মঈন উদ্দিন আহমেদ ॥ ব্র্যাক ক্ষুদ্র-ঋণ কর্মসূচি প্রান্তিক কৃষকদের জন্য বিনামূল্যে আধুনিক কৃষি যন্ত্র, বীজ প্রদান ও ফসল সংরক্ষণাগার স্থাপনের কাজ শুরু করেছে। কৃষি যন্ত্রের মধ্যে রয়েছে কম্বাইন হারভেস্টার, পাওয়ার টিলার, থ্রেসার, পাওয়ার রিপার, সিডিং ও ইমপ্লান্টেশন মেশিন এবং সোলার পাম্প। দুর্যোগ মোকাবেলা, কৃষির আধুনিকায়ন, উৎপাদন বৃদ্ধি, প্রয়োজনীয় শ্রমের ঘাটতি মেটাতে সহায়তার উদ্দেশ্যে ডাচ-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের আর্থিক সহযোগিতায় ব্র্যাকের ক্ষুদ্র-ঋণ কর্মসূচি এই কার্যক্রম হাতে নিয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ১৪ ফেব্রুয়ারি মাধবপুরে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে আনুষ্ঠানিকভাবে কম্বাইন হারভেস্টার বিতরণ করা হয়। অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ক্ষুদ্র-ঋণ কর্মসূচির ঊর্ধ্বতন পরিচালক অরিঞ্জয় ধর, সহযোগী পরিচালক মোঃ রিয়াজ উদ্দিন, কর্মসূচি প্রধান মোঃ বেলায়েত হোসেন এবং ডাচ-বাংলা ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ পারভেজ মাহমুদ ও এভিপি মোঃ জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে নির্বাচিত অংশগ্রহণকারীদের মাঝে কম্বাইন হারভেস্টার হস্তান্তর করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তাগণ বলেন- আধুনিক যন্ত্রপাতি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রান্তিক কৃষকরা সহজে দ্রততম সময়ে ধান মাড়াই করতে পারবে। ফলে হাওড়ের আকস্মিক বন্যা বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে ধান রক্ষা পাবে। কম খরচে নিজের ধান মাড়াইয়ের পাশাপাশি এই যন্ত্রটি ভাড়া দিয়ে অর্থ উপার্যনের মাধ্যমে তাদের আর্থিক সমৃদ্ধিও আসবে।
উল্লেখ্য, বর্তমান বিশ্বে কৃষি উপকরণের ব্যাপক আধুনিকায়ন হলেও অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় এবং বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে আমাদের দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এগুলোর সহজলভ্যতা এখনো নিশ্চিত করা যায়নি। পাশাপাশি রয়েছে আবহাওয়া উপযোগী ও মানসম্মত বীজের ঘাটতি। গ্রাম পর্যায়ের অনেক কৃষকই সনাতন পদ্ধতিতে দেশীয় যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে কায়িক শ্রমের ওপর নির্ভর করে ফসল ফলিয়ে থাকেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে কৃষি শ্রমিকের অভাব ও আকস্মিক দুর্যোগের কারণে কাক্সিক্ষত উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। এছাড়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই কৃষকদের জন্য উপযুক্ত পরামর্শ ও যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যাপক ঘাটতি রয়েছে।
ব্র্যাক ও ডাচ-বাংলা ব্যাংকের উদ্যোগে ইতোমধ্যে ১৫০ জন অংশগ্রহণকারীকে ৩টি কম্বাইন হারভেস্টার, ১ হাজার ৬০০ জনকে ৮০টি পাওয়ার টিলার, ৬৭ জনকে ৬৭টি থ্রেসার, ১০৫ জনকে ১০৫টি পাওয়ার রিপার এবং ১১০ জনের মাঝে ২২টি সোলার পাম্প বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ৭০ হাজার ৮১৩ জনকে ১২০ মেট্রিক টন সরিষা বীজ, সাড়ে ৭ হাজার কৃষককে ১৪ মেট্রিক টন লবন সহিষ্ণু ধানের বীজ, সাড়ে ৪ হাজার জনকে ৮ মেট্রিক টন আগামজাতের ধান ফসলের বীজ এবং ৬ হাজার ৪০০ জন কৃষকের প্রত্যেককে এক কেজি করে সূর্যমুখীর বীজ বিতরণ করা হয়েছে। ১৪ টন লবন সহিষ্ণু ধানের বীজ পেয়েছেন সাড়ে ৭ হাজার জন। ২৫০ জন পেয়েছেন ৫টি ক্ষুদ্র ফসল সংরক্ষণাগারের সুবিধা এবং ১ হাজার অংশগ্রহণকারীর প্রত্যেকে পেয়েছেন মাছ চাষের উপকরণ।