মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ আগামী ১৫ জুলাই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় কমিটির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। ওইফদন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ করা হবে। এতে হবিগঞ্জের ৫ নেতা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। হবিগঞ্জ থেকে যারা ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন তারা হলেন জেলা ছাত্রদল সভাপতি ইমদাদুল হক ইমরান, সিনিয়র সহ-সভাপতি জিল্লুর রহমান জিল্লু, সাধারণ সম্পাদক রুবেল আহমেদ চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ রাজিব আহমেদ রিংগন।
জেলা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহ রাজীব আহমেদ রিংগন জানান, নির্বাচন কমিশনের তফসিল অনুযায়ী ২৪ জুন ভোটার তালিকা প্রকাশ, ২৫ জুন ভোটার তালিকার বিষয়ে আপত্তি গ্রহণ, ২৬ জুন চুড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ, ২৭ ও ২৮ জুন প্রার্থীদের জন্য মনোনয়নপত্র বিতরণ, ২৯ ও ৩০ জুন প্রার্থীদের নিকট থেকে মনোনয়নপত্র গ্রহণ, ১, ২ ও ৩ জুলাই প্রার্থীতা যাচাই বাছাই, ৪ জুলাই প্রার্থীদের খসড়া তালিকা প্রকাশ, ৫ জুলাই প্রার্থীদের সম্পর্কে আপত্তি গ্রহণ, ৬ জুলাই প্রার্থীদের সম্পর্কে আপত্তি নিষ্পত্তি ও প্রার্থীতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ, ৭ জুলাই প্রার্থীদের চুড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। প্রার্থীরা ১৩ জুলাই রাত ১২টা পর্যন্ত প্রচার প্রচারণা চালাতে পারবেন।
এদিকে কাউন্সিল উপলক্ষে বৃহস্পতিবার ছাত্রদলের মনোনয়ন ফরম বিতরণ কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা থাকলেও বিক্ষুব্ধদের আন্দোলনের মুখে শনিবার পর্যন্ত স্থগিত করা হয়। বৃহস্পতিবার রাতে আন্দোলনকারীদের সাথে বিএনপির বৈঠকের পর এই ঘোষণা আসে।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার প্রার্থীদের মাঝে মনোনয়ন ফরম বিক্রির কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নয়াপল্টনে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধদের দিনব্যাপী অবস্থানের কারণে ওইদিন সে কার্যক্রম শুরু হয়নি। পরে সংকট নিরসনে বৃহস্পতিবার রাতে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আন্দোলনকারীদের সাথে বৈঠক করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে স্থায়ী কমিটির চার নেতা। বাকিরা হলেন- মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর রায় ও নজরুল ইসলাম খান। বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ নেতাদের কাছে তাদের দাবি-দাওয়ার বিষয়টি জানতে চান বিএনপির নীতি-নির্ধারকরা। তখন আন্দোলনকারীরা কাউন্সিলের তফসিল বাতিল এবং বয়সসীমা তুলে দিয়ে নবীন-প্রবীণ সমন্বয়ে আগামী বছরের জানুয়ারি পর্যন্ত ছয় মাসের স্বল্পকালীন এবং পরবর্তীতে এক বছরের জন্য ছাত্রদলের ধারাবাহিক কমিটি গঠনের সঙ্গে দলের সিন্ডিকেট ভাঙার দাবি জানান। তবে আলোচনার এক পর্যায়ে ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধ এক নেতা বলেন, শেষ পর্যন্ত যদি তাদের (বয়স্ক) দিয়ে সংগঠনের নতুন কমিটি গঠন করা সম্ভব না হয় তাহলে ২০০০ সালের এসএসসি নয়, একেবারে নিয়মিত (অনার্স ও মাস্টার্স) ছাত্রদের দিয়ে কমিটি গঠন করতে হবে। কারণ ২০০০ সালে যারা এসএসসি পাশ করেছে, তাদের কেউ এখন আর নিয়মিত ছাত্র নয়। তাদের বয়স এখন ৩৫। সিনিয়র নেতারা তখন ছাত্রদলের বিক্ষুব্ধদের জানান, তাদের দাবিগুলো দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কাছে উপস্থাপন করবেন। এর জন্য তাদের দুইদিন সময় দিতে হবে। জবাবে ছাত্রদল নেতারা বলেন, তারা সময় দিতে রাজী আছেন। তবে এই সময়ের মধ্যে সংগঠনের কাউন্সিলের সমস্ত কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে। বিএনপি নেতারা জানান, কাউন্সিলের ব্যাপারে তারা কোনো সিদ্ধান্ত দিতে পারবেন না। এটা একমাত্র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জানেন। এ পরিস্থিতিতে ছাত্রদল নেতারা তাদের জানিয়ে দেন ফরম বিতরণ কার্যক্রম শুরু হলে তারাও কর্মসূচি অব্যাহত রাখবেন। আর উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তার দায়-দায়িত্ব সিন্ডিকেটকেই নিতে হবে।
ছাত্রদলের দুই শীর্ষ পদে লড়তে চান যারা ঃ সভাপতি পদে আগ্রহীদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি আল মেহেদী তালুকদারের নাম শোনা যাচ্ছে। এ ছাড়া প্রার্থী হতে পারেন কেন্দ্রীয় সহ-তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মামুন খান, স্কুলবিষয়ক সম্পাদক আরাফাত বিল্লাহ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যুগ্ম সম্পাদক হাফিজুর রহমান, কাজী রওনক উল ইসলাম শ্রাবণ। অন্যদিকে সাধারণ সম্পাদক পদে সরকারি বদরুন্নেসা কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাদিয়া পাঠান পাপন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতা শাহনেওয়াজ, শ্যামল, সাগর সর্দার ও এরশাদ খানের নাম জোরালোভাবে আলোচিত হচ্ছে।