গত ২৮ নভেম্বর ২০১৯ইং বুধবার দৈনিক স্বদেশবার্তা, দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ, দৈনিক সমাচার, প্রতিদিনের বাণী ও হবিগঞ্জ এক্সপ্রেস পত্রিকায় ‘গাজীউর রহমানের প্রতারণার শিকার দুই লন্ডন প্রবাসী এখন দেশে’ এই শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, উদ্দেশ্য প্রণোদিত ও মানহানিকর।
সংবাদে আবুল কালাম ও সামছুল ইসলামের বরাত দিয়ে উল্লেখ করা হয়েছে, আমি কালাম ও সামছুলের টাকা পয়সা নিয়ে তাদেরকে বাদ দিয়ে নিজেদের নামে ফিলিং স্টেশনের জমি ক্রয় করি। যা মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। উল্লেখ্য যে, সিএনজি ফিলিং স্টেশন স্থাপনের আড়াই বছর আগে আমি ও আমার ভাইয়ের নামে ২০০৭ সালের ১১ জুন একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করার উদ্দেশ্যে শায়েস্তাগঞ্জের কদমতলী এলাকায় ৫২ শতাংশ জমি ক্রয় করি। তখনকার সময় তাদের সাথে আমার কোন পার্টনারশীপ ছিল না, এমনকি সিএনজি ফিলিং স্টেশন করার পরিকল্পনাও ছিল না। জমি ক্রয়ের বছরখানেক পর আমি এবং আমার ভাই মিলে দেশে সিএনজি ফিলিং স্টেশন করার পরিকল্পনা করি। বিষয়টি জেনে কালাম ও সামছুল আমাকে অনুরোধ করে পার্টনার হিসাবে তাদেরকে সঙ্গে রাখার জন্য। এরপর আমরা কালাম ও সামছুলকে ব্যবসায় যুক্ত করি। পরবর্তীতে আমার জমিতে জি-এস (গাজীউর এবং সাইদুর) ব্রাদার্স নামে ২০০৯ সালের অক্টোবরে ফিলিং স্টেশন চালু করি। এ প্রতিষ্ঠানে কালাম ও সামছুল নিস্ক্রিয় অংশীদার। তারা তেমন ইনভেস্ট না করায় আমি আমার হবিগঞ্জের বাসা, দোকান, অন্যান্য জায়গা এবং সিনজি স্টেশনের জায়গা মর্টগেজ (বন্ধক) দিয়ে পূবালী ব্যাংক নয়াপল্টন শাখা থেকে দেড় কোটি টাকা ঋণ নিয়ে ব্যবসা চালু করি। ব্যবসার সুচনালগ্ন থেকে অংশীদারদের লাভ ক্ষতির হিসাব ঢাকাস্থ অডিট ফার্মের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। অডিট ফার্ম পুঙ্খানোপুঙ্ক ভাবে আমাদের শেয়ারের লভ্যাংশ নির্ধারণ করে দিলে আমরা আনুপাতিক হারে বন্টন করে নেই। পাশাপাশি ব্যাংকের ঋণও পরিশোধ করতে থাকি। একটি কুচক্রীমহলের ইন্ধনে কালাম ও সামছুল ব্যবসায় বিরোধ সৃষ্টি করলে একটি সালিশী বৈঠকে তা নিরসনের উদ্যোগ নেয়া হয়। তারা সালিশী বৈঠকের কোন শর্ত পুরণ করেনি। বরং আমাকে জড়িয়ে দুদক ও লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে মিথ্যা তথ্য দিয়ে অভিযোগ করে। এতে আমি এখনও ভূক্তভোগী। কালাম গং আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। তারা বলেছেন আমি নাকি ব্যবসার টাকা দিয়ে বিলাসবহুল গাড়ী কিনে ব্যবহার করি এবং ব্যক্তিগত কর্মচারিদের বেতন দেই। অথচ আমি ২০-২৫ বছর যাবত দেশে বিদেশে বিলাসবহুল গাড়ী ব্যবহার করে আসছি।
সংবাদে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, কালাম ও সামছুল আমার কাছে ৪ কোটি টাকা পান। যা আদৌ সত্য নয়। এর কোন হিসাব বা প্রমাণ তারা কোথাও দেখাতে পারেননি। সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে, এমপি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির সাহেবের কাছে আমি ৫০ লাখ টাকা এবং বাকি টাকার চেক দিয়েছি। তারা বৈঠকের কোন শর্ত পূরণ না করায় এবং আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ নিষ্পত্তি না করার কারণে আমি এমপি মহোদয়কে অবহিত করে পরবর্তীতে চেকগুলো ‘স্টপ পেমেন্ট’ করি। পরবর্তীতে এই চেকগুলো ব্যবহার করে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমুলক পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়। এবং আমাকে নানানভাবে হয়রানী করা হচ্ছে।
