স্টাফ রিপোর্টার ॥ চলতি বছরের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষা শুরু হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। দেশের সর্ববৃহৎ এই পাবলিক পরীক্ষায় সারা দেশের তিন হাজার ৭০০টি কেন্দ্রে অংশ নিচ্ছে ২৯ হাজার ৭৩৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ শিক্ষার্থী।
সূচি অনুযায়ী, প্রথম দিন বৃহস্পতিবার বাংলা প্রথমপত্র দিয়ে পরীক্ষা শুরু হবে। লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে আগামী ১২ মার্চ। ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ১৩ থেকে ২০ মার্চের মধ্যে।
আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটি সূত্র জানায়, ১১টি বোর্ডে মোট পরীক্ষার্থী ২০ লাখ ২৪ হাজার ১৯২ জন। তাদের মধ্যে ছাত্র ৯ লাখ ৯২ হাজার ৮৭৮ এবং ছাত্রী ১০ লাখ ৩১ হাজার ৩১৪ জন। মোট কেন্দ্র ৩ হাজার ৭০০টি। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২৯ হাজার ৭৩৫টি। গত বছরের তুলনায় এবার পরীক্ষা কেন্দ্র কমেছে ১৮০টি। আর পরীক্ষায় অংশ নেয়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা কমেছে ৬৩টি।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড সিলেট এর তথ্য মতে এ বছর সিলেট শিক্ষাবোর্ডের অধীনে হবিগঞ্জ জেলায় ১৬৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ৩২টি কেন্দ্রে মোট ২০ হাজার ৪৫৫ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করবে। এর মধ্যে ছাত্র ৮ হাজার ১৯৮ জন ও ছাত্রী ১২ হাজার ২৫৭ জন।
পরীক্ষা চলাকালে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ৬টি নির্দেশনা জারি করেছে শিক্ষা বোর্ড। একইসঙ্গে পরীক্ষার্থীদের প্রতি বিশেষ নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। উল্লেখযোগ্য বিশেষ নির্দেশনাগুলো হলো- প্রতি বিষয়ের পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে আসন গ্রহণ করতে হবে। প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত সময় অনুযায়ী পরীক্ষা নিতে হবে। প্রথমে বহুনির্বাচনী ও পরে সৃজনশীল বা রচনামূলক (তত্ত্বীয়) পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে এবং মাঝে কোনো বিরতি থাকবে না। শারীরিক শিক্ষা, স্বাস্থ্য বিজ্ঞান ও খেলাধুলা এবং ক্যারিয়ার শিক্ষা বিষয়গুলোতে এনসিটিবির নির্দেশনা অনুসারে ধারাবাহিক মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রাপ্ত নম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রকে সরবরাহ করবে। সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বরের সঙ্গে ধারাবাহিক মূল্যায়নে প্রাপ্ত নম্বর বোর্ডের ওয়েবসাইটে অনলাইনে পাঠাবে। পরীক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ উত্তরপত্রের ওএমআর ফরমে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, বিষয় কোড ইত্যাদি যথাযথভাবে লিখে বৃত্ত ভরাট করবে। কোনো অবস্থাতেই উত্তরপত্র ভাঁজ করা যাবে না। পরীক্ষার্থীদের সৃজনশীল বা রচনামূলক (তত্ত্বীয়), বহুনির্বাচনী ও ব্যবহারিক অংশে পৃথকভাবে পাস করতে হবে। প্রত্যেক পরীক্ষার্থী কেবল নিবন্ধনপত্রে বর্ণিত বিষয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে। কোনো অবস্থাতেই ভিন্ন বিষয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না। কোনো পরীক্ষার্থীর পরীক্ষা (সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়), বহুনির্বাচনী ও ব্যবহারিক) নিজ বিদ্যালয়ে বা প্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত হবে না। পরীক্ষার্থী স্থানান্তরের মাধ্যমে আসন বিন্যাস করতে হবে। পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষায় সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহার করতে পারবে। কেন্দ্র সচিব ছাড়া অন্য কোনো ব্যক্তি বা পরীক্ষার্থী পরীক্ষা কেন্দ্রে মোবাইল আনতে এবং ব্যবহার করতে পারবে না। সৃজনশীল/রচনামূলক (তত্ত্বীয়), বহুনির্বাচনি ও ব্যবহারিক পরীক্ষার পরীক্ষার্থীর উপস্থিতির জন্য একই উপস্থিতি ব্যবহার করতে হবে। ব্যবহারিক পরীক্ষা নিজ নিজ কেন্দ্র বা ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে। পরীক্ষার ফল প্রকাশের ৭ দিনের মধ্যে পুনঃনিরীক্ষার জন্য অনলাইনে এসএমএসের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে।
এদিকে পরীক্ষা চলাকালে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে আগেই ৬টি নির্দেশনা জারি করেছে শিক্ষা বোর্ড। প্রশ্নফাঁসের গুজব ও নকলমুক্ত পরিবেশে এ পরীক্ষা আয়োজনে মঙ্গলবার থেকে ১২ মার্চ পর্যন্ত দেশের সব কোচিং সেন্টার বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ ছাড়া এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন জেলা পর্যায়ের ট্রেজারি ও উপজেলা বা থানা পর্যায়ে থানা হেফাজতে সংরক্ষণ করা হবে। থানা বা ট্রেজারি থেকে পুলিশ পাহারায় প্রশ্ন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে।
এসএসসি ও সমমান পরীক্ষা কেন্দ্রে কোনো পরীক্ষার্থী বা কক্ষ পরিদর্শনে দায়িত্বে থাকা কোনো শিক্ষক মোবাইল ফোন বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করতে পারবেন না। শুধু কেন্দ্র সচিব ছবি তোলা যায় না ও ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায় না এমন ফিচার ফোন ব্যবহার করতে পারবেন। পরীক্ষা চলাকালীন কেন্দ্রের ২০০ গজের মধ্যে শিক্ষক, ছাত্র ও কর্মচারীদের মোবাইল, মোবাইল ফোনের সুবিধাসহ ঘড়ি, কলম এবং পরীক্ষা কেন্দ্রে ব্যবহারের অনুমতিবিহীন যেকোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকবে।