এসএম সুরুজ আলী ॥ সারাদেশের ন্যায় হবিগঞ্জেও লাগামহীনভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। কোরবানী ঈদের পর হবিগঞ্জে পেঁয়াজের দাম দু’দফা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে ভোক্তারা। গতকাল হবিগঞ্জ শহরের চৌধুরী বাজার কাঁচামাল হাটার পাইকারী ও খুচরা পেঁয়াজ ব্যবসায়ীদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে ঈদের পর দু’দফা পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ১৫দিন পূর্বে প্রতি কেজি পেঁয়াজের দাম পাইকারী মূল্য ছিল ৩৫ টাকা। ১৫ দিনের ব্যবধানে দু’দফা পেঁয়াজের মূল্য বেড়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫৬ টাকা বিক্রি হয়েছে। সে সময় প্রতি কেজি পেঁয়াজের খুচরা মূল্য ছিল ৪১/৪৩ টাকা। বর্তমানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ খুচরা মূল্য নেয়া হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকা। পেঁয়াজের মূল্য বাড়ার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা আমদানি কমে যাওয়াকে উল্লেখ করছেন।
খুচরা ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, পাইকারী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পেঁয়াজ নিজের গোদামে মজুদ করে রাখার কারণে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এই পেঁয়াজের পাইকারী বাজারে দাম বাড়ার কারণে খুচরা ব্যবসায়ীরা অতিরিক্ত দামেই বিক্রি করছেন। এতে সাধারণ ক্রেতারা পেঁয়াজ ক্রয় করতে তাদের বাড়তি টাকা গুণতে হচ্ছে। এতে নি¤œ আয়ের ক্রেতারা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। বানিয়াচং উপজেলার আতুকুড়া গ্রামের ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর মিয়া জানান, যে পেঁয়াজ পাইকারী ৩৫/৩৬ টাকা কেজি ক্রয় করেছি। বর্তমানে সেই পেঁয়াজ ৫৫/৫৬ টাকায় ক্রয় করতে হচ্ছে। বাড়তি দামে ক্রয় করার কারণে আমাদেরও ক্রেতাদের কাছ থেকে বাড়তি দাম নিতে হচ্ছে। বাজার থেকে দোকানে নিয়ে আসার খরচ হিসেব করে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৬০/৬২ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। চৌধুরী বাজার কাঁচামাল হাটার পাইকারী ও খুচরা পেঁয়াজের ব্যবসায়ী রকি মিয়া জানান, পেঁয়াজ আমদানি কম হচ্ছে। যে কারণে বাজারে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। পেঁয়াজ ছাড়া অন্যান্য মসলার দাম স্থিতিশীল রয়েছে। তিনি বলেন, প্রতি কেজি পেঁয়াজ বর্তমান বাজারে খুচরা বিক্রি করছেন ৬০ টাকা দরে। আর পাইকারী ৫৫/৫৬ টাকা বিক্রি করতে হচ্ছে। অথচ ১৫ দিন আগে সেই পেঁয়াজ পাইকারী বিক্রি করেছি ৩৫/৩৬ টাকা দরে। আর খুচরা ৪০/৪১ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে। কোন কোন ক্ষেত্রে ৪২/৪৩ টাকা পেঁয়াজের প্রতি কেজির মূল্য রেখেছি। পেঁয়াজের আমদানি হলে দাম অনেকটা কমে যাবে। তিনি বলেন, পেঁয়াজ, মরিচ ছাড়া অন্য কোন মসলার দাম বাড়েনি। প্রতি কেজি রসুন পাইকারী ১৩০ টাকা ও খুচরা ১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি মরিচ পাইকারী ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ ১৫/২০ দিন পূর্বে প্রতি কেজি মরিচের পাইকারী মূল্য ছিল ২১০ টাকা। প্রতি কেজি আদা ১৫০ টাকা, হলুদ ১১০ টাকা, ধনিয়া ১০৫/১১০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পেঁয়াজের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত বাজার মনিটরিং করার জন্য দাবি জানিয়েছেন ক্রেতারা।