সংবাদে আমাকে বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে জড়ানোর পায়তারায় আমি হতভম্ব। অথচ আমি দেশে বিদেশে কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত নই। সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে, কালাম ও সামছুল দেশে এসে ৫ দিন যাবত বাড়ি যেতে পারছেন না। বিষয়টি সত্যিই হাস্যকর। তারা কেন বাড়িতে যেতে পারছেন না, তা তাদের ব্যক্তিগত বিষয়। তাদের বাড়িঘর আছে কিনা আমি আদৌ জানি না! এই ৫ দিনে নাকি তাদের ২০ লাখ টাকা ক্ষতি হয়েছে! অথচ তাদের মিথ্যা ও হয়রানিমুলক অভিযোগের কারণে আমি দুই মাস যাবত দেশে অবস্থান করতেছি। লন্ডনের দুটি ব্যস্ততম জায়গায় আমার দুটি রেস্টুরেন্টে সময় না দেওয়ার ফলে আমি বরং কোটি টাকার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। সাংবাদিকদের কাছে তারা হুমকি ও নিজেদের নিরাপত্তাহীনতার কথা বলেছেন। অথচ এই বিষয় নিয়ে তাদের পক্ষ থেকে দুটি পৃথক নাম্বার দিয়ে পরপর দুইবার আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়েছে। এ হুমকির বিষয়ে আমি হবিগঞ্জ সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেছি। তাদের দাবি, তারা কোন কমপ্রোমাইজ তথা সালিস বৈঠক মানেন না। অথচ তারাই সাংবাদিকদের কাছে স্বীকার করেছেন, এমপি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির সাহেবের মধ্যস্থতায় সালিশে রাজি হয়েছিলেন। তারা আরও উল্লেখ করেছেন, আইনী লড়াই করবেন। অপরদিকে আমি আইনী প্রক্রিয়াতেই আছি।
২০১৩ সালে একটি কুচক্রীমহল আমার সিএনজি স্টেশনের ক্ষতিসাধনের জন্য গ্যাসের মিটারটি ভেঙ্গে দেয়। এরপর তারা আমার বিরুদ্ধে মিটার টেম্পারিংয়ের অভিযোগ আনে। যা সালিশ বৈঠকে মিথ্যা প্রমাণিত হয়। যার জন্য বৈঠকের সভাপতির নির্দেশে তারা আমার কাছে ক্ষমা চায়। যেহেতু তারা সাংবাদিকদের বলেছেন, শালিসে নয়, আইনী লড়াই চলবে, সেহেতু বৈঠকের সভাপতি এমপি অ্যাডভোকেট মোঃ আবু জাহির সাহেবের কাছে গচ্ছিত আমার টাকা ও ৬৯ লাখ টাকার চেক (৪টি) ফেরত দেয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। হবিগঞ্জ ও ঢাকার একটি কুচক্রীমহল আমার প্রতিষ্ঠান ও আমার পরিবারের সুনাম ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। কালাম ও সামছুল আমার পারিবারিক বেকগ্রাউন্ড নিয়ে মন্তব্য করেছে। হবিগঞ্জের মানুষ আমার বেকগ্রাউন্ড সম্পর্কে যথেষ্ট অবগত আছেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় কালাম ও সামছুলের বংশ পরিচয় হবিগঞ্জবাসীর অনেকেরই অজানা। তাদের বংশপরিচয় সম্পর্কে জানা খুবই জরুরি।
কালাম ও সামছুল সাংবাদিকদের মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমার বিরুদ্ধে যে মিথ্যা ও বানোয়াট এবং মানহানিকর সংবাদ পরিবেশন করিয়েছে আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পাশাপাশি আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের বিষয়ে আমার কোন মতামত না নেয়ায় আমি মর্মাহত হয়েছি।
গাজীউর রহমান (গাজী)
চেয়ারম্যান
জি-এস ব্রাদার্স সিএনজি এন্ড ফিলিং স্টেশন
শায়েস্তাগঞ্জ, হবিগঞ্জ