স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাহুবলে একদিনে মোবাইল কোর্টের অভিযানে ৬ বালু ব্যবসায়ীকে কারাদন্ড, ৩ জনকে অর্থদন্ড এবং মোটরযান অধ্যাদেশের আওতায় ১০টি যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার দিনের বিভিন্ন সময় মোবাইল কোর্টগুলো পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা হক। এদিকে, এক ছাত্রলীগ নেতা ও অপর আওয়ামী লীগ নেতার পুত্রকে মহাসড়কের ফুটপাতে বালুর স্তুপ রাখার দায়ে আটকের প্রতিবাদে স্থানীয় জনতা সোমবার সন্ধ্যায় পুটিজুরী বাজারে ঘন্টাখানেক মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাঠিচার্জ করে অবরোধ তোলে দেয়।
৬ জনের কারাদন্ড ঃ বাহুবলে অবৈধ বালু উত্তোলন ও সংরক্ষণের দায়ে ৬ জনকে দুই মাস করে কারাদন্ড প্রদান করেছে ভ্রাম্যমান আদালত। সোমবার বিকেলে বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর ১৫ ধারায় এ দন্ডাদেশ প্রদান করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা হক। দন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন- উপজেলার ভাদেশ্বর ইউনিয়নের সুন্দ্রাটিকি গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে আকলিছ মিয়া, একই গ্রামের আব্দুস শহিদের ছেলে মানিক মিয়া, আব্দুল কদ্দুছের ছেলে তাজুল ইসলাম ও ফুল মিয়ার ছেলে মোশাহিদ মিয়া এবং পুটিজুরী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি রমজান আলী ও পুটিজুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুল্লাহর পুত্র হাবিবুর রহমান জসিম।
মহাসড়ক অবরোধ ও পুলিশের লাঠিচার্জ ঃ বাহুবলে দুই বালু ব্যবসায়ীকে আটকের প্রতিবাদে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। সোমবার বিকাল সাড়ে ৫টায় পুটিজুরী বাজারে মহাসড়কের মাঝখানে কয়েকটি যান এলোপাতাড়ি দাঁড় করে এ অবরোধ সৃষ্টি করা হয়। এতে রাস্তার উভয় পার্শ্বে দূরপাল্লার শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। যাত্রীদের মাঝে নেমে আসে দুর্ভোগ। খবর পেয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বাহুবল মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাঠিচার্জ করে অবরোধকারীদের রাস্তা থেকে সড়িয়ে অবরোধ তোলে দেয়। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
স্থানীয় লোকজন জানান, বাহুবল উপজেলার পুটিজুরী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি রমজান আলী ও পুটিজুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ আব্দুল্লাহ মিয়ার পুত্র জসিম মিয়া দীর্ঘদিন ধরে বালু ব্যবসা করে আসছেন। তারা মহাসড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে ফুটপাতে বালু রেখে বিক্রি করে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে। সোমবার বিকালে মহাসড়কের ফুটপাতে বালু রাখার দায়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা হকের নেতৃত্বে মোবাইল কোর্ট বালু ব্যবসায়ী রমজান আলী ও জসিম মিয়াকে আটক করে। পরবর্তীতে তাদের বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ এর আওতায় ২ মাস করে কারাদন্ড প্রদান করা হয়।
অর্ধলক্ষ টাকা জরিমানা ঃ বাহুবল উপজেলার মীরেরপাড়া গ্রামের আব্দুল খালেকের পুত্র ইছহাক উল্লা (৪৫), আবুল হোসেনের পুত্র আতিক উল্লা (৫০) ও মেহের আলীর পুত্র উস্তর আলীকে (৩২) বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০-এর আওতায় ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা হক সোমবার মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাদের বিরুদ্ধে এ দন্ডাদেশ প্রদান করেন।
১০ যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা ঃ বাহুবলে মটরযান অধ্যাদেশের আওতায় মোবাইল কোর্ট পরিচালানা করে ১০টি যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। সোমবার দুপুরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে উপজেলার বাগানবাড়ি এলাকায় মোবাইল কোর্ট বসিয়ে এ অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা হক। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাহুবল মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ কামরুজ্জামান। অভিযান চলকালে মটরযান অধ্যাদেশের বিধান লঙ্ঘনের দায়ে কয়েকটি যানবাহনকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা জরিমানা কারা হয়।
দাঙ্গা সৃষ্টির দায়ে ২ ব্যক্তিকে অর্থদন্ড ঃ সোমবার দুপুরে উপজেলা পরিষদের সামনে দাঙ্গা-হাঙ্গামায় লিপ্ত হওয়ার দায়ে দন্ডবিধি ১৫৩ ধারায় গোহারুয়া গ্রামের তোফায়েল মিয়া (৩৫) ও জয়পুর গ্রামের কদর আলী (৪৫) নামে দু’ব্যক্তিকে ১০০ টাকা করে জরিমানা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আয়েশা হক।
বাহুবল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আয়েশা হক জানান, অবৈধ বালু উত্তোলন, সংরক্ষণের দায়ে ৬ জনকে দুই মাস করে কারাদন্ড ও আরো ৩ জনকে অর্ধলক্ষ টাকা অর্থদন্ড করা হয়েছে। এছাড়া মহাসড়কে আইন লঙ্ঘনের দায়ে ১০টি যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে।
তিনজনকে অর্ধলক্ষ টাকা অর্থদন্ড ॥ বালু ব্যবসায়ীকে আটকের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ, পুলিশের লাঠিচার্জ ॥ দাঙ্গা-হাঙ্গামায় লিপ্ত হওয়ার দুই ব্যক্তিকে জরিমানা ॥ ১০ যানবাহনের বিরুদ্ধে মামলা
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com