চুনারুঘাট প্রতিনিধি ॥ হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার গোলগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও দুই ছাত্রীকে পিটিয়ে আহত করেছেন স্কুলের দপ্তরী ও তার চাচা আওয়ামী লীগ নেতা। এ ঘটনায় পুলিশ আব্দুল হামিদ ওরফে ফুল মিয়াকে আটক করেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা আড়াইটায় উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স থেকে তাকে আটক করা হয়। ফুল মিয়া গোলগাঁও এলাকার বাসিন্দা এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। আহতরা হলেন- প্রধান শিক্ষিকা শাহিনা আক্তার (৪০), গোলগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া আক্তার (১০) এবং ৪র্থ শ্রেণির ছাত্রী শারফিন আক্তার (৯)। তারা চুনারুঘাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। সাদিয়া আক্তার ওই এলাকার আব্দুল হান্নান রমিজের মেয়ে এবং শারফিন আক্তার শাহজাহান মিয়ার মেয়ে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় নিয়মিত স্কুলে না আসার অভিযোগে এক ছাত্রীকে মারপিট করেন বিদ্যালয়ের দপ্তরী জুয়েল মিয়া। এ নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে তার কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে ঘটনাস্থলে আসেন দাতা সদস্য, স্কুল কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুল হামিদ ফুল মিয়া। এ নিয়ে ফুল মিয়ার সাথে প্রধান শিক্ষিকার কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে দপ্তরী জুয়েল ও ফুল মিয়া ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান শিক্ষিকা এবং উল্লেখিত দুই ছাত্রীকে মারপিট করেন। এতে তারা তিনজন আহত হন। চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে গিয়ে আহত তিনজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। বেলা আড়াইটায় উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স বিষয়টি সমাধান করতে যান ফুল মিয়া। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ নিয়ে বৈঠকও বসে। কিন্তু বৈঠকে বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় এবং বিক্ষুব্ধ শিক্ষকদের চাপের মুখে ফুল মিয়াকে আটক করে নিয়ে যায় চুনারুঘাট থানা পুলিশ।
প্রধান শিক্ষিকা ও ছাত্রীদের মারপিটের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চুনারুঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোঃ নাজমুল হক জানান, হামলাকারী ও ফুল মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
চুনারুঘাট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মাসুদ রানা বলেন, ফুল মিয়া একজন খারাপ প্রকৃতির লোক বলে এলাকাবাসী জানান। শিক্ষকরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পরামর্শে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে চুনারুঘাট থানায় প্রধান শিক্ষক একটি মামলা দায়ের করছেন।
আটককৃত ফুল মিয়া বলেন, ‘আমার ভাতিজি ওই স্কুলের ৫ম শ্রেণীর ছাত্রী সাদিয়া ১২ দিন যাবৎ অসুস্থতার কারণে স্কুলে যেতে পারেনি। সুস্থ হলে সে গতকাল স্কুলে যায়। কিন্তু ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা কোন কিছু না বুঝে তাকে বেধড়ক প্রহার করে। আমি খবর পেয়ে স্কুলে গিয়ে এর কারণ জিজ্ঞেস করলে তারা আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষিকার হুকুমে অন্যান্য শিক্ষক আমার উপর চড়াও হয়। তাদের সাথে আমার হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এর বেশী কিছু নয়।’
আটক ফুল মিয়া বললেন, প্রধান শিক্ষিকার হুকুমে অন্যান্য শিক্ষকরা আমার উপর চড়াও হয়। তাদের সাথে আমার হাতাহাতি ঘটে
© স্বত্ব দৈনিক হবিগঞ্জের মুখ ২০১৯
ওয়েবসাইটটি তৈরী করেছে ThemesBazar.Com