আমাদের মাতৃভূমি প্রিয় বাংলাদেশের সূর্য সন্তানদের দ্বারা পরিকল্পিত ‘ক্যাম্পাসিকা’ একটা বিশাল প্রকল্প। বিশাল বলছি কারণ তার স্বপ্ন অনেক দূর এগিয়ে যাওয়ার। আমাদের এক ঝাক সৎ, নিষ্ঠাবান, সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ তরুণ তরুণীদের কর্ম প্রচেষ্ঠার ফল এই ‘ক্যাম্পাসিকা’। উল্লেখ্য “ঈঅগচটঝওকঅ” মানে হচ্ছে “ঈঅগচটঝ অখঞঊজঘঅঞওঠঊ ঞঐজঙটএঐ গঙজঅখ চঊজঋঙজগঅঘঈঊ ওঘ টঘওছটঊ ঝঊজঠওঈঊ ডওঞঐ ওঘঘঙঠঅঞওঠঊ কঘঙডখঊউএঊ ঋঙজ অঈঐওঊঠঊগঊঘঞ”
এর মধ্যে যার কথা না বললেই নয়, ছোট ভাই সাগর রায়। তার জন্যই আমি ক্যাম্পাসিকার একজন হতে পেরেছি। আমি খুবই আনন্দিত এবং কৃতজ্ঞ তার প্রতি, আমাকে এতো ভালো সৃজনশীল একটা কাজের সাথে থাকার সুযোগ করে দেওয়ার জন্য। সামাজিক জীব হিসেবে সমাজের প্রতি আমাদের কিছু না কিছু দায়বদ্ধতা সব সময়ই থেকে যায়। আর এই দায়বদ্ধতাবোধ যাদের প্রখর, কেবল তারাই এধরণের কাজে উদ্বুদ্ধ হয়।
আমি খুবই আনন্দিত এবং বিষ্মিত ছিলাম, যখন সাগর রায়ের সাথে কথা বলি। তার চোখে, মুখে ‘ক্যাম্পাসিকা’ নিয়ে যে স্বপ্ন আর উৎফুল্লতা দেখেছি, তা আমাকে অভিভূত করেছে। নিঃস্বার্থভাবে সমাজের জন্য কাজ করার এক বিরল দৃষ্টান্ত এই ক্যাম্পাসিকা এবং সাগর রায়। সে টিউশনি করে ক্যাম্পাসিকার জন্য টাকা খরচ করছে। এই টিউশনির টাকা দিয়ে সে তার গ্রামে ও একটা লাইব্রেরী করে দিয়েছে, যেনো হত দরিদ্র ছেলে মেয়েরা বিনামূল্যে বই পেতে পারে, একটা স্কুল করে দিয়েছে। এসব দৃষ্টান্তই বুঝিয়ে দেয় তার মানসিকতা। সে খুবই সৎ এবং নিষ্ঠাবান, তা নিঃসন্দেহে বলতে পারি। পড়াশুনার পাশাপাশি এমন বিশাল প্রকল্পের বাস্তবায়ন মোটেও সহজ বিষয় নয়। তার অনেক শ্রম আর ত্যাগের বিনিময়ে এগিয়ে যাচ্ছে ক্যাম্পাসিকা। সকল মহৎ কাজেরই শুরুটা অনেক কষ্টের আর ত্যাগের হয়। সে কষ্ট এবং ত্যাগের ধৈর্য্য সবার থাকে না।
আমি ক্যাম্পাসের কোন ছাত্রী নই। আমি দেশের বাইরে থাকি, ইতালী প্রবাসী বিধায় প্রত্যক্ষভাবে ক্যাম্পাসিকার কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করার সৌভাগ্য আমার হচ্ছে না। তারপরও আমি এখান থেকেই যতটুকু সম্ভব সহযোগিতা করে যাচ্ছি। সমস্ত ইতালীতে প্রচার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। আমার সর্বাত্মক প্রচেষ্টা থাকবে ক্যাম্পাসিকার উন্নয়নে এবং সহযোগিতায়। বাইরে থেকে যেভাবে যতটুকু সহযোগিতা করা সম্ভব আমি করছি এবং করব ইন্শাআল্লাহ্।
‘ক্যাম্পাসিকা’ সারাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য একটা হেল্প লাইন হিসেবে কাজ করবে। তাদের শ্লোগানই হচ্ছে ‘একুশ শতকের তথ্য জানালা, ক্যাম্পাসিকার কার্যক্রম অনেক। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকটার কথা বলছি:
‘ক্যাম্পাসিকা’ ক্যাম্পাসভিত্তিক শিক্ষনীয় কার্যক্রম, শিক্ষা পাঠক্রম বহির্ভূত সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী ধ্যান ধারণা চর্চায় সহায়ক ভূমিকা পালন করবে। একুশ শতকের তথ্য, শিক্ষা ও যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে। একুশ শতকের শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ক্যাম্পাসিকা ভূমিকা রাখবে। প্রতিটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একটা করে ‘ক্যাম্পাসিকা অ্যাম্বাসি’ নামক ক্লাব তৈরী করবে। প্রতিটা ক্লাবে একজন করে অ্যাম্বাসেডর থাকবে অ্যাম্বাসির সকল কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করার জন্য। মিনি লাইব্রেরী থাকবে, যেখানে বিনামূল্যে বই পড়ার সুযোগ থাকবে। সাপ্তাহিক, মাসিক, ত্রৈমাসিক, অর্ধবার্ষিক, বার্ষিক প্রতিযোগিতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে।
প্রতিমাসে ক্যাম্পাসিকা নামক একটা ম্যাগাজিন প্রকাশ করা হবে। যাতে থাকবে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল লেখা, কবিতা, গল্প, উপন্যাস, ক্রিয়েটিভিটি, অ্যাডভেঞ্চার, সোশ্যাল বন্ডিং, ছবি আঁকা, মিউজিক আড্ডা, সায়েন্স ফিকশন, জীবনের গল্প, ক্যাম্পাসের সেরা চমকপ্রদ ঘটনা এবং সকল শিক্ষনীয় কার্যক্রমের প্রকাশ।
বিনামূল্যে রক্তদান কর্মসূচি অব্যাহত রাখবে। আরও অনেক কিছু…। এই বিশাল কার্যক্রম নিয়ে পৃথিবীজুড়ে আলোকিত ‘ক্যাম্পাসিকা’ এগিয়ে যাক বহুদূর। ‘ক্যাম্পাসিকা’ এবং ক্যাম্পাসিকার সকল ছাত্রছাত্রীদের জন্য রইলো অনেক অনেক শুভ কামনা।

সৈয়দা ইয়াসমিন
পালেরমো, ইতালী

সাত্তার মঞ্জিল, ইনাতাবাদ রোড

স্টাফ কোয়ার্টার, হবিগঞ্জ।