আমাদের সমাজে এমন কিছু পুরুষ আছে যারা মেয়েদের বিশেষ করেন সুন্দরী নারীদের মনভুলানো মিষ্টি কথা বলে তাদের ফাঁদে পেলে সর্বনাশ করে। তাই নারীদের প্রতি একটি ফেসবুক স্ট্যাটাস।
১. ভাবী, আপনি দুই বাচ্চার মা! আপনাকে দেখলে কেউ বিশ্বাসই করবে না। দেখে মনে হয়, মাত্র ইন্টারপাশ করছেন! সিরিয়াসলি!
২. আপু, একটা কথা বলবো অনেকদিন থেকে ভাবছি! কিন্তু হ্যাজিটেশন করে বলা হচ্ছে না। আপনি এমনিতেই সুন্দর। কিন্তু নাকের পাশের তিলটা আপনাকে একদম পরী বানিয়ে দিছে। এত্ত সুন্দর। জাস্ট অসাধারণ লাগে!
৩. মন খারাপ কেন ভাবী? ভাইয়া ঝগড়া টগড়া করলো নাকি?… আপনার মতো এরকম একটা মানুষের সাথেও ঝগড়া করা যায়??? বিশ্বাসই হচ্ছে না!
৪. একটা কথা বলি, কিছু মনে করবেন না তো? আপনার কণ্ঠটা এত্ত সুন্দর! কোনো প্রিয় গান বারবার শুনলেও যেমন বিরক্তি লাগে না, আপনার কথাবার্তাও স্টাইলও এরকম। টানা ২৪ ঘন্টা শুনলেও বোরিং লাগবে না!
৫. আপনি যা ইচ্ছা মনে করতে পারেন, আজ থেকে আপনাকে আর আন্টি ডাকবো না, বলে দিচ্ছি। হুঁ! দেখলে মনে হয় আবার বিয়ে দেওয়া যাবে, আর আপনাকে ডাকবো আন্টি? নাহ, আর নাহ!
৬. একটা কথা বলবো? নীল শাড়ীতে আপনাকে দারুণ মানাইছে!….. না না, তেল দিচ্ছি না, সত্যি বলছি! সত্যি অনেকটা কোয়েল মল্লিকের মতো লাগে আপনাকে!
৭. জন্মদিনে কি কি করলেন আপনারা? …….কি? ভাইয়ার অফিস?…..কি যে বলেন!…. আমি এরকম একটা বউ পেলে জন্মদিন উপলক্ষে এক সপ্তাহের ছুটি নিতাম!…. হাইসেন না, সিরিয়াসলি!
বিঃ দ্রঃ কিছু কিছু মানুষ আছে, নিজের অফিসের কলিগ, পাশের বাসার ভাবী কিংবা বন্ধুর বউদের সাথে এভাবেই কথা বলে। আপাতদৃষ্টিতে এগুলো “জাস্ট প্রশংসাবাক্য”।
এর গভীরে যে কত বড় লাম্পট্য, আর অসৎ কামনা লুকিয়ে আছে, খেয়াল না করলে বুঝার উপায় নেই। মুলত এখান থেকেই শুরু হতে নষ্টামির পথে অনন্ত যাত্রা! আর যারা এগুলো করে, এরা কিন্তু ফাঁদে ফেলবার জন্যেই করে! এদের স্বভাবই হলো ফ্লার্ট করে নিজের বশে আনা! খুব স্মার্ট সুদর্শন পুরুষ দেখলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে মহিলারাও এরকম ফ্লার্ট করে। তবে সে সংখ্যাটা অনেক কম!
যে মহিলা জীবনে কোনোদিন স্বামীর বিকল্প স্বপ্নেও কল্পনাও করেননি। মাঝে মাঝে ঝগড়া হয়, কিন্তু স্বামীকে অনেক ভালোবাসেন।
পরপুরুষের মুখে নিজের এত্ত সুন্দর প্রশংসা শুনে, ‘আমি হলে পায়ের কাছে পড়ে থাকতাম’ কথাটা শুনে সেই মহিলাও ভাবেন, এই স্বামী আমাকে বঞ্চিত করছে, নিশ্চয়ই আমি আরও ভালো কিছু ডিজার্ভ করি!
যে মহিলা একটা সুখের সংসারে আছেন, বাচ্চা নিয়ে স্বামী স্ত্রী ব্যস্ততার মাঝে কোনোকিছুর অভাবই বোধ করেন না, সে মহিলাও যখন বাইরের কারো কাছে নিজের কপোলের তিলের এত্ত প্রশংসা শুনেন তখন তার মনে হতে পারে, ‘ওর সাথে এত্তদিন সংসার করলাম, ও তো একটা দিনের জন্যেও এভাবে আমার সৌন্দর্যের প্রশংসা করলো না!’
নিজের বয়সের ব্যাপারে বাইরের পুরুষের প্রশংসা শুনে মহিলা, বারবার আয়নার সামনে নিজের চেহারা দেখেন। ভাবতে থাকেন, হ্যাঁ, আমি তো সুন্দরই। আর ওই পুরুষটাই আমার এ সৌন্দর্যের মূল্যায়ন করলো!
এভাবেই শুরু হয়, পৃথিবীর নিকৃষ্টতম সম্পর্ক।
তথাকথিত একটা ‘ইনোসেন্ট প্রশংসা’ই ধ্বংস করে দিতে পারে একটা মানুষকে, একটা পরিবারকে!
এটা ভাবার কোনো কারণ নাই যে, যারা ‘ভাবী’টার প্রশংসা করছে, এরা ‘ফ্রি মাইন্ড’ এ ইনোসেন্ট মন নিয়ে করছে! নাহ, এরা অবশ্যই অবশ্যই কুমতলব নিয়েই প্রশংসা করে!
যদি জীবনে সুখী হতে চান, কারো হালকা প্রশংসায় গলে যাবেন না। বরং এদের এড়িয়ে চলুন। প্রশংসা শুনতে সবারই ভাল্লাগে। এভয়েড না করলে, ধীরে ধীরে এদের ফাঁদে একদিন পড়বেনই!