স্টাফ রিপোর্টার ॥ হবিগঞ্জে সরকারের খাদ্যশস্য সংগ্রহের আওতায় ধান চাল সংগ্রহে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের জন্য ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করলেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা। সোমবার সিলেটের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের নির্দেশে এ কমিটি গঠন করেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. আবদুস ছালাম। ৩ সদস্যের কমিটিতে আহ্বায়কের দায়িত্ব দেয়া হয় বাহুবল উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক নজীর আহমেদকে। কমিটির সদস্যরা হলেন- খাদ্য পরিদর্শক প্রতাব কুমার সাহা ও খাদ্য পরিদর্শক কালিপদ সাহা। এ কমিটিকে ৭ দিনের ভিতরে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা মো. আবদুস ছালাম জানান, সম্প্রতি সিলেটের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে হবিগঞ্জ-নবীগঞ্জ রোডস্থ মেসার্স এসএন অটো রাইছ মিলের স্বত্বাধিকারী শংকর পাল মিল মালিকদের কাছ থেকে চাল সরবরাহের ব্যাপারে অনিয়মের অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিলেটের আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করার জন্য জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে নির্দেশ দেন।
শংকর পাল তাঁর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন- প্রায় দেড় যুগের বেশি সময় ধরে সরকারি খাদ্য গুদামের চাল সরবরাহ কার্যক্রমের সাথে তাঁর প্রতিষ্ঠান সুনামের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে। চলতি মৌসুমে তার অনুকূলে বরাদ্দকৃত ৪৬৬ মেট্রিক টন চাল যথাসময়ে সরবরাহ করেন। তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ খাদ্য সংগ্রহ নীতিমালায় উল্লেখ রয়েছে, মিল মালিকদের স্থানীয় কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় করতে হবে। পরবর্তীতে সেই ধানগুলো থেকে নিজ মিলে চাল উৎপাদন করে সরকারি খাদ্য গুদামে সরবরাহ করতে হবে। কোন মিল চুক্তিকৃত চাল পরিশোধ করে আরো চাল সরবরাহ করতে আগ্রহী হলে একই চুক্তির আওতায় চাল সরবরাহ করতে পারবে। যা নীতিমালা ১৭ এর ছ ধারাতে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু তাঁর মিলের সক্ষমতা সম্পন্ন হবিগঞ্জের অপর একটি অটোমেটিক রাইছ মিলের অনুকুলে পাক্ষিক ক্ষমতার ৪৬৬ মেট্রিক টনের স্থলে ১ হাজার ৪২৯ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ করা হয়েছে। সেই স্থলে উক্ত মিলটির মালিক উক্ত নামে পূর্বে বরাদ্দকৃত চালই সরবরাহ করেননি। কিন্তু উক্ত নামে অতিরিক্ত চাল বরাদ্দ প্রদান করে নীতিমালা লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, তাঁর মিলটি চালু করতে ১৭০ কিলোওয়াট বিদ্যুত প্রয়োজন হয় এবং তাঁর মিলে ৪৬৬ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন করতে ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৭৬৭ টাকা বিদ্যুত বিল বাবদ ব্যয় হয়েছে। পক্ষান্তরে ওই ড্রাইয়ার অটোমেটিক রাইছ মিলে ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৯৮ টাকা বিলে কিভাবে ১ হাজার ৪২৯ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন সম্ভব এ বিষয় নিয়ে তিনি সন্দেহ পোষণ করেন। তিনি বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানান। এতে মিল মালিক ও কৃষকরা উপকৃত হবেন বলে মনে করেন শংকর পাল।