এক বহুমাত্রিক অদম্য মেধাবী মুখ পারমিনা আরশাদ শৈলী। সে বৃন্দাবন সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী। শিক্ষা জীবনের প্রতিটি পর্বে রয়েছে তার সফলতার সাক্ষর। ২০১১ সালে সে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিকেজিসি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হয়। প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় সে জিপিএ-৫ সহ ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিলাভ করে। জেএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েও সে জিপিএ-৫ সহ ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পায়। একই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে গোল্ডেন জিপিএ অর্থাৎ সকল বিষয়ে এ প্লাস মার্কস্ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়। অথচ ক্লাসে তার রোল সবসময় ৪ থেকে ৭ এর মধ্যে থাকতো। আমাদের মাঝে এ মানসিকতা কাজ করে, ক্লাসে যে ফাস্ট বয় কিংবা ফাস্ট গার্ল থাকে সে-ই এমন কৃতিত্ব করতে পারে। শৈলীর মতে পড়ার টেবিলে বসে বুঝেশুনে মনযোগ দিয়ে লেখাপড়া করলে ক্লাসে রোল নম্বর যতই হোক চুড়ান্ত পরীক্ষায় সাফল্য আসবেই।
হবিগঞ্জ শহরের শায়েস্তানগর আবাসিক এলাকার বাসিন্দা শৈলী ইতোমধ্যে সঙ্গীত, ছবি আঁকা, মাটির কাজে জাতীয় পর্যায়ে অংশ নিয়ে নিজে সাফল্য অর্জনের পাশাপাশি হবিগঞ্জবাসীর জন্য সুনাম বয়ে এনেছে। ২০১৮ সালে মাটির কাজে গ বিভাগে অংশ নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে সে ১ম স্থান লাভ করে। ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত হরলিক্স কিশোর আলো স্বপ্নের গল্প প্রতিযোগিতায় দেশসেরা ১১ জনের একজন শৈলী। বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত ‘বঙ্গবন্ধুকে জানো, বাংলাদেশকে জানো’ রচনা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে সে প্রতিভার স্বাক্ষর রাখে।
পারমিনা আরশাদ শৈলী বাবা-মা’র একমাত্র কন্যা। তারা এক ভাই এক বোন। ভাই তার বড়। সে বর্তমানে মালয়েশিয়া ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজীতে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং-এ লেখাপড়া করছে। আর শৈলী লেখাপড়া করছে বৃন্দাবন সরকারি কলেজে। তার স্বপ্ন বড় হয়ে একজন ভাল মানের চিত্রশিল্পী ও স্বনামধন্য ইঞ্জিনিয়ার হওয়া। কারণ ইঞ্জিনিয়ার হলে ক্রিয়েটিভ কিছু করা যায়। দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ পবিরারের পক্ষ থেকে তার এ স্বপ্ন সফল ও সার্থক হোক এ শুভ কামনাই রইল।
শৈলী জানায়, প্রতিদিন নিয়মিত ৪/৫ ঘন্টা লেখাপড়া করলে বিশেষ করে যখন ইচ্ছে হয় তখনই পড়তে বসতে হবে। নিয়মিত বুঝে লেখাপড়া করলে এবং পিতামাতা ও শিক্ষকের উপদেশ মেনে চললে সাফল্য অনির্বায্য।
শৈলীর প্রিয় ব্যক্তিত্ব দাদাভাই (মায়ের শিক্ষক) অধ্যাপক মতীন্দ্র সরকার। তার প্রিয় খাবার বিরিয়ানী, প্রিয় ফুল কাঁঠ গোলাপ ও শিউলী, প্রিয় ফল আম। তার অবসর সময় কাটে পোষা বিড়ালকে নিয়ে খেলা করে, ছবি আঁকা ও বই পড়ার মাধ্যমে। তার পিতা মোঃ আরশাদুজ্জামান গ্রামীণ ব্যাংকের এরিয়া অফিসার আর মা আছমা খানম হ্যাপি একজন আদর্শ গৃহিণী।
বিকেজিসি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুধাংশু কুমার কর্মকার জানান, মেধাবী ছাত্রী পারমিনা আরশাদ শৈলী ছিল তাঁর বিদ্যালয়ের একজন গর্বিত ছাত্রী।