পৌর এলাকার ঘরে ঘরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের কাজ চলছে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ নবীগঞ্জ পৌরসভার ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের ৩৭ কোটি ৮৪ লাখ ১০ হাজার ৫১২ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। নবীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আলহাজ¦ ছাবির আহমদ চৌধুরী ৩০ জুন সকাল ১১টায় চতুর্থ পৌর পরিষদের ৪র্থ বাজেট ঘোষণা করেন। পৌরসভার কনফারেন্স রুমে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে ঘোষিত বাজেটে তিনি বলেন, পৌরসভার জনগণের সেবার মান উন্নয়নে এবং বর্তমান সমাজ ও নতুন প্রজন্মের একটি সুন্দর ভবিষ্যত বিনির্মাণের লক্ষ্যকে সামনে রেখে এই বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। বাজেটে নতুন কোন কর আরোপ করা হয়নি। জনগণের প্রত্যাশা পূরণে এই বাজেটে রাস্তা-ঘাট, ব্রীজ-কালভার্ট, ড্রেন ইত্যাদি নির্মাণ/মেরামত, হাট-বাজারের উন্নয়ন, স্ট্রীট লাইট সম্প্রসারণ, পৌর ভবন নির্মাণ, স্যানিটেশনের শত ভাগ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন, শহরের সৌন্দর্য্য-বর্ধন সহ অন্যান্য উন্নয়ন কার্যক্রম অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে। রাজস্ব খাতের অর্থ দ্বারা অবকাঠামোগত উন্নয়নসহ পৌর এলাকার মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের বৃত্তি প্রদান, পৌর বিদ্যালয় পরিচালনা, জরুরী রক্ষনাবেক্ষণ, মশক নিধন কার্যক্রম, বৃক্ষ রোপন কার্যক্রম, আর্থিক সাহায্য-অনুদান, জেন্ডার এ্যাকশন প্ল্যান, দারিদ্র হ্রাসকরণ পরিকল্পনা, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা, কর মেলা, বই মেলা, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, পয়ঃনিস্কাশন ব্যবস্থা, যানবাহন ও যন্ত্রপাতি ক্রয়, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ক্রয়, হজ¦ যাত্রীদের জন্য প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম, সার্বজনীন জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, জলাতংক প্রতিষেধক ভ্যাকসিন ক্রয়, খেলাধুলা ও সংস্কৃতি ইত্যাদি নানামুখী সামাজিক কার্যক্রম অন্তর্ভূক্ত রয়েছে। তিনি বলেন, নবীগঞ্জ পৌরসভা ধীরে ধীরে একটি বড় শহরে রূপান্তরিত হচ্ছে। একদিকে যেমন জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে অন্যদিকে যানবাহনের সংখ্যা অধিকতর বৃদ্ধি পাওয়ায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, শহরের অভ্যন্তরে সরকারী জায়গা নেই বললেই চলে, ফলে পৌরসভাকে সুন্দরভাবে বিন্যাসের জন্য যেটুকু স্থাপনা তৈরির প্রয়োজন সেটুকু করা যাচ্ছে না। পৌরসভার বিদ্যমান যানজট নিরসনের ক্ষেত্রে পৌরপরিষদ নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। পৌর পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন এবং স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সমন্বয়ে একাধিকবার মত বিনিময় সভায় মিলিত হয়। এ ক্ষেত্রে যানজট নিরসনে ইতিবাচক আশ্বাস পাওয়া যায়। এখনও যানজট নিরসনকল্পে পৌরসভার উদ্যোগ অব্যাহত আছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ সর্বস্তরের জনগণের সহযোগিতা পেলে নবীগঞ্জ পৌরসভাকে একটি যানজটমুক্ত ও সুন্দর শহর হিসেবে গড়ে তুলতে পারব ইন্শাআল্লাহ্। তাছাড়া পৌরসভাকে ঢেলে সাজানোর নিমিত্তে ইতোমধ্যে এডিপি খাতে প্রায় ১.৫০ কোটি টাকা, গুরুত্বপূর্ণ নগর অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প খাতে প্রায়- ৪.২৫ কোটি টাকা এবং রাজস্ব খাতে প্রায় ৫০ লক্ষ টাকার বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে যার কার্যক্রম চলমান। তিনি আরও বলেন, এই শহর আপনার, আমার, সকলের। আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুন্দর পরিবেশ সমৃদ্ধ শহর গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য। আসুন আমরা সকলে মিলে সবুজ বনায়নের মাধ্যমে এমন একটি সুন্দর শহর গড়ি, যাতে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য হয় নিরাপদ ও সুন্দর আবাস স্থল। তিনি সাংবাদিকবৃন্দের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন। বাজেট কনফারেন্সের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন শায়খ মাওলানা আব্দুল রকিব হক্কানী ও পবিত্র গীতাপাঠ করেন পৌরসভার সহকারী কর আদায়কারী পৃথ্বিশ চক্রবর্ত্তী। এসময় উপস্থিত ছিলেন পৌরসভার প্যানেল মেয়র-১ এটিএম সালাম, প্যানেল মেয়র-২ বাবুল চন্দ্র দাশ, প্যানেল মেয়র-৩ ফারজানা আক্তার পারুল, সংরক্ষিত কাউন্সিলর মোছা. রোকেয়া বেগম ও সৈয়দা নাসিমা বেগম, ৯নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও হবিগঞ্জ সময় সম্পাদক মো. আলাউদ্দিন, ৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. কবির মিয়া, ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. সুন্দর আলী, ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জাকির হোসেন, পৌর সভার সচিব মো. আজম হোসেন, হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা শেখ মো. জালাল উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা তপন কুমার চন্দ, দৈনিক বিবিয়ানা সম্পাদক মো. ফখরুল ইসলাম চৌধুরী, দৈনিক হবিগঞ্জ সময় সম্পাদক সেলিম তালুকদার, সমাজসেবক আহমদ ঠাকুর রানা, হবিগঞ্জ ওয়েল ফেয়ার এসসিয়েশনের চেয়ারম্যান মো. আবদুল মোহিত রাসেলসহ সুধীবৃন্দ ও পৌরসভার কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
বাজেটে মেয়র ছাবির আহমেদ চৌধুরী পৌরসভার নাগরিকদের কল্যাণে বেশ কিছু উন্নয়নমূলক কার্যক্রম গ্রহণের চিত্র তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে- বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ প্রকল্প। নবীগঞ্জ পৌরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি পৌরসভায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করা। ইতোমধ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরাধীন থানা সদর ও গ্রোথ সেন্টারে অবস্থিত পৌরসভাসমূহে পাইপ লাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ ও এনভায়রনমেন্টল স্যানিটেশন (২য় পর্ব) প্রকল্পের আওতায় নবীগঞ্জ পৌর এলাকার ঘরে ঘরে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের নিমিত্তে ১৫ কিঃ মিঃ পাইপ লাইন স্থাপন করা হয়েছে।