ছড়িয়ে দিতে। বিশ্বাস করুন, যে ভালোবাসা আপনি ছড়িয়ে দিচ্ছেন ঘুরে ফিরে একদিন তা আপনার কাছেই আবার ফিরে আসবে। অবশ্যই আসবে।
সবাই খুব ভালো থাকুন, আর অন্যকেও ভালো রাখুন।
Chain of Happiness ধরে রাখি।
Life is so Beautiful
-সংগৃহিত
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com