বিজয়া দশমী আজ

হবিগঞ্জের মুখ রিপোর্ট ॥ শারদীয় দুর্গোৎসবের মহানবমী ছিল গতকাল সোমবার। আজ বিজয়া দশমী। মন্ডপে মন্ডপে দেবী বিদায়ের সুর বেজে উঠেছে। আজ মঙ্গলবার প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ‘শারদীয় দুর্গোৎসব’। গতকাল সকাল থেকে মন্ডপে মন্ডপে ভিড় করেছেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। মহানবমীর এ দিন ষোড়শ উপচারে দেবীর বন্দনা ও মহাস্নান-যজ্ঞ, সন্ধ্যায় আরতি বন্দনায় আনন্দময়ী’র অর্চনা করেছেন ভক্তরা। ফুল, ফল, জলসহ নানা উপচারে দুর্গা দেবীর চরণে অঞ্জলি প্রদান করে তারা প্রার্থনা করেছেন নিজের সুখ শান্তি আর দেশের কল্যাণের জন্য। পূজা শেষে যথারীতি পুষ্পাঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ করা হয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে হবিগঞ্জ শহরের পূজামন্ডপগুলোতে ভক্ত ও দর্শনার্থীদের ঢল নামে। মন্ডপগুলো ঢাক- ঢোল, কাঁসার ঘণ্টা, শাঁখের ধ্বনি ও ধূপের ধোঁয়া, আর ভক্তিমন্ত্রে মুখর হয়ে ওঠে। শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণী, বৃদ্ধসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ এতে অংশ নেন। পুণ্যার্থীরা ভক্তিভরে দেবী দুর্গাকে প্রণাম করেন। সুস্বাস্থ্য আর দীর্ঘায়ু কামনা এবং মনোবাসনা পূরণ হওয়ার জন্য আরাধনা করেন।
আজ সকালে মন্ডপে মন্ডপে দেবী বিদায়ের সুর বেজে উঠবে। বিজয়া দশমীর আনুষ্ঠানিকতা শেষে প্রতিমা বিসর্জনের মাধ্যমে দেবী দুর্গাকে ভক্তরা বিদায় জানাবেন। দেবী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের পাঁচ দিনব্যাপী সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে। দেবী বিদায়ের আগে মন্ডপে মন্ডপে ভক্তরা (মা- বোনেরা) সিঁদুর খেলায় অংশ নেবেন।
দেবী বিসর্জনের মধ্য দিয়ে মা দুর্গা তার সন্তান কার্তিক, গণেশ, লক্ষ্মী, সরস্বতীসহ কৈলাশে স্বামীর গৃহে ফিরে যাবেন। এর আগে মহালয়ায় তিনি মর্ত্যে পিতৃগৃহে আগমন করেন। আসুরিক শক্তির বিনাশ আর শান্তি কল্যাণ ও সমৃদ্ধি লাভের জন্য হিন্দু সম্প্রদায় যুগ যুগ ধরে দেবী দুর্গার আরাধনা করে আসছেন। হিন্দু ধর্ম মতে শান্তি, সংহতি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠার জন্য এবং দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনে বিশ্বব্যাপী মঙ্গল বার্তা নিয়ে মা দুর্গা এ সময়ে লোকালয়ে আসেন।
হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী, এবার দেবী দুর্গা আসেন ঘোটকে (ঘোড়ায়) চড়ে। যাবেনও ঘোটকে চড়ে। দেবীর ঘোটকে আগমন মানে সবকিছু ছত্রভঙ্গ হয়ে যাওয়া। এর মানে দেবী আমাদের এক সতর্কবার্তা দিয়েই আসেন। সুখ দুঃখকে পাশাপাশি রেখে আমরা পথ চলব।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ হবিগঞ্জ জেলা শাখার সিনিয়র সহ-সভাপতি অনুপ কুমার দেব মনা বলেন, দেবীর আগমন এবং প্রস্থান ঘোটকে (ঘোড়ায়) হলেও দুর্ভাবনা বা দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই। বরং সমাজের অন্যায় অবিচার কুসংস্কার ইত্যাদি দূর করে অতিদ্রুত শান্তির বার্তা প্রদান করবেন এটাই হচ্ছে ঘোটকে আসা-যাওয়ার ইঙ্গিত।